শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজ।
শেঠ আনন্দরাম জয়পুরিয়া কলেজকে ভাষাগত সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হোক— এমনই দাবি তুলেছে ওই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা জয়পুরিয়া ট্রাস্ট। এ বিষয়ে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদনও জানিয়েছে তারা। তবে এ নিয়ে আপত্তি রয়েছে কলেজের শিক্ষক সংসদের।
১৯৪৫ সালে জয়পুরিয়া কলেজ তৈরি করেছিল ওই ট্রাস্ট। কলেজের পরিচালন সমিতিতে এখন ট্রাস্টের প্রতিনিধিদেরই আধিক্য। কিন্তু সংশোধিত নতুন উচ্চশিক্ষা আইনে বলা হয়েছে, এখন থেকে কলেজ তৈরিতে যাঁদের অবদান রয়েছে, তাঁদের এক জন মাত্র প্রতিনিধি পরিচালন সমিতিতে থাকতে পারবেন।
অন্য প্রতিনিধিদের মধ্যে সভাপতি-সহ তিন জনকে সরাসরি সরকার মনোনীত করবে। পরিচালন সমিতিতে এক জন উচ্চশিক্ষা সংসদের প্রতিনিধিও থাকবেন, যার চেয়ারম্যান শিক্ষামন্ত্রী স্বয়ং। কলেজ সূত্রের খবর, গত বছরের গোড়ার দিকে উচ্চশিক্ষা আইন সংশোধনের পরেই জয়পুরিয়া ট্রাস্ট বিষয়টি নিয়ে নড়েচড়ে বসে। কারণ, দাতা অথবা ট্রাস্টের প্রতিনিধির সংখ্যা কমে গেলে কলেজের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণও স্বাভাবিক ভাবেই কমে যাবে। সংবিধানের ৩০ নম্বর অনুচ্ছেদে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও পরিচালনার অধিকার দেওয়া হয়েছে যে কোনও ধর্মীয় ও ভাষাগত সংখ্যালঘু প্রতিষ্ঠানকে৷ তা ছাড়া, সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালন সমিতি রাজ্য সরকার ভেঙে দিতে পারে না। কলেজ সূত্রের খবর, এ রকম ভাবনা থেকেই হিন্দি ভাষার প্রধান্যের প্রেক্ষিতে ওই কলেজকে ভাষাগত সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য করা হোক বলে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
কলেজের পরিচালন সমিতিতে ট্রাস্টি বোর্ডের প্রতিনিধি যুগলকিশোর ভগত শনিবার বলেন, ‘‘কলেজকে ভাষাগত সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গণ্য করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আমরা আবেদন করেছি। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের এখনও কিছু জানানো হয়নি।’’ কলেজের শিক্ষক সংসদের বক্তব্য, সাধারণ একটি কলেজ থেকে হঠাৎ সংখ্যালঘু কলেজে পরিণত হলে পরিচালন সমিতি অনেক বেশি নিজেদের ইচ্ছেমতো কাজ করবে। শহরেরই একটি সংখ্যালঘু কলেজের উদাহরণ দিয়ে শিক্ষক সংসদের এক সদস্য এ দিন বলেন, ‘‘দেখা যায়, শিক্ষকেরা অবসর নিয়ে নিলে পূর্ণ সময়ের শিক্ষক আর না নিয়ে চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক নিয়ে নেওয়া হয়। সেই সব শিক্ষকদের চাকরিরও কোনও নিরাপত্তা থাকে না।’’
জয়পুরিয়ার পরিচালন সমিতিতে সরকার পক্ষের প্রতিনিধি, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন বলেন, ‘‘সংখ্যালঘু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হওয়ার বিষয়ে শিক্ষক সংসদের আপত্তি রয়েছে। তারা এ বিষয়ে আমাকে লিখিত ভাবে জানিয়েছে। আবেদনকারীরাও এসেছিলেন।’’