Jadavpur University

দাগ কেটেছি, দাবি এবিভিপি ও টিএমসিপির

পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, এ বার শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের ভিত্তিতে ভোট হয়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:২৪
Share:

গণনা চলছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। নিজস্ব চিত্র

স্থিতাবস্থার হেরফের হয়নি। জিতেছে ডিএসএফ, উই দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট এবং এসএফআই। তবে যুযুধান অন্য দুই পক্ষ অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ বা এবিভিপি এবং রাজ্যের শাসক দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ বা টিএমসিপি-র দাবি, এ বার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের নির্বাচনে তারা যথেষ্টই ছাপ ফেলতে পেরেছে। যদিও ভোটের ফলে তার প্রমাণ মোটেই উজ্জ্বল নয়।

Advertisement

পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, এ বার শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ের ভিত্তিতে ভোট হয়নি। সিএএ বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, কেন্দ্রীয় শিক্ষানীতি, দেশের আর্থিক দুরবস্থার মতো বিভিন্ন বিষয়ও ছিল।

এই প্রেক্ষিতে এবিভিপি-র রাজ্য সম্পাদক (দক্ষিণবঙ্গ) সুরঞ্জন সরকার বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘বাম দুর্গ যাদবপুরে আমরা হুল ফোটাতে পেরেছি। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে এখন দ্বিতীয় শক্তি আমরাই। সব থেকে লজ্জার রাজ্যের শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের এ ভাবে হেরে যাওয়া।’’ সুরঞ্জন হুল ফোটানোর দাবি করলেও কলা বিভাগে এবিভিপি বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি। কলা বিভাগে একটি পদে ‘নোটা’র থেকেও কম ভোট পেয়েছে তারা। তিনটিতে দ্বিতীয় স্থানে ডিএসএ। একটিতে এসএফআইয়ের পরেই এবিভিপি। যদিও সেখানে এসএফআই পেয়েছে ২৬৪টি ভোট, এবিভিপি-র ঝুলিতে মাত্র ২০টি!

Advertisement

ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে এবিভিপি-র পাঁচশোরও বেশি ভোটপ্রাপ্তি নিয়ে সদ্য চেয়ারপার্সন (ডিএসএফ) হওয়া অরিত্র মজুমদারের বক্তব্য, গত বার এবিভিপি-র নাম না-নিয়ে লড়েছিলেন জাতীয়তাবাদী পড়ুয়ারা। সেই জাতীয়তাবাদী জোট যত ভোট পেয়েছিল, এ বার এবিভিপি নিজের নামে লড়ে সেই সংখ্যক ভোট পায়নি। ‘‘যাদবপুরে ভোট হয় মতাদর্শের ভিত্তিতে। এবিভিপি ভাষা, ধর্মীয় বিভাজনের ভিত্তিতে ভোট চেয়ে এই ক’টা ভোট পেয়েছে,’’ বলেন অরিত্র।

টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যের দাবি, তিন ছাত্র সংসদের কার্যনির্বাহী পদে দাঁত ফোটাতে না-পারলেও শ্রেণি-প্রতিনিধির ৩০ পদে তাঁরা জিতেছেন। গত বারের থেকে এ ক্ষেত্রে তাঁদের ফল অনেক ভাল। তৃণাঙ্কুর যা-ই বলুন, টিএমসিপি-র ফল আশাপ্রদ নয়। ইঞ্জিনিয়ারিং ও বিজ্ঞান বিভাগে ‘নোটা’র সঙ্গে তাদের লড়াই হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে সহকারী সাধারণ সম্পাদক (দিবা) পদে নোটার থেকেও কম ভোট পেয়েছে টিএমসিপি। নোটা পেয়েছে ৭৭টি ভোট। টিএমসিপি ৫৮টি। এ বার তিন বিভাগেই শ্রেণি-প্রতিনিধির বহু পদে লড়াই হয়নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন অনেক প্রার্থী। কলা বিভাগে টিএমসিপি তিনটি পদে তৃতীয় স্থানে। একটিতে পঞ্চম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির (জুটা) সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘ছাত্রভোটের এই রায় কেন্দ্র ও রাজ্যের ফাসিস্ত, গণতন্ত্র-বিরোধী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকার হরণকারী দুই সরকারের বিরুদ্ধে।’’

উপাচার্য সুরঞ্জন দাস ভোটগণনা পরিদর্শন করেন। শান্তিতে ভোট সাঙ্গ হওয়ায় তিনি সব পক্ষকেই ধন্যবাদ জানান। তাঁর বক্তব্য, বিশ্ববিদ্যালয় গণতান্ত্রিক মুক্ত চিন্তার জায়গা। এই সব বিষয়ের পক্ষে আলোচনা হয়েছে। বিপক্ষেও হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্ত পরিবেশে এটাই কাম্য।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন