Dengue

ডেঙ্গিতে কাবু হবু ডাক্তারেরা

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে খবর, হস্টেলে গত তিন মাসে প্রায় ৬০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:১৯
Share:

ফাইল চিত্র।

শহর জুড়ে বাড়ছে ডেঙ্গির প্রকোপ। বাদ যাচ্ছে না মেডিক্যাল কলেজগুলির হস্টেলও। কোথাও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত একাধিক প়়ড়ুয়ারা, কোথাও ম্যালেরিয়ায় কাবু নার্সদের একাংশ। অভিযোগ, অধিকাংশ মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলেই ডেঙ্গি আক্রান্ত পড়ুয়াকে আলাদা রাখার ব্যবস্থা নেই।

Advertisement

আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে খবর, হস্টেলে গত তিন মাসে প্রায় ৬০ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। অভিযোগ, অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁদের আলাদা রাখার ব্যবস্থা নেই। অনুমান, তার জেরেই আরও সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। একই অবস্থা নার্সিং হস্টেলেও।
এক জুনিয়র চিকিৎসক জানাচ্ছেন, দমদম এলাকা থেকে রোজ প্রায় ৩০ জন করে ডেঙ্গি আক্রান্ত হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। আক্রান্তদের দেখভালের জন্য তাঁদের ওয়ার্ডে যেতে হচ্ছে। সেখান থেকে অনেকের মধ্যে ডেঙ্গি ছড়াচ্ছে। যদিও হাসপাতালের অধ্যক্ষ শুদ্ধোদন বটব্যালের বক্তব্য, ‘‘হস্টেলের ডেঙ্গি আক্রান্ত ছাত্রদের জন্য ২০টি ও ছাত্রীদের জন্য ১২টি শয্যার আলাদা ঘরের ব্যবস্থা হয়েছে। পাশাপাশি, তাঁদের দেখভালের জন্য কর্মীও নিয়োগ করা হয়েছে। সংক্রমণ রুখতে হাসপাতাল চত্বর পরিষ্কার রাখার দিকেও বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে।’’

একই ছবি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে অবশ্য ডেঙ্গির পাশাপাশি থাবা বসিয়েছে ম্যালেরিয়া। হাসপাতাল সূত্রে খবর, চলতি সপ্তাহে নার্স ও পড়ুয়া মিলিয়ে প্রায় দশ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। এক চিকিৎসক জানান, হস্টেলের বহু পড়ুয়া ডেঙ্গিতেও আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক না হওয়ায় তাঁদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না। অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাঁদের আলাদা করে রাখার ব্যবস্থাও থাকছে না। যার জেরে প্রকোপ বা়ড়ছে বলে আশঙ্কা ওই চিকিৎসকের। জায়গার সঙ্কটের কথা মেনে নিয়েছেন মেডিক্যালের অধ্যক্ষ তপন লাহিড়ীও। তিনি বলেন, ‘‘হস্টেলে জায়গার সঙ্কটের জেরে আক্রান্তদের আলাদা জায়গা দেওয়া যাচ্ছে না। তবে, ওঁদের মশারি টাঙানো নিয়ে সচেতন করা হচ্ছে।’’

Advertisement

এসএসকেএমের হস্টেলে প্রায় ৮০০ ছাত্রছাত্রী থাকেন। কিন্তু স্টু়ডেন্ট কেবিন মাত্র একটি। জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশ জানাচ্ছেন, সম্প্রতি চার পড়ুয়া ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন। তিন জন বাড়ি চলে গিয়েছেন। স্টুডেন্ট কেবিনে রয়েছেন এক জন। ওই চিকিৎসকদের প্রশ্ন, একসঙ্গে হস্টেলে থাকা একাধিক পড়ুয়া আক্রান্ত হলে তাঁদের কী ভাবে রাখা হবে? তাঁদের অভিযোগ, কেউ অসুস্থ হলে তাঁকে আলাদা রাখার
জন্য স্টুডেন্ট কেবিন বাড়ানোর দাবি জানানো হলেও কর্তৃপক্ষ সাড়া দেননি। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, কোনও পড়ুয়া ডেঙ্গিতে আক্রান্ত
হলে তাঁকে আলাদা রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, জল জমতে না দেওয়া ও পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি আক্রান্তকে আলাদা ভাবে রাখা খুব জরুরি। কারণ, ডেঙ্গি আক্রান্তকে কামড়ানো মশা অন্যদের কামড়ালে জীবাণু ছ়ড়াতে পারে।

বছরভর শহরের কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতাল পরিদর্শন করছেন পুরকর্তারা। তা সত্ত্বেও ডেঙ্গির মরসুমে জীবাণুর দাপট দেখা দিয়েছে মেডিক্যাল কলেজের হস্টেলে। এ প্রসঙ্গে মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘জ্বর হলেই ডেঙ্গি ভেবে অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। কিন্তু বিধিসম্মত নমুনা পরীক্ষা করে কত জনের ডেঙ্গি ধরা পড়েছে, সেটা বিচার করা জরুরি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন