Kali Puja 2021

Kali Puja 2021: পুলিশি পাহারাতেও বিসর্জনে বিধি-ভঙ্গের সেই ছবি

কালীপুজো এবং তার পরের দিনের মতো শনিবারের বিসর্জনেও এমনই উচ্ছৃঙ্খল জনতার ভিড় দেখা গেল রাস্তায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৪৮
Share:

বেপরোয়া: প্রতিমা বিসর্জন দিতে এসে কোভিড-বিধির তোয়াক্কা না করে চলছে নাচ। শনিবার, বাবুঘাটে। নিজস্ব চিত্র।

গাড়ির লম্বা লাইন চলে গিয়েছে অরবিন্দ সরণি হয়ে খন্না। সামনে শ’দুয়েক লোকের ভিড়। রাস্তা আটকে তাঁদের কেউ বাজি ফাটাচ্ছেন, কেউ আবার নাচতে নাচতে শুয়ে পড়ছেন। প্রতিমা বহনকারী ট্রেলারের আগে আগে চলা গাড়ির গায়ে লাগানো বক্সে তারস্বরে বাজছে চটুল গান। বিসর্জনমুখী জনতাকে উৎসাহ দিতে কালী প্রতিমার নামে জয়ধ্বনি দিয়ে ডিজে-র সদর্প ঘোষণা, ‘‘সামনেই গঙ্গা। যা কিছু করার এখনই করতে হবে।’’

Advertisement

কালীপুজো এবং তার পরের দিনের মতো শনিবারের বিসর্জনেও এমনই উচ্ছৃঙ্খল জনতার ভিড় দেখা গেল রাস্তায়। দূরত্ব-বিধি তো দূর, অধিকাংশই ভুলে গিয়েছিলেন মাস্ক পরে থাকার কথাও। বাড়তি পুলিশকর্মী মোতায়েন রেখে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার লালবাজারের যে বন্দোবস্ত ছিল, তা-ও কাজে লাগল না। শুক্রবার বাজির বিধি-ভঙ্গের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ২১০ জনকে। উদ্ধার
হয়েছে ২০৮ কিলোগ্রাম নিষিদ্ধ বাজি এবং ৫৬ লিটার মদ। তার পরেই এ দিনের চিত্র প্রশ্ন তুলে দিল, আজ, রবিবার ভাসানের শেষ দিনেও কি অব্যাহত থাকবে এই বিধি-ভঙ্গের ধারা?

চলতি মাসের ৫, ৬ এবং ৭ তারিখ কালী প্রতিমা নিরঞ্জনের নির্দেশ দিয়েছিল সরকার। কালীপুজোর পরদিন, অর্থাৎ, শুক্রবার শহরের ঘাটগুলিতে প্রায় ৬০০ প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে বলে পুলিশ জানাচ্ছে। সব থেকে বেশি প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছে জাজেস ঘাটে। এর পরেই ছিল বাজেকদমতলা ঘাট ও নিমতলা ঘাট। এই তিনটি ঘাটে মোট চারটি ক্রেন রাখা ছিল। বাজেকদমতলা ঘাটে পাড়ের পাশাপাশি গঙ্গার জলেও ভাসমান বার্জে একটি ক্রেন রাখা হয়েছে। পাড়ে একটি করে ক্রেন আছে নিমতলা এবং জাজেস ঘাটে। জলে প্রতিমা পড়লেই ক্রেন দিয়ে তা তুলে নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশিকা মেনে ফুল, মালা ও পুজোর অন্যান্য সামগ্রী গঙ্গাতীরের নির্দিষ্ট জায়গায় ফেলার ব্যবস্থা হয়েছে। এ জন্য পুলিশ এবং কলকাতা পুরসভার পর্যাপ্ত কর্মী ঘাটগুলিতে থাকছেন বলে প্রশাসনের দাবি।

Advertisement

বিসর্জন ঘিরে পরিকল্পনা করেছিল কলকাতা পুলিশও। ঠিক হয়েছিল, বাছাই করা বড় কয়েকটি
পুজোর বিসর্জনের শোভাযাত্রা পাহারা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। নেতৃত্বে থাকবেন এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার বা এসি পদমর্যাদার অফিসার। তাঁর অধীনে থাকবেন এক জন ইনস্পেক্টর-সহ অন্তত ১৫ জন পুলিশকর্মীর দল। বাস্তবে দেখা গেল, শোভাযাত্রার দীর্ঘ লাইন চলে গিয়েছে বিডন স্ট্রিট পেরিয়ে হেদুয়ায়। একই চেহারা জাজেস ঘাট বা বাবুঘাটের কাছেও।

স্থানীয় ছোট জলাশয়গুলির ক্ষেত্রে আরও বেশি নিয়মভঙ্গের ছবি দেখা গিয়েছে বলে
অভিযোগ। এ দিন বিসর্জন দিতে যাওয়া দক্ষিণ কলকাতার এক পুজোর কর্মকতা বললেন, ‘‘দুর্গাপুজোর বাজার থেকেই নিয়মভঙ্গ চলছে দেখে এ দিন আর ক্লাবের ছেলেদের বারণ
করিনি।’’ বিসর্জনে বেরোনো বেলেঘাটার এক পুজোকর্তার আবার দাবি, ‘‘প্রতি বার বিসর্জনে এলাকার দুই পাড়ার মধ্যে বাজি ফাটানোর প্রতিযোগিতা চলে। এ বার তা বন্ধ। একেবারে নিরামিষ পুজো। কী করা যায়?’’

শহরের প্রতিমা নিরঞ্জন দেখাশোনার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস কুমার বলছেন, ‘‘রবিবার সব থেকে বেশি নিরঞ্জন হবে শহরে। মানুষ সচেতন না হলে পুলিশ কেন, কারও কিছু করার নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন