প্রতীকী ছবি।
কালীঘাট-হামলা কাণ্ডে নয়া মোড়। শনিবার রাতে কালীঘাটে হামলা চলে এক দম্পতির ওপর। যাঁর বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ, রবিবার সকালে হাওড়ার গেস্ট হাউস থেকে উদ্ধার করা হল সেই অভিযুক্তেরই দেহ। ময়নাতদন্তের পর পুলিশ প্রাথমিক ভাবে মনে করছে, হামলাকারী রোশনলাল আত্মঘাতী হয়েছেন।
শনিবার সন্ধ্যায় কালীঘাট মন্দিরের অদূরে একটি বহুতল আবাসনে নরেন্দ্র জৈন ও সরলা জৈন নামে এক দম্পতিকে মাংস কাঁটার চপার দিয়ে কোপানোর অভিযোগ ওঠে রোশনলালের বিরুদ্ধে। পুলিশ বলছে, কালীঘাটের ফ্ল্যাটে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ছিলেন ৫২ বছরের নরেন্দ্র জৈন। ওই দিন নরেন্দ্রর ফ্ল্যাটে আসে তাঁরই দূর সম্পর্কের আত্মীয় রোশনলাল বরদাই। রোশনলালের সঙ্গে দীপক সিংহ নামে আরও এক ব্যক্তি ছিলেন বলে জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: ভরসন্ধ্যায় কালীঘাটে কোপ দম্পতিকে
নরেন্দ্র জৈনদের দাবি, কথাবার্তার মধ্যে হঠাৎই ছাদে যাওয়ার জন্য বার বার বলতে থাকেন রোশনলাল। তার পর রোশনলাল ও তাঁর সঙ্গী দীপককে নিয়ে ছাদে যান নরেন্দ্র। অভিযোগ, ছাদে উঠেই ব্যাগ থেকে চপার বের করে নরেন্দ্রকে এলোপাথাড়ি কোপাতে শুরু করেন রোশনলাল ও দীপক। চিৎকার শুনে ছাদে গেলে নরেন্দ্রর স্ত্রী সরলা জৈনকেও কোপানো হয়। কোনও মতে পালিয়ে কালীঘাট থানায় খবর দেন আক্রান্ত দম্পতির মেয়ে।
পুলিশ বলছে, অভিযুক্তদের মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন খতিয়ে দেখে জানা যায়, গোলাবাড়ি এলাকায় রয়েছে অভিযুক্তরা। শুরু হয় তল্লাশি। সকালে গোলাবাড়ির একটি লজে মেলে রোশনলালের দেহ! প্রথমে পুলিশ বুঝতে পারেনি যে এই রোশনলালই কালীঘাটের ঘটনায় অভিযুক্ত। হাতে ক্ষতচিহ্ন দেখে রাজ্যের সব থানাকে জানানো হয়। সেখান থেকেই গোটা ছবিটা বেরিয়ে আসে। কালীঘাটে ওই কাণ্ড ঘটিয়ে সোজা হাওড়ার গোলাবাড়ির একটি লজে গিয়ে উঠেছিল রোশনলাল এবং দীপক। কিন্তু সকালে ঘরের দরজা অনেক ক্ষণ বন্ধ থাকায় ওই লজের কর্মীদের সন্দেহ হয়। তার পরেই ঘর থেকে রোশনলালের দেহ উদ্ধার হয়।
আরও পড়ুন: দেড়শো টাকার জন্য নাইনের ছাত্রকে মেরে পুঁতে দিল সহপাঠী
পুলিশ সূত্রে খবর, ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট বলছে, রোশনলালের পাকস্থলীতে মিলেছে বিষ। এবং বিষক্রিয়াতেই মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে রিপোর্টে। লজ থেকে একটি বিষের শিশি মিলেছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। যা দেখে তদন্তকারীদের অনুমান, কালীঘাটে আত্মীয় দম্পতির ওপর হামলার পর গোলাবাড়ির লজে বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন রোশনলাল। কিন্তু রোশনলাল নিজেই বিষ খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন, নাকি তাঁকে বিষ খাইয়ে খুন করা হয়েছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে। ঘটনার পর থেকেই দীপক উধাও। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।