জনবহুল এলাকার কম্পিউটার সেন্টার থেকে অস্ত্র দেখিয়ে টাকা ও ল্যাপটপ লুঠ করে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। শনিবার বিকেলে কড়েয়া থানা এলাকার রাইফেল রেঞ্জ রো়ডের ঘটনা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দু’টি মোটরবাইকে চেপে চার জন দুষ্কৃতীর একটি দল এসেছিল। লুঠপাট চালানোর পরে মোটরবাইকে চেপেই চম্পট দেয় তারা। ঘটনার পরে তদন্তে নামলেও রাত পর্যন্ত কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এই লুঠের ঘটনার সঙ্গে কারা জড়িত, সে ব্যাপারেও তেমন কোনও সূত্র পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ সূত্রের দাবি।
কিছু দিন আগেই সিঁথি থানা এলাকায় এটিএমের ভল্ট ভেঙে কয়েক লক্ষ টাকা ডাকাতি হয়েছিল। সেই ঘটনার তদন্ত চললেও এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেননি লালবাজারের তদন্তকারীরা। এই পরিস্থিতিতে এ দিন কড়েয়ার মতো জনবহুল এলাকায় লুঠপাট চালিয়ে দুষ্কৃতীদের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা শহরের নিরাপত্তার হাল নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলেছে।
ঠিক কী ঘটেছিল এ দিন?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কম্পিউটার সেন্টারটির মালিকের নাম মহম্মদ তনবীর আলম। তিনি তদন্তকারী অফিসারদের জানিয়েছেন, বিকেল চারটে নাগাদ মোটরবাইকে চেপে চার জন দুষ্কৃতীর একটি দল রাইফেল রেঞ্জ রোডের ওই কম্পিউটার সেন্টারের সামনে আসে। ভিতরে ঢুকে তারা ওই কম্পিউটার সেন্টারের কর্মীদের আগ্নেয়াস্ত্র ও ছুরি দেখিয়ে একটি ল্যাপটপ ও নগদ ৪৫ হাজার ফোন লুঠ করে। সে সময়ে তনবীরের এক বন্ধু এবং এক জন নাবালক শিক্ষার্থীও সেখানে উপস্থিত ছিল। ওই নাবালকের ফোন-সহ মোট চারটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পালায় দুষ্কৃতীরা। ওই সেন্টারের কর্মীদের এবং তনবীরের বন্ধুকে মারধর করা হয় বলেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, একটি বাড়ির মধ্যে ওই কম্পিউটার সেন্টারটি অবস্থিত। ঘটনার পর থেকে গোটা বাড়ির বাসিন্দাদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ওই বাড়ির বাসিন্দা আমরিন সাবা নামে এক নাবালিকা বলে, ‘‘দু’জনকে দেখেছি। তাদের মুখে কালো রুমালে বাঁধা ছিল। এক জনের হাতে পিস্তলও ছিল।’’
পুলিশ সূত্রের জানা গিয়েছে, ঘটনার খবর পেয়ে কড়েয়া থানার পুলিশ অফিসারেরা ওই কম্পিউটার সেন্টারে যান। অভিযোগ নথিভুক্ত করার পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদও করেন তাঁরা। পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, ওই চার যুবকের কাউকেই চিনতে পারেননি প্রত্যক্ষদর্শীরা। তবে তাঁদের বয়ান শুনে অভিযুক্তদের স্কেচ আঁকানো হবে। এই লুঠের ঘটনার তদন্তে নেমেছে লালবাজারের ডাকাতি দমন শাখাও।
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের একাংশের অনুমান, ওই সেন্টার সম্পর্কে রীতিমতো খোঁজখবর নিয়েই হানা দিয়েছিল দুষ্কৃতীদের দলটি। কোন সময়ে সেখানে লোকজন কম থাকে, সে খবরও আগে থেকেই নিয়ে রেখেছিল দুষ্কৃতীরা। এই ঘটনার পিছনে কম্পিউটার সেন্টারটির মালিকের পরিচিত কারও হাত রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।