বেশ কিছু দিন ধরেই কলকাতার ভারতীয় জাদুঘরে প্রত্নবস্তু সংরক্ষণ নিয়ে একের পর এক অভিযোগ উঠছিল। জাদুঘরের সংরক্ষণ আধিকারিক সুনীল উপাধ্যায় প্রায় বছর খানেক ধরে নিখোঁজ। গত বছর জাদুঘরের একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ রামপূর্বার সিংহ মূর্তি সংরক্ষণের সময়ে ভেঙে যায়। খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকের একটি যক্ষ মূর্তিও সম্প্রতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ১০ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া একটি বুদ্ধ মূর্তিরও হদিস মেলেনি আজও। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের নির্দেশে এই প্রথম ভারতীয় জাদুঘরের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হল কলকাতা পুলিশের এক ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার এক অফিসারকে। অস্থায়ী ভাবে তিনি সেই দায়িত্ব নেবেন। মঙ্গলবার লালবাজার সূত্রে এমনটাই জানানো হয়েছে।
ভারতীয় জাদুঘর সূত্রের খবর, এ দিনই জাদুঘরের নিরাপত্তা আধিকারিকের পদ থেকে অবসর নিয়েছেন সুমন্ত রায়। তাঁর অবসরের মুখে গত ৩০ মার্চ জাদুঘরের অধিকর্তা বি বেণুগোপাল একটি নির্দেশিকা জারি করেন যে, জাদুঘরের শিল্পকলা বিভাগের প্রধান নীতা সেনগুপ্তকেই এ বার নিরাপত্তা আধিকারিকের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হল। জাদুঘরের অছি পরিষদের চেয়ারম্যান রাজ্যপালের কাছেও এই নির্দেশিকার একটি প্রতিলিপি পাঠান তিনি। কিন্তু রাজ্যপাল তা খারিজ করে লালবাজারে একটি নির্দেশিকা পাঠিয়ে জানিয়ে দেন, কলকাতা পুলিশের এক জন ইন্সপেক্টার পদমর্যাদার অফিসারকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হোক। জাদুঘরের মুখপাত্র অশোক ত্রিপাঠী অবশ্য বলেন, ‘‘এই ব্যাপারে আমরা এখনও কিছুই জানি না।’’
প্রথা অনুযায়ী, জাদুঘরের কোনও কর্মীকেই নিরাপত্তা আধিকারিকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে রাজ্যপাল প্রথা ভেঙে ঠিক কাজই করেছেন বলে অছি পরিষদের একাধিক সদস্য মনে করছেন। তাঁদের কথায়, যে আধিকারিককে জাদুঘরের অধিকর্তা নিরাপত্তার দায়িত্ব দিয়েছিলেন, তাঁর এই সম্পর্কে কোনও অভিজ্ঞতা নেই। সাধারণত, ভারতীয় সেনাবাহিনীর কোনও অবসরপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ অফিসারকেই এই দায়িত্ব দেওয়া হয়। সুমন্তবাবুও ছিলেন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন। অছি পরিষদের সদস্য শচীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘জাদুঘরে যে সব কাণ্ড ঘটেছে, তাতে সরাসরি পুলিশের হাতে নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে দিয়ে চেয়ারম্যান যথাযথ কাজই করেছেন।’’