স্থায়ী অধিকর্তা ছাড়াই প্রকল্প, ‘অখুশি’ এডিবি

যদিও পুরবোর্ডের এক কর্তা জানান, এডিবি-র চিঠি পাওয়ার পরেই সক্রিয় হয়েছে প্রশাসন। আগামী দু’একদিনের মধ্যেই ওই পদে স্থায়ী কাউকে বসানোর সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:০১
Share:

শোভন চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।

কলকাতা এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্রুভমেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামে (কেইআইআইপি) দু’মাস ধরে কোনও প্রকল্প অধিকর্তা না থাকায় ‘অখুশি’ এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক (এডিবি)। এডিবি কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, এর ফলে এডিবির ঋণের টাকায় প্রকল্পের কাজে ব্যাঘাত ঘটছে। সম্প্রতি এডিবি-র ‘কান্ট্রি ডিরেক্টর’ কেনিসি ইয়োকোহামা কলকাতা পুর প্রশাসনকে পাঠানো একটি চিঠিতে জানিয়েছেন, কলকাতার পরিবেশের উন্নয়নে— নিকাশি এবং অন্য খাতে দু’টি পর্যায়ে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ১৯৫০ কোটি টাকা) ঋণ দেওয়া হয়েছে। সেই কাজ যখন গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে, তখন প্রকল্পের স্থায়ী প্রকল্প অধিকর্তা পদে কেউ নেই। এতে প্রকল্প রূপায়ণে যে অসুবিধা হচ্ছে তা-ও জানানো হয়।

Advertisement

এডিবি তাদের চিঠিতে আরও জানিয়েছে, গত নভেম্বরে পুর প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে এক বৈঠকের সময়েও জানানো হয়েছিল বিষয়টি। কিন্তু তার পরেও কেন ওই পদে স্থায়ী কাউকে বসানো হলো না তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে পুর মহলেও। বুধবার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মঙ্গলবার এডিবি-র প্রতিনিধিরা এসেছিলেন। স্থায়ী প্রকল্প অধিকর্তা নিয়োগ নিয়ে কথা বলেছেন। খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা গৃহীত হবে।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, দীর্ঘ দিন কেইআইআইপি-র প্রকল্প অধিকর্তা পদে ছিলেন আইএএস গুলাম আনসারি। মাস কয়েক আগে তাঁকে বদলি করা হয় স্বাস্থ্য দফতরে। তার পর থেকেই তাঁর জায়গায় কোনও স্থায়ী প্রকল্প অধিকর্তা নেই। তৎকালীন কেএমডিএ-র চিফ এগজিকিউটিভ অফিসার সৌমিত্র মোহন ওই পদের অতিরিক্ত দায়িত্বে ছিলেন। তিনি কেএমডিএ থেকে চলে যাওয়ার পরে নতুন চিফ এগজিকিউটিভ পদে আসা অবনীন্দ্র সিংহকেও একই ভাবে এডিবি-র প্রকল্প অধিকর্তার পদ সামলাতে হয়। এডিবি-র ‘আপত্তি’ তা নিয়েই। তাঁরা চান, কয়েক হাজার কোটি টাকার প্রকল্প যেখানে চলছে, সেখানে স্থায়ী প্রকল্প অধিকর্তা অবশ্যই থাকা দরকার। কলকাতা পুরসভার অধীনে ওই প্রকল্প বলে বারবার
পুর প্রশাসনের কাছে তা জানিয়েছেন তাঁরা। চিঠিতে আরও লিখেছেন, নতুন একটি পর্যায়ে (ট্রেঞ্চ থ্রি) আরও ১০০ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৬৫০ কোটি) ঋণ দেওয়ার প্রক্রিয়া প্রায় শেষ। এই অবস্থায় স্থায়ী প্রকল্প অধিকর্তা থাকাটা খুব জরুরি। কলকাতাকে পরিবেশবান্ধব করে তুলতে এডিবি-র দেওয়া টাকায় প্রকল্প গড়ে আখেরে যে শহরেরই লাভ তা-ও জানানো হয়েছে। এই কাজের সময় এবং গুরুত্ব বুঝে কলকাতা পুরসভার ‘তৎপর’ হওয়া উচিৎ বলে মনে করে এডিবি।

Advertisement

কিন্তু এই পদে স্থায়ী প্রকল্প অধিকর্তা নিয়োগে বিলম্ব কেন? পুরসভার একাংশের বক্তব্য, কোটি কোটি টাকার প্রকল্প, তাই ‘দেখে শুনে’ নিয়োগ করতে চান পুর কর্তৃপক্ষ। হয়তো যোগ্য লোক পাওয়া যাচ্ছে না, তাই বিলম্ব হচ্ছে বলেই ধারণা একাধিক পুরকর্তার।

যদিও পুরবোর্ডের এক কর্তা জানান, এডিবি-র চিঠি পাওয়ার পরেই সক্রিয় হয়েছে প্রশাসন। আগামী দু’একদিনের মধ্যেই ওই
পদে স্থায়ী কাউকে বসানোর সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন