সেতুর দায় নিয়ে তরজায় পুরসভা ও কেএমডিএ

বিভিন্ন খালের উপরে থাকা শহরের বেশ কয়েকটি সেতুর দায় নিয়ে এমনই তরজা শুরু হয়েছে কলকাতা পুর প্রশাসন এবং কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি-র মধ্যে।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:৪৯
Share:

সেতু তুমি কার? কেএমডিএ, না কলকাতা পুরসভা, কে তোমার দেখভাল করে?

Advertisement

বিভিন্ন খালের উপরে থাকা শহরের বেশ কয়েকটি সেতুর দায় নিয়ে এমনই তরজা শুরু হয়েছে কলকাতা পুর প্রশাসন এবং কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি-র মধ্যে। মাঝেরহাট-কাণ্ডের পরে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিভিন্ন সেতুর হাল নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। শহরের ২০টি সেতুর অবস্থা যে বেশ বিপজ্জনক, তা জানাতেও দ্বিধা করেননি তিনি। আর তাতেই অস্বস্তিতে সেতু দেখভালে নিযুক্ত সরকারি দফতরের কর্তারা। এর মধ্যেই কেএমডিএ পুরসভাকে জানিয়ে দিয়েছে, খালপাড়-সহ কয়েকটি সেতু দেখভাল করে কলকাতা পুরসভা। ওই সব সেতুর রাস্তা, আলো এবং সৌন্দর্যায়নের কাজও করে পুর প্রশাসন। তাই দায় পুরসভারই।

কেএমডিএ-র এই বক্তব্য মানতে নারাজ পুর কর্তৃপক্ষ। পুর কমিশনার খলিল আহমেদ জানিয়েছেন, শহরের কোনও সেতুর দায়িত্বই পুরসভার হাতে নেই। এক পুরকর্তার দাবি, সেতু রক্ষণাবেক্ষণের পরিকাঠামোও পুরসভার নেই। তাই পুরসভা সেতু তৈরি বা দেখভাল করে না।

Advertisement

তবে বিতর্ক কেন? পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, ১৯২৮ থেকে ১৯৩২ সালের মধ্যে খালপাড়ের অধিকাংশ সেতুই তৈরি করেছে ‘কলকাতা ইমপ্রুভমেন্ট ট্রাস্ট’ (কেআইটি)। ১৯৬০ সালের পরে কেআইটি-র আইনের ৬৫ (১) ধারার মাধ্যমে তা পুরসভাকে হস্তান্তরিত করা হয়। পুরসভাই ওই সব সেতুর রাস্তা তৈরি করে, আলো লাগায়, রং করে। তাই সেতুর দায়ও পুরসভার।

এ নিয়ে পুরসভা একটি চিঠি পাঠিয়েছে কেএমডিএ-র চিফ এগজিকিউটিভ অফিসারের কাছে। পুর কমিশনার খলিল আহমেদের পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, মুখে বললে হবে না। কবে, কখন ওই সব সেতু পুরসভাকে হস্তান্তরিত করা হয়েছে, তার প্রমাণে কাগজপত্র দাখিল করতে হবে। নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, আগে এই বিষয়টি দেখত কেআইটি। বর্তমানে কেআইটি কেএমডিএ-র সঙ্গে মিশে গিয়েছে। তাই কেআইটি-র পুরনো কাগজপত্র এখনও পুরো গোছানো হয়নি। তবে খোঁজার কাজ চলছে। হাতে এলেই তা পাঠিয়ে দেওয়া হবে।

সম্প্রতি এ শহরে খালের উপরে থাকা সেতুগুলি ঘুরে দেখা গিয়েছে, প্রায় প্রতিটিরই হাল খারাপ। নীচের কাঠামো দুর্বল হয়ে পড়েছে। কাঠামো ভঙ্গুর হলেও সৌন্দর্যায়নের আলগা চটকের জন্য তা বোঝার উপায় নেই। রেলিং ও স্তম্ভে রঙের প্রলেপ পড়ে। রাস্তাও তৈরি হয় নিয়মিত। সেই সঙ্গে আলোর বাহারও নজরে পড়ার মতো।

সেতুর দায় যাতে পুরসভার ঘাড়ে না পড়ে, তার জন্য পুর প্রশাসন ঠিক করেছে, এ বার থেকে অনুমতি ছাড়া কোনও সেতুর রাস্তায় তারা হাত দেবে না। আলো দিয়ে সাজাবে না সেতুর উপরেও। এই মর্মে ইতিমধ্যেই বরো ইঞ্জিনিয়ারদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন