Corruption

পুর শিক্ষা বিভাগে দুর্নীতিতে চিঠি তৎকালীন চিফ ম্যানেজারকে

পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৭-’২০ সাল পর্যন্ত শিক্ষা বিভাগের চিফ ম্যানেজার পদে ছিলেন পরমেশ্বর সাউ। কয়েক বছর আগে তিনি অবসর নিয়েছেন। তবে পুরসভা তাঁকে চিঠি দিলেও পরমেশ্বর এখনও তার উত্তর দেননি।

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:০৯
Share:

কলকাতা পুরসভা। —ফাইল চিত্র।

শহরে পুরসভা পরিচালিত স্কুলগুলিতে শৌচাগার সংস্কারে দুর্নীতির বড়সড় অভিযোগ সামনে আসার পরে পুর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই তদানীন্তন সিনিয়র এডুকেশন অফিসার-সহ দুই অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিককে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এ বার ছ’বছর আগের সেই ঘটনার বিস্তারিত জানতে চেয়ে পুর শিক্ষা বিভাগের তৎকালীন চিফ ম্যানেজারকে চিঠি পাঠানো হল। পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৭-’২০ সাল পর্যন্ত শিক্ষা বিভাগের চিফ ম্যানেজার পদে ছিলেন পরমেশ্বর সাউ। কয়েক বছর আগে তিনি অবসর নিয়েছেন। তবে পুরসভা তাঁকে চিঠি দিলেও পরমেশ্বর এখনও তার উত্তর দেননি। এই প্রসঙ্গে তাঁকে ফোন করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোন কেটে দেন।

Advertisement

পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বিভিন্ন পুর বিদ্যালয়ে ৬৩টি শৌচাগার সংস্কার বাবদ প্রতিটির জন্য প্রায় ৬০ হাজার টাকা খরচ করা হয়েছিল। নিয়ম মতো, সেই টাকা স্কুলের উন্নয়ন কমিটির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢোকার কথা। স্কুলে শৌচাগার সংস্কারের কাজে নজরদারি করে ওই কমিটিই। কিন্তু অভিযোগ, প্রতিটি শৌচাগার সংস্কার বাবদ সরাসরি ঠিকাদারদের হাতে ৬০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। একাধিক ঠিকাদারকে সুবিধা পাইয়ে দিতে কারও নামে ১৩টি, কারও নামে ন’টি, কারও নামে আবার চারটি শৌচাগার সংস্কারের বিল দেখানো হয়েছে!

অভিযোগ এখানেই থেমে থাকেনি। সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলির প্রধান শিক্ষকেরা অভিযোগে জানিয়েছেন, তাঁদের সই জাল করে বিদ্যালয়ের ভুয়ো প্যাড বানিয়ে শৌচাগার তৈরির কমপ্লিশন সার্টিফিকেট (সিসি) দেওয়া হয়েছিল। পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। বিষয়টি পুর অধিবেশনে উত্থাপিত হওয়ার পরে তিনি বলেছিলেন, ‘‘পুরসভা কোনও দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবে না। দোষ প্রমাণিত হলে অভিযুক্ত কর্মী-আধিকারিককে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।’’

Advertisement

শুধু শৌচাগার সংস্কারে দুর্নীতিই নয়, পুর শিক্ষা বিভাগে দরপত্র ছাড়াই প্রায় দেড় কোটি টাকার বর্ষাতি ও স্কুলপোশাক কেনার অভিযোগও প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু তিন মাস পরেও পুর কর্তৃপক্ষ কোনও কর্মী-আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিরোধীরা মনে করছেন, বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

বিজেপির পুরপ্রতিনিধি সজল ঘোষের অভিযোগ, ‘‘শিক্ষা বিভাগের তদানীন্তন এডুকেশন অফিসার রুমানা খাতুনকে শো-কজ় করার পরে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন। এখন হয়তো পুর কর্তৃপক্ষ মনে করছেন, রুমানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে অনেক রাঘব বোয়াল বেরিয়ে আসবে। তাই স্রেফ শো-কজ় করেই তদন্ত গুটিয়ে নেওয়া ভাল।’’ যদিও পুরসভার এক শীর্ষ কর্তার দাবি, ‘‘তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। আমরা সব কিছু খতিয়ে দেখে ঠিক সময়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন