হুঁশিয়ারি আছে, হুঁশেরই দেখা নেই

৬৫ নম্বর বড়তলা স্ট্রিট। প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো চারতলা বাড়িটি এক দিক হেলে পড়েছে। বাড়ি ভাঙার পরে রাস্তার পাশে বিদ্যুতের স্তম্ভও হেলে পড়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৭ ০৯:৫০
Share:

প্রতীকী চিত্র।

গত দশ বছরে তিন বার ‘বিপজ্জনক’ নোটিস ঝোলানো হয়েছে কলকাতা পুরসভার তরফে। বছর দুয়েক আগে বাড়ির একাংশ ভেঙেও পড়েছিল। মঙ্গলবার দুপুরে বড়বাজারের বড়তলা স্ট্রিটের ওই বাড়িরই বেশ কিছুটা অংশ ফের ভেঙে পড়ে। যদিও বাড়ি ভাঙার ঘটনায় কেউ হতাহত হননি।

Advertisement

৬৫ নম্বর বড়তলা স্ট্রিট। প্রায় দেড়শো বছরের পুরনো চারতলা বাড়িটি এক দিক হেলে পড়েছে। বাড়ি ভাঙার পরে রাস্তার পাশে বিদ্যুতের স্তম্ভও হেলে পড়েছে। বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে রাস্তার উপরে পড়েছে। বাড়িটির ছাদ আগাছায় ভর্তি। দীর্ঘদিন সংস্কার না-হওয়ায় দেওয়ালে শ্যাওলার পুরু আস্তরণ। কাঠের সিঁড়িগুলিরও জরাজীর্ণ অবস্থা। কলকাতা পুরসভার ডিজি (বিল্ডিং-২) দেবাশিস চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রথমে বছর দশেক আগে এবং পরে দু’বছর ও ছ’মাস আগে বটতলা স্ট্রিটের বাড়িটিতে বিপজ্জনক নোটিস টাঙানো হয়েছিল। তা-ও বাড়ির মালিক বা ভাড়াটে কর্ণপাত করেননি। পুরসভা কাউকে জোর করে সরাতে পারে না। বিপজ্জনক বাড়ির ক্ষেত্রে মালিক ও ভাড়াটেরা সচেতন না হলে দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।’’

বুধবার পুরসভার তরফে বাড়িটির বিপজ্জনক অংশের বেশ কিছুটা ভেঙে ফেলা হয়। এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িটি রাস্তার দিকে হেলে পড়ায় পুরসভা দু’দিক থেকে বড়তলা স্ট্রিট বন্ধ করে দিয়েছে। বাড়ির চার পাশ ঘিরে দেওয়া হয়েছে। সরু রাস্তা বন্ধ থাকায় ছোট গাড়ি, মালবোঝাই ভ্যান চলাচল করতে পারছে না। সমস্যায় পড়েন পথচারীরাও। ঘুরপথে আসা-যাওয়া করতে হয় তাঁদের।

Advertisement

বাড়ির নীচে ফলের পসরা নিয়ে বসেছিলেন মহম্মদ রফিক। ষাটোর্ধ্ব রফিক সাহেবের আদি বাড়ি বিহার হলেও থাকেন পোস্তায়। বুধবার ঘটনাস্থল থেকে একটু দূরে ফল বিক্রি করছিলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘চোখের সামনেই হুড়মুড়িয়ে বাড়িটিকে ভেঙে পড়তে দেখলাম। উপরওয়ালা আমাকে বাঁচিয়েছেন।’’ স্থানীয় সূত্রের খবর, স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার ছুটি থাকায় সব দোকান বন্ধ ছিল। রাস্তাও ছিল ফাঁকা। যে বাড়িটি ভেঙেছে, তার নীচেই ফুটপাথের উপরে ফলবিক্রেতারা বসতেন। ছুটির দিন থাকায় বড় বিপদ থেকে বাঁচা গিয়েছে। পুলিশ জানায়, ওই বাড়িতে জনা কুড়ি ভাড়াটে থাকতেন। মঙ্গলবার দুপুর দুটো নাগাদ বাড়িটির একাংশ যখন ভেঙে পড়ে, তখন বাড়ির ভিতরে তিন জন ছিলেন। বাড়ি ভাঙলেও তাঁরা অবশ্য অক্ষত।

ভাড়াটে বিষ্ণু অগ্রবালের অভিযোগ, ‘‘বাড়ি সংস্কারের বিষয়ে ছ’বছর ধরে মালিককে বলছি। কিন্তু তিনি বিষয়টিকে পাত্তাই দিচ্ছেন না।’’ বাড়ির মালিক বিজয়কুমার ঝুনঝুনওয়ালাকে এ দিন বারবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। উত্তর দেননি এসএমএসের-ও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন