পোস্তার বিবেকানন্দ উড়ালপুলের উপরে রাস্তার স্ল্যাব ভেঙে ফেলা হতে পারে। তবে উড়ালপুলের স্তম্ভ অক্ষত রাখা হবে। এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পথে এগোচ্ছে কেএমডিএ। মঙ্গলবার বিধাননগরের উন্নয়ন ভবনে কলকাতার বিভিন্ন সেতু এবং সেগুলির হাল-হকিকত নিয়ে বৈঠক করেন পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেখানে ভেঙে পড়া বিবেকানন্দ উড়ালপুলের ভবিষ্যৎ নিয়েও আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে ফিরহাদ বলেন, ‘‘তিন বছর আগে ওই উড়ালপুল ভেঙে পড়ার পরে রাজ্যের মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে এক কমিটি বিষয়টি দেখছিল। পরে তা দেওয়া হয় পূর্ত দফতরকে। কিন্তু তারা এখনও কিছু করে উঠতে পারেনি।’’
মন্ত্রী জানান, সম্প্রতি পূর্ত দফতর চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, উড়ালপুল রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব নিক কেএমডিএ। সেই প্রসঙ্গে ফিরহাদের বক্তব্য, ‘‘ভাঙা উড়ালপুলের আবার রক্ষণাবেক্ষণ কী? তবে ওই উড়ালপুলের যে বিপজ্জনক স্ল্যাব (গার্ডার) রয়ে গিয়েছে, সেগুলি ভেঙে ফেলা দরকার।’’ এর জন্য মুখ্যসচিবের দফতরের অনুমোদন নিয়ে টেন্ডার ডাকার কথাও জানান তিনি।
কেএমডিএ সূত্রের খবর, ভোটের জন্য গত দু’মাস বিবেকানন্দ উড়ালপুল নিয়ে আলোচনা করার সময় পাওয়া যায়নি। তাই ভোট মিটতেই মঙ্গলবার ওই উড়ালপুলের জন্য গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটিকে নিয়ে বৈঠক করা হয়। হাজির ছিলেন রাইট্সের ইঞ্জিনিয়ার এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞেরা। ফিরহাদ জানান, কয়েকটি নামী পরামর্শদাতা সংস্থা ওই উড়ালপুল দেখেছে। কিন্তু তারা কিছু করতে পারেনি। মন্ত্রী বলেন, ‘‘ওই উড়ালপুলের কাঠামোগত দৃঢ়তা আছে কি না, তা প্রথমে পরীক্ষা করা হবে। তেমন হলে উড়ালপুলের উপরের অংশ ফেলে দিয়ে, স্তম্ভগুলি কাজে লাগিয়ে নতুন করে কিছু করা যায় কি না তা-ও দেখা হবে। আর না হলে পুরো উড়ালপুল ভেঙে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।’’ তিনি জানান, মুখ্যসচিবের অনুমোদন পেলে সেই কাজে হাত দেবে কেএমডিএ। এর
জন্য টেন্ডার ডাকার প্রক্রিয়া শুরু করবে তারা।
নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, এমনিতেই বিবেকানন্দ উড়ালপুল নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানা চলছে। তিন বছর পেরিয়ে গেলেও কিছু করা যায়নি। এই অবস্থায় উড়ালপুলটি বেশি দিন ফেলে রাখাও বিপজ্জনক। সব দিক ভেবেই দ্রুত কিছু করা দরকার বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ কমিটি। ফিরহাদ আরও জানান, এ দিনের বৈঠকে কলকাতায় আরও কয়েকটি নতুন উড়ালপুল নির্মাণের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে পার্ক সার্কাস থেকে বালিগঞ্জ ফাঁড়ি সংলগ্ন এলাকা সংযোগের উড়ালসেতুও।