কয়েক মাস আগে ডেঙ্গি স্বীকার করতেই নারাজ ছিল রাজ্য সরকার! কিন্তু এ বার ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়ার মতো রোগ ঠেকাতে আগাম সতর্কতা পথে হাঁটছে তারা।
বাড়িতে বা কোনও জমিতে ফুলের টব, খোলা টায়ার, নর্দমা বা সেপ্টিক ট্যাঙ্কে জল জমিয়ে রাখলে পুরসভা নোটিস পাঠিয়ে সে সব পরিষ্কার করতে বলবে। কাজ না হলে বাড়ি বা জমির মালিককে দিতে হবে জরিমানা। যার পরিমাণ ন্যূনতম এক হাজার টাকা এবং সর্বাধিক এক লক্ষ টাকা। প্রাথমিক ভাবে এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে কলকাতা ও হাওড়া পুর-এলাকায়। পরে অন্যান্য পুরসভার এলাকাতেও মশা বা মাছিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে জরিমানার দাওয়াই চালু করা হবে বলে সরকারি সূত্রের ইঙ্গিত।
খাস কলকাতাতেই কিছু দিন আগে সরেজমিনে জমা জলের পরিস্থিতি দেখতে বেরিয়ে বাধা পেয়েছিলেন মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ। কিছু বাড়ির বাসিন্দারা পুর-প্রতিনিধিদের দেখে দরজাই খোলেননি! বিধানসভায় বিল এনে এ বার সেই রাস্তা বন্ধ করে দিচ্ছে পুর দফতর। বিধানসভার চলতি অধিবেশনেই আসতে চলেছে ‘দ্য কলকাতা মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৮’ এবং ‘দ্য হাওড়া মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৮’। সেখানে পরিষ্কারই বলা আছে, কোথাও জমে থাকা জল বা নর্দমার স্রোত মশা-মাছির বংশবিস্তারের সহায়ক পরিবেশ সৃষ্টি করছে কি না, তা পরীক্ষা করে দেখতে চাইতে পারেন পুরসভার প্রতিনিধিরা। রোগ ছড়ানোর মতো কিছু পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট বাড়ি বা জমির মালিককে বলা হবে তা পরিষ্কার করে ফেলতে। তার পরে আবার হবে পরীক্ষা।
সংশ্লিষ্ট নাগরিক পুর কর্তৃপক্ষের নোটিস পেয়েও যদি ‘বিপজ্জনক’ জল পরিষ্কার না করেন, তা হলে পুরসভাই নির্দেশ জারি করে টিম পাঠিয়ে সেই কাজ করে দেবে। এবং গোটা অভিযানের খরচা আদায় করা হবে সংশ্লিষ্ট নাগরিকের কাছ থেকেই। জরিমানার পরিমাণ নির্ধারণ করবে মেয়র পরিষদ। আর গোটা অভিযানের দায়িত্ব থাকবে পুর কমিশনারের উপরে। তিনিই আধিকারিকদের মধ্যে দায়িত্ব বণ্টন করে দেবেন।
সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, নগরায়নের সঙ্গে সঙ্গে পতঙ্গবাহিত রোগের দাপট বেড়েই চলেছে। তাই নতুন ধারা সংযোজন করে বর্তমান আইনকে আরও যুগোপযোগী করা হচ্ছে। সরকারি এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ডেঙ্গি বা ম্যালেরিয়ার প্রকোপ ঠেকাতে সচেতনতার প্রচার সব সময় চলে। চলবেও। কিন্তু রোগ মোকাবিলার পরিবেশ ঠিক রাখতে কোনও শিথিলতা যাতে না থাকে, সে দিকে লক্ষ রেখেই আইন সংশোধন করা হচ্ছে।’’