নিয়ম মেনেই দোকান চালাতে হবে স্কাইওয়াকে

পুরসভা সূত্রের খবর, স্কাইওয়াকের উপরের অংশটি সাড়ে ১০ মিটার চওড়া। তার মধ্যে দু’পাশে ৩.৩ মিটার করে জায়গা রয়েছে পথচারীদের হাঁটাচলার জন্য।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৮ ০২:৪০
Share:

সারিবদ্ধ: স্কাইওয়াকের মাঝের অংশে রয়েছে ১৩৭টি স্টল। নিজস্ব চিত্র

স্কাইওয়াক নোংরা করলে তা সাফ করা এবং জরিমানা দেওয়ার নিয়ম ইতিমধ্যে চালু হয়েছে দর্শনার্থীদের জন্য। এ বার দক্ষিণেশ্বর রানি রাসমণি স্কাইওয়াকের উপরে থাকা দোকান চালু হওয়ার আগে মালিকদের নির্দিষ্ট নিয়মে বাঁধতে চাইছে পুরসভা।

Advertisement

কামারহাটি পুরসভা সূত্রের খবর, দোকান বণ্টনের লটারির প্রক্রিয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু দোকানের চাবি হস্তান্তরের আগে পুরসভার সঙ্গে একটা চুক্তি করতে হবে সব মালিকদের। চুক্তিপত্রে থাকা শর্ত মেনেই দোকান নিতে হবে। পুর চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, ‘‘স্কাইওয়াকের নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতার দিকটা চিন্তা করেই ওই চুক্তি করা হচ্ছে। এই স্কাইওয়াক আমাদের সকলের গর্বের বিষয়। তাই আশা করি দোকানদারেরাও ওই সব শর্ত মেনে নেবেন।’’

পুরসভা সূত্রের খবর, স্কাইওয়াকের উপরের অংশটি সাড়ে ১০ মিটার চওড়া। তার মধ্যে দু’পাশে ৩.৩ মিটার করে জায়গা রয়েছে পথচারীদের হাঁটাচলার জন্য। মাঝে ৩.৯ মিটার অংশে রয়েছে ১৩৭টি স্টল। তার মধ্যে ১৩৩টি দোকান। আপাতত সিদ্ধান্ত হয়েছে, ৫ বছরের জন্য প্রতিটি দোকান লিজ দেওয়া হবে। এক পুরকর্তা জানান, আগে দোকানদারেরা যে ভাড়া দিতেন, এ বার লিজ হওয়ার পরে তার থেকে সামান্য কিছু বেশি দিতে হতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘যদিও সে বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। স্কাইওয়াকে পরিষেবামূলক সব রকম সুযোগ-সুবিধে পাবেন দোকানদারেরা। তার জন্য সামান্য ভাড়া বাড়তে পারে।’’

Advertisement

এক নজরে নিয়ম-নামা

• সকালে নির্ধারিত সময়ে দোকান খুলবে, মন্দির বন্ধের আধ ঘণ্টা পরে রাতে দোকান বন্ধ হবে
• দোকানের চৌহদ্দির বাইরে মালপত্র রাখলে জরিমানা, এমনকি, লিজ বাতিলও হতে পারে
• দোকানের নিজস্ব জায়গায় ময়লা জমিয়ে পরে পুরসভার নির্দিষ্ট স্থানে তা ফেলতে হবে
• মালিকের মৃত্যুর পরে তাঁর পরিবারের কার নামে লিজ হবে, সিদ্ধান্ত নিতে হবে নিজেদেরই
• দোকান অন্যকে ভাড়া দিয়ে রাখা চলবে না

গোপালবাবু জানান, সকালে স্কাইওয়াকের ১২টি গেটই নির্দিষ্ট সময়ে খোলা হবে এবং রাতে বন্ধ করা হবে। স্কাইওয়াক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা দক্ষিণেশ্বর মন্দির কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত সময়সূচি মেনেই তা করা হবে। স্কাইওয়াকের উপরে থাকা স্টলগুলিও সকালে খুলতে হবে নির্দিষ্ট সময়ে এবং রাতে মন্দির বন্ধের পরে আরও অতিরিক্ত আধ ঘণ্টা সময় দেওয়া হবে, যাতে সব কিছু গুছিয়ে দোকান বন্ধ করতে পারেন ব্যবসায়ীরা। চেয়ারম্যান জানান, চুক্তিপত্রে এই বিষয়টি ছাড়া আরও তিনটি বিষয় থাকবে। তার মধ্যে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা হল— মালিকানা বণ্টন। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, যার নামে দোকান রয়েছে, তিনি মারা গিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে তাঁর পরিবারে অংশীদার যাঁরা বা যিনি রয়েছেন, তাঁদের নিজেদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে দোকানটি কার নামে লিজ দেওয়া হবে। সেইমতো আইনি কাগজ জমা দিতে হবে পুরসভায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, যাঁর নামে দোকান রয়েছে, তিনি দীর্ঘদিন ধরে অন্য জনকে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন। আবার নিজেও অন্যত্র কাজ করছেন। এই সব ক্ষেত্রে যিনি দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া দিচ্ছেন, তাঁর নামেই লিজ দেওয়া হবে। গোপালবাবু বলেন, ‘‘কারও রোজগার বন্ধ করা আমাদের কাজ নয়। কিন্তু কেউ দোকানটি অসাধু উপায়ে নিজের অতিরিক্ত রোজগারের কাজে ব্যবহার করবেন, তা হবে না।’’ ‘রানি রাসমণি রোড দোকানদার সমিতি’র সভাপতি কালীপদ বর্মণ বলেন, ‘‘পুরসভা যে নিয়ম মানতে বলছে, তা খুবই ভাল। তবে রাতে বন্ধের সময়টা এক ঘণ্টা এবং লিজ দেওয়ার ক্ষেত্রের নিয়মের বিষয়ে আমাদের সঙ্গে একটু আলোচনা করলে খুব ভাল হয়।’’

স্কাইওয়াক উদ্বোধনের দিনই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, পরিচ্ছন্নতার বিচারে বছরে একটি করে দোকান পুরস্কার পাবে। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের অছি ও

সম্পাদক কুশল চৌধুরী বলেন, ‘‘স্কাইওয়াক দেশের গর্ব। তাই সেটি রক্ষণাবেক্ষণে সতর্ক থাকতে হবে। তার জন্য প্রশিক্ষিত কর্মীদের নিয়োগ করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন