জোরকদমে: তিলজলার হেলে পড়া বাড়িটি ভাঙার কাজ করছেন পুরকর্মীরা। শনিবার। ছবি: সুমন বল্লভ
তিলজলায় হেলে পড়া বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু করল কলকাতা পুরসভা। কালীপুজো এবং দীপাবলির ছুটির আগে শনিবার বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ ১২/১১, শিবতলা লেনের ওই বাড়িটি ভাঙতে শুরু করেন পুরকর্মীরা। ভেঙে ফেলার পরে ওই জমিতে নতুন করে একটি তিনতলা বাড়ি তৈরি করার অনুমতি চেয়ে পুরসভার কাছে ইতিমধ্যেই আবেদন করেছেন বাড়িটির বাসিন্দারা। এর আগে বাড়িটি সংস্কারের ভার তাঁদের উপরে ছেড়ে দেওয়ার জন্য পুরসভার কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন তাঁরা। পুরসভা অবশ্য সেই আবেদন নাকচ করে দেয়।
গত ২৪ অক্টোবর শিবতলা লেনের ওই পাঁচতলা বাড়িটি পাশের আর একটি পাঁচতলা বা়ড়ির গায়ে হেলে পড়ে। ঘটনায় এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশ এবং পুরকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসিন্দাদের বাড়িটি ফাঁকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে হেলে যাওয়া ওই বাড়িটিকে বিপজ্জনক বলেও ঘোষণা করা হয়। ওই বাড়িটিতে বসবাস করা ২৩টি পরিবারকে রাতারাতি অন্যত্র উঠে যেতে হয়।
সেই ঘটনার ১০ দিনের মাথায় এ দিন পুরসভা বাড়িটি ভেঙে ফেলার কাজ শুরু করল। পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে এ দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন কড়েয়া এবং তিলজলা থানার পুলিশ আধিকারিকেরাও। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হয়েছিল, ওই এলাকায় বাড়িটি ভাঙতে গেলে গন্ডগোল হতে পারে। কারণ আশঙ্কা করা হয়েছিল যে, বাড়ি সংস্কার করতে চেয়ে বাসিন্দাদের আবেদন পুরসভা নাকচ করে দেওয়ায় এ দিন তাঁরা গন্ডগোল পাকাতে পারেন।
সে রকম কোনও পরিস্থিতি তৈরি হলে অশান্তি আটকাতে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। তবে এ দিন কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এ দিন সকালে ছাদে উঠে বাড়িটির যে অংশটি পাশের বাড়ির গায়ে হেলে রয়েছে, সে দিকের পাঁচিল ভাঙার কাজ শুরু করেন পুরকর্মীরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক পুর আধিকারিক জানিয়েছেন, এর পরে ড্রিল যন্ত্রের সাহায্যে ছাদে ছিদ্র করে ধাপে ধাপে বাড়িটি ভাঙা হবে। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘বাড়িটি যে হেতু পাশের বাড়ির গায়ে হেলে রয়েছে, তাই হেলে পড়া অংশই আগে ভাঙতে হচ্ছে। না-হলে গোটা বাড়ির চাপ গিয়ে ওই পাশের বাড়িটিতে পড়বে। তা আরও বিপজ্জনক।’’
এ দিন হেলে পড়া বাড়ি ভাঙার কাজ চলার সময়ে সামনেই দাঁড়িয়ে ছিলেন বাড়িটির বাসিন্দারা। বাড়ি ভাঙা দেখতে আশপাশের বাড়ির ছাদেও জমেছে ভিড়। বাড়িটির এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘পুরসভার কাছে ভাড়াটেরা মিলে চিঠি দিয়েছি। ভেঙে ফেলার পরে অন্তত তিনতলা পর্যন্ত করার অনুমতি দিক। ভাড়াটেরা তা হলে মাথা গোঁজার একটা ঠাঁই পাবে।’’ বাড়িটির আর এক বাসিন্দা, এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী জেবা খাতুন অবশ্য এ দিন বেজায় খুশি। বলছে, ‘‘এ বার হয়তো আমাদের বাড়ি নতুন করে দ্রুত তৈরি হবে।’’