Dangerous Houses

বিপজ্জনক বাড়ি নিয়ে বর্ষার শুরু থেকেই কপালে ভাঁজ পুরসভার

পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, এ শহরে বিপজ্জনক বাড়ির সংখ্যা তিন হাজারের কাছাকাছি। যার মধ্যে পাঁচশোটির অবস্থা খুবই খারাপ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৩ ০৭:০৪
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

বর্ষা শুরু হতেই শহরের বিপজ্জনক বাড়িগুলি নিয়ে চিন্তায় কলকাতা পুরসভা। পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, এ শহরে বিপজ্জনক বাড়ির সংখ্যা তিন হাজারের কাছাকাছি। যার মধ্যে পাঁচশোটির অবস্থা খুবই খারাপ। অভিযোগ, পুরসভার বিল্ডিং বিভাগ একাধিক বার ওই সব বাড়ি খালি করার নোটিস দেওয়া সত্ত্বেও বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছেন ভাড়াটেরা।

Advertisement

যেমন, ধর্মতলার মোড়ে ৯ এবং ১০ নম্বর জওহরলাল নেহরু রোড। এই দু’টি বহুতলকে পুরসভা দীর্ঘদিন আগেই বিপজ্জনক বলে ঘোষণা করেছে। অভিযোগ, ভাড়াটেরা বাড়ি খালি না করায় পুরসভা ভাঙতে পারছে না। গত ১০ জুন ওই দু’টি বাড়ির সমস্ত ভাড়াটেকে বাড়ি খালি করার নোটিস দিয়ে কলকাতা পুরসভার তরফে বলা হয়েছিল, তিন দিনের মধ্যে সেটি ভাঙা হবে। ভাড়াটেরা তার পরেই আদালতের দ্বারস্থ হন। বিল্ডিং দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘জওহরলাল নেহরু রোডের ওই দু’টি বাড়ির অবস্থা খুবই খারাপ। যে কোনও মুহূর্তে বাড়ি ভেঙে বড়সড় বিপদ হতে পারে। তাই ওই বাড়ি দু’টিতে নোটিস দিয়ে সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু বাড়ির ভাড়াটেরা পাল্টা আদালতে যাওয়ায় পুরসভার কিছু করার থাকছে না।’’

মঙ্গলবার সকালে জওহরলাল নেহরু রোডের ওই দু’টি বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, বাড়ির আশপাশে বড় বড় গাছ বেড়ে উঠেছে। দেওয়ালের একাধিক জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। ওই বিপজ্জনক বাড়ির উপরের অংশ ভেঙে যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে, তার জন্য এ দিন সকালে পুরসভা ও পুলিশের লোকজন আশপাশে জাল লাগাতে যান।

Advertisement

ওই ঠিকানা দু’টিতে বহু বছর ধরে ৩০ জন ভাড়াটে ব্যবসা করছেন বলে জানা গিয়েছে। বাড়ি দু’টিরই মালিক এলআইসি। ৯ জওহরলাল নেহরু রোডের ঠিকানার একতলায় একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে। সেটির জনসংযোগ আধিকারিক দেবাশিস সেন বলেন, ‘‘পুরসভা অনুমোদিত ইঞ্জিনিয়ারদের দিয়ে বাড়ির গঠনগত অবস্থার সার্ভে করে তার রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, বাড়ির অবস্থা এমন নয় যে, পুরো ভেঙে ফেলতে হবে। বাড়ি সংস্কারের জন্য মালিককে একাধিক বার জানানো সত্ত্বেও তারা মেরামতির অনুমোদন দেয়নি। এমনকি, বাড়ির দেওয়ালে জন্মানো গাছগুলি কাটতেও অনুমতি দেওয়া হয়নি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা এখানে একশো বছরের বেশি ব্যবসা করছি। তিরিশ জন মতো কর্মী আছেন। বাড়ি পুরোপুরি ভাঙলে আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। সকলের রুটিরুজির ব্যবস্থা মাথায় রাখতে হবে।’’ বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন হওয়ায় এ বিষয়ে এলআইসি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের দাবি, জওহরলাল নেহরু রোডের ওই দু’টি ঠিকানা উদাহরণ মাত্র। শহরের বেশির ভাগ বিপজ্জনক বাড়ি খালি করত পুরসভাকে বাড়িওয়ালা-ভাড়াটের দ্বন্দ্বের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, মেয়রের নির্দেশ মতো শহরের বিপজ্জনক বাড়ি ধরে ধরে পরিদর্শনে যাচ্ছেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। বাড়ির অবস্থা বুঝে বিপজ্জনক অংশ দ্রুত সংস্কারের আর্জি জানানো হচ্ছে পুরসভার তরফে। এক পুর আধিকারিকের মতে, ‘‘বিপজ্জনক বাড়ি ভেঙে পড়লে দায় পুরসভার উপরে পড়ে। তাই সেই বাড়িতে বসবাসকারী ভাড়াটে ও মালিকেরা যাতে সংস্কারে এগিয়ে আসেন, সে বিষয়ে পুরসভার তরফে তাঁদের বোঝানো হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন