ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই বিমানটির একটি ডানা। বিমানবন্দরে। নিজস্ব চিত্র
ঝড়ে ক্ষতি হয়েছে ডানার। সেই ডানা সারাতে এক কোটি টাকা খরচ হতে পারে বলে মনে করছে বিমান সংস্থা।
দড়ি দিয়ে দু’দিকের ডানার সঙ্গে ওজন বাঁধা ছিল। যাতে ঝোড়ো হাওয়ায় বিমান সরে যেতে না পারে। তা সত্ত্বেও ঘণ্টায় ৯৬ কিলোমিটার গতিতে ধেয়ে আসা ঝড়ের ধাক্কায় ঘুরে গিয়েছে বিমানের মুখ।
দুপুরে আবহাওয়া দফতরের সতর্কবার্তা পাওয়ার পরেও কেন আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হল না, তা নিয়ে উঠে গিয়েছে প্রশ্ন। মঙ্গলবার রাতের ঝড়ে কলকাতা বিমানবন্দরে বিমানের মুখ ঘুরে যাওয়ার ঘটনায় তদন্তে নামল ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন’ (ডিজিসিএ)।
কলকাতা বিমানবন্দরের ভিতরে রাজারহাটের দিকে যেখানে এয়ার ইন্ডিয়ার হ্যাঙ্গার রয়েছে, তার কাছেই ৩৪ নম্বর পার্কিং বে-তে ছিল পিনাকল এয়ারের ওই ছোট শেসনা বিমান। নয় আসনের বিমানটি মাঝেমধ্যেই ভাড়া নিত শহরের এক হাসপাতাল। কলকাতা থেকে চিকিৎসক ও রোগী নিয়ে বিভিন্ন শহরে উড়ে যেত সেটি। গত ১৬ তারিখও এক বার উড়েছিল। তার পর থেকে সেটি দাঁড়িয়ে ছিল ৩৪ নম্বর বে-তেই।
বিমানবন্দরের এক কর্তা জানিয়েছেন, সাধারণত এ ভাবে ছোট বিমান যখন দাঁড়িয়ে থাকে, তখন তাকে বেঁধে রাখাই দস্তুর। ওই বিমানটিরও দু’টি ডানার সঙ্গে দড়ি দিয়ে ওজন বাঁধা ছিল। কিন্তু, মঙ্গলবারের ঝড়ে ডান দিকের ডানার দড়ি ছিঁড়ে যায় এবং হাওয়ার দাপটে তার মুখ উল্টো দিকে ঘুরে যায়। এর ফলে বেঁকে যায় বাঁ দিকের ডানা।
কলকাতা বিমানবন্দরের নিজস্ব আবহাওয়া অফিসের কর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বুধবার জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে ন’টার মধ্যে ঝড় হতে পারে বলে আগে থেকেই সতর্ক করা হয়েছিল সবাইকে। তাঁর কথায়, ‘‘হাওয়ার গতি ঘণ্টায় ৩১ কিলোমিটারের বেশি হলেই সতর্কবার্তা পাঠানো হয়। কাল হাওয়ার গতি অনেকটাই বেশি ছিল। রাত সওয়া আটটায় তা ঘণ্টায় ৯৬ কিলোমিটার গতিতে বয়েছে।’’
বিমানবন্দরের এক কর্তার কথায়, ‘‘ঝড়ের সতর্কবার্তা পাওয়ার পরে আরও সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত ছিল। বড় বিমানের ক্ষেত্রে পার্কিং ব্রেক থাকে। কিন্তু, অনেক ছোট বিমানের তা থাকে না। চাকার সামনে লাগানোর জন্য এক ধরনের ‘গার্ড’ পাওয়া যায়। তদন্তে দেখা হবে, এই বিমানের ক্ষেত্রে সেই গার্ড লাগানো ছিল কি না। পার্কিং বে-র পাশে মাটিতে লোহার আংটা লাগানো থাকে। সেই আংটার সঙ্গেও বিমানের চাকা বেঁধে রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে তা ছিল না।’’
ঝড়ে ক্ষতি হয়েছে বিমানবন্দরের দোতলায় ‘প্রস্থান’-এর বাইরে থাকা একটি কফি শপের। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ সেই দোকানের ছাদ ভেঙে পড়ে। তখন অবশ্য দোকানে কোনও ক্রেতা বা কর্মী ছিলেন না। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ঝড়ের দাপট বাড়লে ওই দোকানের একমাত্র কর্মীকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।