এক মাস আগের ভাঙা গাছ সরাবে কে, উদ্বেগ

এই অভিযোগ মানতে নারাজ মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) রহিমা বিবি মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘বুধবার এএ ব্লকে একটি গাছ ভেঙে গাড়ির উপরে পড়েছিল।

Advertisement

কাজল গুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৮ ০২:১৫
Share:

অবরুদ্ধ: রাস্তা জুড়ে এখনও পড়ে গাছ। বৃহস্পতিবার, সল্টলেকের করুণাময়ীতে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য

ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়েছিল সল্টলেক। অসংখ্য গাছ শিকড়সুদ্ধ উপড়ে পড়েছিল রাস্তার উপরে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেগুলি কয়েকটি বড় রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েছিল পুরসভা।

Advertisement

কিন্তু ওইটুকুই।

তার পরে কেটে গিয়েছে এক মাস। ওই সব গাছ এখনও ঠিক সে ভাবেই পড়ে রয়েছে রাস্তার ধারে এবং অলিগলিতে। পুরসভার দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের কাজে কর্মীরা ব্যস্ত থাকায় কিছুটা সময় লেগেছে। পাশাপাশি তাদের দাবি, ওই সব গাছ ইতিমধ্যেই নিলামে বিক্রি করা হয়েছে। দ্রুত সেগুলি সরিয়ে ফেলা হবে।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দারা অবশ্য প্রশ্ন তুলছেন যে, বর্তমান পুরবোর্ড প্রায় আড়াই বছর পার করে ফেলল। পরিকাঠামোর প্রভূত সংস্কার করা হয়েছে বলেও দাবি পুর কর্তৃপক্ষের। অথচ এক মাসেও রাস্তা জুড়ে পড়ে থাকা গাছ সরাতে পারেন না? নাগরিকদের জরুরি পরিষেবা বলতে যা বোঝায়, তার জন্য ন্যূনতম তৎপরতাটুকুও নেই?

সল্টলেকের চারটি সেক্টরেই বহু পুরনো গাছ পড়ে গিয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, দেবদারুর মতো বড় বড় গাছ। বাসিন্দাদের বক্তব্য, এই গাছগুলিই সল্টলেকের প্রাণ। অথচ গাছ রক্ষা করার দিকে হুঁশই নেই কারও। বাকি যে ক’টি গাছ রয়েছে, অবিলম্বে সেগুলি রক্ষা করার পরিকল্পনা করুক প্রশাসন।

এএ ব্লক থেকে শুরু করে খোদ মেয়রের ওয়ার্ডে একাধিক জায়গায় গাছ কেটে ফেলে রাখতে দেখা গিয়েছে। কোথাও আবার ব্লকের ভিতরে রাস্তার উপরেই গাছ প়ড়ে রয়েছে। শুধু ব্লকের ভিতরেই নয়, সল্টলেকের তিন দিকের খালপাড়ের রাস্তার ধার থেকে শুরু করে একাধিক জায়গায় দেখা গিয়েছে, গাছ কেটে ফেলে রেখে দেওয়া হয়েছে। এমন সব গাছের স্তূপ ছড়িয়ে রয়েছে সল্টলেকের বিভিন্ন প্রান্তে। কিন্তু অভিযোগ, সে দিকে নজর নেই কারও।

বৃহস্পতিবার সল্টলেকের এক গলিতে দেখা গেল, অবসরপ্রাপ্ত এক নাগরিক তাঁর বাড়ির সামনে ভেঙে পড়া গাছের ডালপালা সরাচ্ছেন। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, এ নিয়ে বারবার প্রশাসনকে জানিয়েও লাভ হয়নি।

গাছ যদি নিলামই হবে, তাতে এক মাস লাগল কেন— প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা। স্থানীয়দের প্রশ্ন, পুরসভার নিজস্ব পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও তারা কেন সময়ে গাছগুলি কেটে সরিয়ে দিল না? বস্তুত, পুরসভা গাছ নিলাম করে নিজের আয় বৃদ্ধিতেই নজর দিয়েছে। বাসিন্দাদের ভোগান্তি কমানোর দিকে তাদের নজর নেই।

এই অভিযোগ মানতে নারাজ মেয়র পারিষদ (পরিবেশ) রহিমা বিবি মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘বুধবার এএ ব্লকে একটি গাছ ভেঙে গাড়ির উপরে পড়েছিল। দ্রুত তা সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রায় ৪০০ গাছ পড়েছে। সব গাছ কেটে সরাতে সময় কিছুটা লাগে।’’

তাঁর দাবি, পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য পুর কর্মীরা খুব ব্যস্ত ছিলেন। তাই সব গাছ এর মধ্যে সরিয়ে ফেলা যায়নি। তবে সব গাছ নিলাম হয়ে গিয়েছে। কিছু দিনেই ভাঙা গাছগুলি সরিয়ে দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন