রাস্তা আটকে বাস, বাড়ছে পথের ঝুঁকি

উত্তরের বাগবাজার এলাকার ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ অ্যাভিনিউয়ে ঢুকলেই নজরে পড়বে, রাস্তার দু’ধারে দিনরাত সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে বাগবাজার-গল্ফগ্রিন, শ্রীরামপুর-বাগবাজার রুটের সঙ্গে গড়িয়ার বাসও।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৮ ০২:১৫
Share:

দখল: রাস্তার দু’পাশে এ ভাবেই দাঁড়িয়ে থাকে বাস। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

রাস্তায় অলিখিত বাসস্ট্যান্ড! রাতে তো বটেই। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ ঘুরে দিনেও দেখা যায় এই ছবি। আড়াল করে দাঁড়িয়ে থাকা বাসের জন্য মাঝেমধ্যেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। প্রশাসন তবু নির্বিকার। কোনও বরো চেয়ারম্যান দায় সারতে চিঠি দিচ্ছেন, কোনও বরো চেয়ারম্যান অনিয়ম ঢাকতে পর্দা টানছেন। পুরসভা দায় চাপাচ্ছে পুলিশ ও পরিবহণ দফতরের উপর। হেলদোল নেই তাদেরও। ফলে অনিয়ম বিস্তৃত হচ্ছে শহর জুড়ে।

Advertisement

দক্ষিণের উদয়শঙ্কর সরণিতে (গল্ফ গ্রিন) সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে চারটি রুটের বাস। রয়েছে গল্ফগ্রিন থেকে বেলঘরিয়া, বাগবাজার, বিটি কলেজ, হাওড়া স্টেশন যাওয়ার মিনিবাসের স্ট্যান্ড। যার জন্য রাস্তায় গাড়ির গতি যে কমেছে, তা মানছেন স্থানীয় ৯৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর থেকে স্থানীয়েরা। দশ নম্বর বরো চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্তের দাবি, ‘‘রাস্তার উপরে বাসস্ট্যান্ড তৈরি হলে তো গাড়ির গতি
কমবেই! এ জন্য পুলিশ এবং পরিবহণ দফতরকে চিঠিও দিয়েছি। কিছুই হয়নি।’’ স্থানীয়দের দাবি, বাগবাজার-গল্ফগ্রিন রুটের বাসগুলি এক সময়ে ছিল যাদবপুর থানা সংলগ্ন এলাকায়। সেখান থেকে হঠাৎ এক দিন উদয়শঙ্কর সরণিতে চলে আসে। সেখানেই তারা থেকে গিয়েছে পাকাপোক্ত ভাবে।

উত্তরের বাগবাজার এলাকার ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ অ্যাভিনিউয়ে ঢুকলেই নজরে পড়বে, রাস্তার দু’ধারে দিনরাত সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে বাগবাজার-গল্ফগ্রিন, শ্রীরামপুর-বাগবাজার রুটের সঙ্গে গড়িয়ার বাসও। এক নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তরুণ সাহার বক্তব্য, আগে আরও বেশি বাস থাকত ওখানে। এখন অনেক কমেছে। তবে এগুলি সরানোর কোনও পরিকল্পনা নেই। গত দু’বছর ধরে একই সমস্যা তৈরি হয়েছে টালা পার্কের রাস্তার উপরে। শ্যামবাজার-বাগনান রুটের অসংখ্য বাস রাখা থাকে ঠিক টালা ঝিল পার্কের সামনে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দিনেও দাঁড়িয়ে থাকে বাস। আর রাত বাড়লেই বাসে বসে যায় জুয়া-মদের আসর। এ জন্য জানালা খোলা যায় না। মানতে নারাজ তরুণবাবু। তাঁর বক্তব্য, ‘‘বাজে কথা। দুপুর-বিকেল নাগাদ বাসকর্মীরা খাওয়ার সময় ভিড় করেন। রাতে পার্কিং করে চলে যান। সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’

Advertisement

জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটস-এর সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘রাস্তা থেকে বাসস্ট্যান্ড সরানো নিয়ে পরিবহণ দফতরের কাছে আবেদন করেছি। প্রয়োজনে সরকারি বাস টার্মিনাসে বেসরকারি বাস রাখতে দেওয়া হোক। গড়িয়ায় একটি রুটে তা করা হলেও অন্যত্র তা হয়নি।’’

অল বেঙ্গল বাস ও মিনিবাস সমন্বয় সমিতির আহ্বায়ক রাহুল চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘এটা বড় সমস্যা। পরিবহণ দফতরকে এ নিয়ে বলা হয়েছে।’’ রাস্তায় বাসের পার্কিং নিয়ে পুরসভার কিছু করার নেই বলে জানাচ্ছেন মেয়র পারিষদ (পার্কিং) দেবাশিস কুমার। তাঁর কথায়, ‘‘এটা পুলিশ এবং পরিবহণ দফতরের বিষয়।’’ ডিসি (ট্র্যাফিক) সুমিত কুমারের বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে।’’ পরিবহণ দফতরের এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘‘টার্মিনাস সরানো নিয়ে বাস মালিক সংগঠনগুলির তরফে কোনও প্রস্তাব আসেনি। এলে ভেবে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন