দেহ মিলল ছেলের, বাবা বলছেন খুন

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১১
Share:

অভিজিৎ দে

দমদমের নিখোঁজ কিশোর অভিজিৎ দে-র (১৭) খোঁজ মিলল আর জি করের লাশঘরে!

Advertisement

সোমবার মৃত কিশোরের বাবা নিমাই দে অভিযোগ করেন, তাঁর ছেলেকে খুন করা হয়েছে। নিখোঁজ হওয়ার দিন থেকে ঘটনাক্রমের নিরিখে এমনই দাবি নিমাইবাবুর। অভিজিৎ দিন দশ নিখোঁজ থাকার পরে এই ঘটনায় একটি অপহরণের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছিল দমদম থানার পুলিশ।

গত ২৯ মার্চ সকালে দেগঙ্গায় দিদির বাড়ি ঘুরতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেনি অভিজিৎ। পুলিশ জানিয়েছে, ওই দিনই দক্ষিণদাঁড়ির রেললাইন থেকে অভিজিতের দেহ পান জিআরপি আধিকারিকেরা। দশ দিনের বেশি সময় ধরে কিশোর নিখোঁজ থাকার দরুণ বিভিন্ন থানায় খবর দেওয়া হয়েছিল। সেই সূত্রে সোমবার অভিজিতের পরিজনেদের দমদম জিআরপি-তে ডেকে পাঠানো হয়। ছবি দেখে অভিজিৎকে শনাক্ত করলে পরিজনেদের দেহ নেওয়ার জন্য আর জি কর হাসপাতালে যেতে বলা হয়। পুলিশ সূত্রের খবর, ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসেবে দুর্ঘটনার ইঙ্গিত করা হয়েছে।

Advertisement

কিন্তু মৃতের বাবার দাবি, কোন পরিস্থিতিতে দুর্ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হোক। অভিজিতের জামাইবাবু নরেন্দ্র দাসের বক্তব্য, নিখোঁজের দিন সন্ধ্যার পরে অভিজিতের মোবাইলে একটি নম্বর থেকে একাধিক বার ফোন এসেছিল। রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ অভিজিতের সঙ্গে তার বাবার শেষ কথা হয়েছিল। তদন্ত পুলিশ দেখেছে, সেই সময়ে মৃত কিশোরের মোবাইল টাওয়ারের অবস্থান ছিল বেলগাছিয়া। ঘটনাচক্রে, যে নম্বর থেকে একাধিক বার ফোন এসেছিল তারও অবস্থান ছিল বেলগাছিয়া। অভিজিতের সঙ্গে ঠিকা শ্রমিকের কাজ করত সঞ্জয় দাস নামে এক ব্যক্তি। সেই সঞ্জয় যে অন্য এক জনের মোবাইল ব্যবহার করে অভিজিৎকে ২৯ মার্চ ফোন করছিল, পুলিশই সে কথা জানিয়েছে পরিবারকে। নরেন্দ্র বলেন, ‘‘সঞ্জয়ের বাড়ি উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে। অভিজিতের মোবাইলের আইএমইআই নম্বর দেখে পুলিশ জেনেছে, ওই মোবাইল আজমগড়ে ব্যবহার করা হচ্ছে।’’ মৃতের বাবা বলেন, ‘‘দক্ষিণদাঁড়িতে সঞ্জয় ভাড়াবাড়িতে থাকত। সেখানেই তো ছেলের দেহ পাওয়া গিয়েছে। সঞ্জয়কে ধরলেই অভিজিতের মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।’’

নবীন কামত নামে এক জন ঠিকাদারের কাছে অভিজিৎ এবং সঞ্জয় কাজ করত। এ দিন ওই ঠিকাদার জানান, গত ৩১ মার্চ পর্যন্ত কাজ করে আজমগড় যায় সঞ্জয়। বাড়ি যাওয়ার কথা তিন-চার দিন আগে জানিয়েছিল সে। নবীনের কথায়, ‘‘৩১ মার্চ সঞ্জয়ের হাতে একটা দামি মোবাইল ফোন দেখি। আগে সাদা রঙের কমদামি ফোন ব্যবহার করত সে। নিজে থেকেই ও বলল, ফোনটা কিনেছে।’’ এ দিন সকালে ওই ঠিকাদারকে ফোন করে সঞ্জয় জানায়, সে শহরে ফিরেছে। তাকে যশোর রোডের বাঙুর মোড়ে আসার কথা বলেন নবীন। সেখানে সঞ্জয়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন অভিজিতের পরিজনেরাও। কিন্তু সকাল সাড়ে আটটা থেকে ১০টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও সঞ্জয়ের দেখা মেলেনি। যত বারই ফোন করা হয়, সে দ্রুত বাঙুর মোড়ে পৌঁছনোর আশ্বাস দিয়ে ফোন কেটে দেয়। কিছু ক্ষণ পরে তার ফোন বন্ধ হয়ে যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement