পাল্টা: শালীনতা বজায় রাখার আবেদন। শনিবার, টালিগঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
নবীনদের ‘হোক আলিঙ্গন’-এর পাল্টা ‘হোক চৈতন্য’— এমনই কর্মসূচি নিয়ে এ বার পথে নামলেন প্রবীণদের একাংশ।
শনিবারই আনুষ্ঠানিক ভাবে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘হোক চৈতন্য’ মঞ্চ। মেট্রো-বিতর্কে এ দিন টালিগঞ্জ মেট্রো স্টেশনের সামনে জমায়েতও ছিল প্রবীণ সংগঠনের প্রতিনিধিদের। সংগঠনের সদস্য শৈলেন ঘোষ বলেন, ‘‘আমরাও তো এক সময় প্রেম করেছিলাম।
তখন তো প্রেমের এত জায়গা ছিল না। এখন তো তাও প্রেমিক-প্রেমিকার একে অপরকে আবেগ জানানোর অনেক জায়গা রয়েছে। জনসমক্ষে আপত্তিকর পরিস্থিতি তৈরির প্রয়োজন কী!’’
কয়েক দিন আগে চলন্ত মেট্রোর ভিতরে আলিঙ্গনরত যুগলকে মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শহরে নবীন-প্রবীণদের একাংশ এখনও যুযুধান।
পোস্টার, ফেস্টুন, স্লোগান, সোশ্যাল মিডিয়া— প্রায় সর্বত্র প্রবীণদের উদ্দেশ্যে সমালোচনা ব্যঙ্গে মুখর নবীন দলের সদস্যেরা। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব হতে নারাজ ‘হোক চৈতন্যে’র সদস্যেরা। তাঁরা জানিয়েছেন, সনাতনী প্রথায় লিফলেট বিলির পথে হাঁটবেন। তাঁদের অনেকেই ১৮-১৯ বছর ধরে যাতায়াত করছেন মেট্রোয়। সদস্যদের সিদ্ধান্ত, যাত্রা পথে সব বয়সের মানুষের হাতে লিফলেট তুলে দেওয়া হবে। লিফলেটে সকলের প্রতি সম্মান-শ্রদ্ধা জানানো এবং শালীনতা বজায় রেখে নিজের সম্মান বজায় রাখার বক্তব্য থাকবে।
নবীনদের বক্তব্য, ভালবাসাকে অসম্মান করে ‘নীতি-পুলিশ’দের দৌরাত্ম্য বরদাস্ত হবে না। উল্টো দিকে প্রবীণদের অভিযোগ, অশালীনতার বিরুদ্ধে আপত্তি জানানোয় তাঁদের শুনতে হয়েছে কটূক্তি। এই দ্বন্দ্বের সমাধানে এ দিনের কর্মসূচির অন্যতম মূল স্লোগান ছিল, ‘থাকুক ভালবাসা, সম্মান, শ্রদ্ধা ভক্তি, শালীনতা’। প্রবীণদের সংগঠনের এক সদস্যের কথায়, ‘‘আমরা ওই যুগলকে মারধরের পক্ষেও নই, আবার প্রকাশ্যে নিজেদের আবেগ-প্রকাশকেও সমর্থন করি না। ভালবাসা-আবেগ একান্তই ব্যক্তিগত। তা জনসমক্ষে সর্বজনীন করে তোলার মানে হয় না।’’
৮ মে-এর পরে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও ভাবছেন প্রবীণ সংগঠনের সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, প্রবীণ নাগরিকদের জন্য মেট্রোয় যে সুযোগসুবিধা থাকা প্রয়োজন, তার অনেকটাই পাওয়া যায় না। ফলে প্রবীণদের স্বাচ্ছন্দের দিকে বাড়তি নজর দেওয়ার দাবি জানানো হবে মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছে।