সূচের নকশার শিল্পকর্মের প্রদর্শনী

জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী বীণা দে-র কাঁথার কাজও এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছিল। কোনও কাঁথায় ফুটে উঠেছিল শহুরে জীবন, কোনওটিতে ধরা রয়েছে শিল্পীর নিজস্ব নকশা। কোনও কাঁথায় আবার তুলে রাখা আছে রামায়ণের কথা, কোনও কাঁথায় বোনা হয়েছে অন্য কোনও গল্পকথা। এমনকি কাঁথায় হাজির বাঘ, ভালুক, শিয়ালও।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৮ ০১:২১
Share:

প্রদর্শনীতে ছিল এমনই কাঁথার কাজ। নিজস্ব চিত্র

সুজনি, বেতায়ন, ওর। শব্দগুলো কেমন অচেনা লাগছে? কিন্তু এমনই হরেক নামের কাঁথার সম্ভার সাজিয়ে সম্প্রতি এ শহরে হয়ে গেল এক প্রদর্শনী।

Advertisement

বাংলার অন্যতম লোকশিল্প এই নকশিকাঁথার কাজের প্রদর্শনীতে এসে এমনই নাম না শোনা শিল্পকর্মের চাক্ষুষ করলেন মানুষ। পশ্চিমবঙ্গ কারুশিল্প পরিষদের উদ্যোগে বিড়লা অ্যাকাডেমিতে আয়োজন হয়েছিল এই প্রদর্শনীর। সে কাজে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক এবং এ শহরের কাঁথার কাজের সংগ্রাহকেরাও।

প্রদর্শনীতে সুজনি কাঁথা, বেতায়ন কাঁথা, ওর কাঁথা, লেপ কাঁথার পাশাপাশি স্থান পেয়েছিল ঊনিশ শতকের মাঝামাঝি থেকে একুশ শতক পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ের বেশ কিছু কাঁথার কাজ। জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী বীণা দে-র কাঁথার কাজও এই প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছিল। কোনও কাঁথায় ফুটে উঠেছিল শহুরে জীবন, কোনওটিতে ধরা রয়েছে শিল্পীর নিজস্ব নকশা। কোনও কাঁথায় আবার তুলে রাখা আছে রামায়ণের কথা, কোনও কাঁথায় বোনা হয়েছে অন্য কোনও গল্পকথা। এমনকি কাঁথায় হাজির বাঘ, ভালুক, শিয়ালও। কিছু কাঁথায় ধরা হয়েছে সাদামাটা কিন্তু রঙিন সুতোর নকশা। সে সব কাঁথা বিভিন্ন দামের। প্রদর্শনীতে রাখা বেশ কিছু কাঁথার দাম ধার্য করা হয়েছিল এক লক্ষ টাকার উপরে। কাঁথা ছাড়াও ছিল সূক্ষ্ম রঙিন সুতোয় নকশা করা বালিশের ঢাকনা, বসার আসন, লেপ প্রভৃতি।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গ কারুশিল্প পরিষদের অন্যতম পরামর্শদাতা ও সভাপতি (এমেরিটাস) রুবি পালচৌধুরী জানান, মানুষের মন থেকে হারিয়ে যেতে বসা কাঁথাশিল্পের পুনরুজ্জীবনেই এই প্রদর্শনীর সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, ‘‘আমরা চেয়েছিলাম এমন একটি প্রদর্শনী করতে, যাতে কলকাতার মানুষ এক ছাদের নীচে এসে কাঁথার কাজের কিছু অমূল্য নিদর্শন দেখার সুযোগ পান। দীর্ঘদিন ধরে যাঁরা নিয়মিত কাঁথার কাজ সংগ্রহ করে রাখেন, তাঁরা এই প্রদর্শনীতে এমন বহু জিনিস দিয়েছিলেন যা সচরাচর প্রদর্শনীতে দেখা যায় না। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে সকলের প্রচেষ্টায় সম্মান জানানো হল, গ্রামবাংলার সেই সব মহিলা শিল্পীদের, যাঁদের সূচে ধরা রয়েছে এই শিল্পকর্ম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন