স্কুলে এত ফি কেন, যুযুধান অভিভাবক ও পুলিশ

এ দিনও অভিভাবকেরা অবরোধ শুরু করলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দিতে শুরু করে। তখনই দু’পক্ষে শুরু হয় ধস্তাধস্তি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৫৫
Share:

প্রতিবাদ: প্ল্যাকার্ড হাতে এক খুদে। বৃহস্পতিবার, এ জে সি বসু রোডের একটি স্কুলের সামনে। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য

স্কুলের ফি বৃদ্ধি ঘিরে অভিভাবকদের অসন্তোষ এত দিন মূলত সীমাবদ্ধ ছিল বিক্ষোভ আর পথ অবরোধে। এ বার তা গড়াল পুলিশ-অভিভাবকদের ধস্তাধস্তিতে। এমনকী অভিযোগ, চলন্ত বাসে উঠে বাস থামাতে গেলেন অভিভাবকদের একাংশ। তাঁরা পাল্টা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ তাঁদের উপরে লাঠি চালায়। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে এজেসি বসু রোডের এক মিশনারি স্কুলে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ জোড়া গির্জার বিপরীতে ওই স্কুলের সামনে জড়ো হন একদল অভিভাবক। স্কুলটিতে ফি সংক্রান্ত সমস্যা চলছে জানুয়ারি থেকে। ফি কমানোর দাবিতে গত মঙ্গলবার পথ অবরোধও করেছিলেন অভিভাবকেরা। বুধবার বৈঠকের পরে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছিলেন, সমাধানসূত্র পাওয়া গিয়েছে। কিন্তু অভিভাবকদের বক্তব্য, কর্তৃপক্ষ মাত্র ৪০ টাকা ফি কমিয়েছেন। তা ১০০ টাকা কমাতে হবে।

এ দিনও অভিভাবকেরা অবরোধ শুরু করলে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দিতে শুরু করে। তখনই দু’পক্ষে শুরু হয় ধস্তাধস্তি। অভিযোগ, পুরুষ পুলিশকর্মীরা মহিলা অভিভাবকদের টেনে-হিঁচড়ে রাস্তার ধারে নিয়ে আসেন। এর পরে অন্য লেন দিয়ে পুলিশ বাস ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে চলন্ত বাসেই উঠে পড়েন কয়েক জন অভিভাবক। বাসে চড়-চাপড় পড়ায় থমকে যায় অন্য যানবাহন। অভিভাবকদের অভিযোগ, তখনই পুলিশ লাঠি চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এর জেরে দুই অভিভাবক অসুস্থ হয়ে হাসপাতালেও যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এক অভিভাবক সবনম বানো অভিযোগ করেন, ‘‘এক পুরুষ পুলিশকর্মী আমাকে টেনে-হিঁচড়ে লাঠি দিয়ে মেরেছেন।’’

Advertisement

তবে অভিভাবকদের যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের এক কর্তা জানান, ব্যস্ত সময়ে অবরোধ করতে যাওয়ায় সবাইকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। চলন্ত বাস থামিয়ে দেওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছিল। তাই বিক্ষুব্ধদের বাস থেকে নামানো হয়েছে। পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। একটি বাসের কাচ ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল অভিভাবকদের বিরুদ্ধে। তা-ও পুলিশ মানতে চায়নি।

স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিভাবকদের অভিযোগ, তাঁরা জানুয়ারি থেকে মাসিক ফি এক ধাক্কায় ৪০০-৫০০ টাকা বাড়িয়েছেন। অনেক দাবির পরে মাত্র ৪০ টাকা কমানো হয়েছে। এটা মানা সম্ভব নয়। যদিও কোনও কোনও অভিভাবক কর্তৃপক্ষের এই ফি বৃদ্ধিকে সমর্থন করেছেন। স্কুলের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাকাউন্ট্যান্ট মাইকেল গোমস বলেন, ‘‘বুধবারের বৈঠকে সব মেনে নেওয়া হলেও বৃহস্পতিবার ফের কেন বিক্ষোভ হল, বুঝতে পারছি না।’’ ফি বৃদ্ধির বিষয়ে তাঁর বক্তব্য, শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বেতন দিতে গেলে এই পরিমাণ ফি বাড়ানো ছাড়া উপায় নেই। শেষমেশ ১০৯ জন পড়ুয়ার ক্ষেত্রে ফি ৭৫ টাকা কমানো হয়েছে বলে স্কুল সূত্রের খবর।

অন্য দিকে, এ দিন ফি কমানোর দাবিতে দি অ্যাসেম্বলি অব গড চার্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখা করেন অভিভাবকেরা। এক অভিভাবক জানান, আজ, শুক্রবার কর্তৃপক্ষ তাঁদের সঙ্গে বৈঠকের আশ্বাস দিয়েছেন। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন