সরকারি স্কুলের প্রতি আস্থা ফেরাতে উদ্যোগ

ওই বিভাগের এক কর্তা জানান, জেলায় প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা ৩,৭৭৩। সেগুলি নিয়ে কয়েকটি সার্কেল তৈরি হয়েছে।

Advertisement

সুপ্রিয় তরফদার

শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৮ ০২:২৭
Share:

সামর্থ্য থাক বা না-থাক, প্রাথমিক স্তর থেকেই বহু অভিভাবক তাঁদের সন্তানদের ভর্তি করেন বেসরকারি স্কুলে। কারণ খুঁজতে গিয়ে স্কুলশিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা দেখছেন, একাধিক সরকারি এবং সরকার পোষিত স্কুল পড়ুয়ার অভাবে ধুঁকছে। বেশ কয়েকটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অভিভাবকদের একাংশও সরকার পোষিত বাংলা মাধ্যমের প্রাথমিক স্কুল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এমনকী রাজ্য সর্বশিক্ষা মিশনের প্রকাশ করা ২০১৬-’১৭ সালের রিপোর্টেও ইঙ্গিত মিলেছে, শহরতলি ও গ্রামে বেসরকারি স্কুল ভিত মজবুত করছে। এমন পরিস্থিতিতে সরকারি স্কুলের প্রতি অভিভাবকদের আস্থা ফেরাতে উদ্যোগী হল দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা স্কুল দফতর (প্রাথমিক)। আপাতত বেহালা, জোকা, গড়িয়া ও সোনারপুর অঞ্চল দিয়ে এই কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন দফতরের এক কর্তা।

Advertisement

বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, গোটা রাজ্যে প্রাথমিক স্তরে একই সঙ্গে বেসরকারি ও সরকারি স্কুলে সন্তানদের ভর্তি করেন বহু অভিভাবক। এ ক্ষেত্রে সরকারি স্কুলের সুযোগ-সুবিধা লাভ করা যেমন উদ্দেশ্য থাকে, তেমনই সন্তানদের যোগ্যতাও যাচাই করেন অভিভাবকেরা। কিন্তু দেখা গিয়েছে, অর্থের সংস্থান থাকলে পঞ্চম শ্রেণিতে ওঠার পরে অধিকাংশ পড়ুয়াই চলে যায় বেসরকারি স্কুলে। ফলে শহরতলির ক্ষেত্রে প্রাথমিক থেকে উচ্চ প্রাথমিকে পড়ুয়ার সংখ্যা অনেকটাই কমে যায়। এই প্রবণতা আটকাতে সম্প্রতি বৈঠক করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ। সেখানে বেশ কয়েক দফা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

ওই বিভাগের এক কর্তা জানান, জেলায় প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা ৩,৭৭৩। সেগুলি নিয়ে কয়েকটি সার্কেল তৈরি হয়েছে। সার্কেলগুলির দায়িত্বে থাকা স্কুল ইনস্পেক্টরদের (এসআই) কয়েকটি দল গঠন করতে নির্দেশ দিওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, যে সব পড়ুয়া একই সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি প্রাথমিক স্কুলে পড়ছে, সেই তালিকা তৈরি করে তাদের বাড়ি যেতে হবে। এসআই-রা ওই পড়ুয়াদের অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে সরকারি স্কুলের ভাল দিকগুলি তুলে ধরবেন। ওই স্কুলে পড়াশোনা করেও যে জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভ করা সম্ভব, সেই ভরসা দেবেন।

Advertisement

পাশাপাশি অভিভাবকদের অভিযোগ শুনে তার সমাধানের আশ্বাস এবং পঠনপাঠন ও পরিকাঠামোগত ত্রুটির তালিকা তৈরি করে পাঠানো হবে বিকাশ ভবনে। এক কথায়, ওই স্কুলগুলিকে মডেল হিসেবে তুলে ধরাই হবে কমিটির প্রধান কাজ।

যদিও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের এক কর্তার মত, গোটা প্রক্রিয়ার জন্য অনেক সময় প্রয়োজন। তাই চলতি বছর থেকে কাজ শুরু হলেও সুফল যে তৎক্ষণাৎ পাওয়া যাবে, সে কথা জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না।
তবে এই অভিযান অন্য জেলাতেও চালুর ভাবনা রয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতরের কর্তাদের।

আইসিএসই স্কুল সংগঠনের সভাপতি সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘পাঠ্যক্রম-সহ সব কিছুই আকর্ষণীয় এবং উপযোগী হওয়ায় অভিভাবকেরা তাঁদের সন্তানের জন্য বেসরকারি স্কুল বেছে নিচ্ছেন। গোটাটাই তাঁদের পছন্দ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন