মশা নিয়ে চর্চায় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে পতঙ্গবিদেরা

আলাদা আলাদা ভাবে আর নয়। মশা নিয়ে চর্চা করার জন্য এ বার একজোট হয়েছেন পতঙ্গবিদেরা। তৈরি হয়েছে হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ। সেই গ্রুপেই দিনরাত আলোচনা চলছে, ঠিক করা হচ্ছে ডেঙ্গি নিয়ে ‘রণকৌশল’।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:১৮
Share:

আলাদা আলাদা ভাবে আর নয়। মশা নিয়ে চর্চা করার জন্য এ বার একজোট হয়েছেন পতঙ্গবিদেরা। তৈরি হয়েছে হোয়াট্সঅ্যাপ গ্রুপ। সেই গ্রুপেই দিনরাত আলোচনা চলছে, ঠিক করা হচ্ছে ডেঙ্গি নিয়ে ‘রণকৌশল’।

Advertisement

পতঙ্গবিদদের একাংশের বক্তব্য, দিন দিন ডেঙ্গির চরিত্র যত জটিল হচ্ছে, তাতে একক ভাবে এ নিয়ে কিছু করা সম্ভব নয়। বিচ্ছিন্ন ভাবে মশা-গবেষকেরা ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়া নিয়ে কী করছেন, তা এক জায়গায় করার জন্য দীর্ঘ দিন ধরেই একটা চেষ্টা করা হচ্ছিল। এ ছাড়া মশা নিয়ে কোনও জার্নালে কারও গবেষণাপত্র প্রকাশ হলে তা নিয়েও সার্বিক ভাবে আলোচনার প্রয়োজন বোধ করছিলেন পতঙ্গবিদেরা। সেই লক্ষ্যেই তৈরি হয়েছে ‘মশামুক্ত বাংলা’র গ্রুপটি।

ওই গ্রুপের অ্যাডমিন পতঙ্গবিদ গৌতম চন্দ্র বলেন, ‘‘আমরা মশা সংক্রান্ত বিষয়ে গবেষকেরা পৃথক পৃথক ভাবে এত দিন কাজ করছিলাম। কিন্তু ডেঙ্গির চরিত্র গত কয়েক বছরে অনেকটাই বদলেছে। তাই সে সম্পর্কে জ্ঞান থাকার পাশাপাশি তথ্যের আদানপ্রদানও প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। তাই এই গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে।’’ সারা রাজ্যের মশা-গবেষকদের একাংশ ইতিমধ্যেই এই গ্রুপের সদস্য। বর্তমানে এই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ৩১জন। তা আরও বাড়ছে। ভবিষ্যতে সাধারণ মানুষকেও ওই গ্রুপের সদস্য করার কথা ভাবা হচ্ছে, যাতে তাঁরাও ডেঙ্গি প্রতিরোধে সক্রিয় ভাবে অংশ নিতে পারেন।

Advertisement

পতঙ্গবিদেরা জানাচ্ছেন, সাধারণত যখন ডেঙ্গি বা অন্য কোনও মশাবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ে, তখনই তা নিয়ে হইচই হয়।
কিন্তু সঠিক সময়ে সে ব্যাপারে পদক্ষেপ করা গেলে পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকে। তাই গ্রুপে আপাতত কোন মশার লার্ভা কেমন, কোথা থেকে তা পাওয়া যাচ্ছে, তার ছবি শেয়ার করা হচ্ছে। মশা-গবেষক অনুপম ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের চারপাশে যে সমস্ত মশার লার্ভা দেখা যায়, সেগুলির ছবি একত্রিত করা হচ্ছে। পরবর্তীকালে যখন সাধারণ মানুষের কাছে আমরা পৌঁছব, তখন সেই ছবিগুলো দেখিয়ে তাঁদের বোঝাতে পারব, কোন লার্ভা কিউলেক্স মশার, কোনটা এডিসের। সেই মতো সাধারণ মানুষ মশা নিধনে সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারবেন।’’

কোনও গবেষণাপত্র নিয়ে আলোচনার জন্যও গ্রুপটির আলাদা ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করছেন পতঙ্গবিদেরা। মশা-গবেষক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘কোনও জার্নালে হয়তো কারও গবেষণাপত্র প্রকাশিত হল। অনেক সময়েই সেটা নজরে আসে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এই গ্রুপে তা নিয়ে আলোচনার সুযোগ থাকবে। মশার বংশবিস্তার রোধে কেউ যদি বলেন বিশেষ ভেষজ গাছের ভূমিকা রয়েছে, তা হলে সেটা আলোচনার মাধ্যমেই জানা যাবে। তা পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহারও করা হবে।’’ অন্য এক মশা-গবেষক তথা দুর্গাপুর গভর্নমেন্ট কলেজের প্রাণীবিদ্যার শিক্ষক কুন্তল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই গ্রুপ থেকে যা কিছু উঠে আসবে, পরবর্তীকালে তা লিফলেট আকারে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। কারণ, ডেঙ্গি নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে পারলেই আমাদের কাজ অনেকটা সহজ হয়ে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন