‘বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস’-এ (বিআইএন) গড়িয়ার বাসিন্দা অমিত মণ্ডলের মৃত্যুর ঘটনায় প্রকাশ্যে উঠে এসেছিল সরকারি হাসপাতালে ‘মহার্ঘ’ পরিষেবার ছবিটা। সেই ঘটনায় তিনিও অত্যন্ত মর্মাহত বলেই বৃহস্পতিবার রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এসে জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘একজন মানুষের বাঁচতে হলে কত টাকা লাগে?’’
অমিতের মস্তিষ্কে জটিল অস্ত্রোপচারের জন্য বিভিন্ন সরঞ্জামের প্রয়োজন ছিল। যার বাজার মূল্য প্রায় সাত লক্ষ টাকা। কিন্তু সরকারি হাসপাতালে ওই সরঞ্জাম বিনামূল্যে পাওয়া গেলেও তার আবেদনের ফাইল উপরমহলে যায়নি। অভিযোগ, ওই হাসপাতালের স্টোরকিপার পলাশ দত্ত ফাইল নিয়ে যেতে তিন লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেছিলেন। আর তা দিতে না পারায় ফাইলও পৌঁছয়নি অধিকর্তার কাছে। শেষমেশ ২৮ এপ্রিল মৃত্যু হয় অমিতের। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন প্রশ্ন তোলেন, সরকার যেখানে ফ্রি’তে চিকিৎসা করছে সেখানে ফাইল ছাড়তে টাকা চাওয়া হবে কেন?
তবে শুধু বিআইএন-ই নয়। কলকাতার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে ভর্তি ও পরিষেবার জন্য ‘দাম’ দিতে হয় রোগীর পরিজনদের। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ৯৯ শতাংশ লোক ভাল কাজ করে, সেখানে এক শতাংশ লোকের দুর্ব্যবহার, টাকা কামানোর জন্য কখনও রোগী মারা যান। তার বদনাম প্রশাসন, স্বাস্থ্য দফতর, হাসপাতাল ও চিকিৎসকদের নিতে হয়। তিনি বলেন, ‘‘এ সব মানুষের থেকে দূরে থাকবেন।’’ পরিষেবা দেওয়ার নামে ‘ঘুষ’ নেওয়ার নিন্দা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘খাব তো ভাত-ডাল-মাছ, তার জন্য কত টাকা লাগে? কোটি কোটি টাকা কামিয়ে কী ডায়মন্ডের চচ্চড়ি খাবো, না সোনা-হীরের মাছের ঝাল, টক খাব? যা আছে যথেষ্ট আছে। এর থেকে বেশি প্রয়োজন নেই।’’
অমিতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই পলাশকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ দিন কলকাতার গোয়েন্দাপ্রধান প্রবীণ ত্রিপাঠি বলেন, ‘‘ধৃতকে জেরা করে হাসপাতালের ভিতরে, বাইরে একাধিক ব্যক্তির নাম উঠে এসেছে।’’