এই ভাবে জানলার কাঁচ ভেঙে বাইরে বার হতে চেষ্টা করেন যাত্রীরা।
ফের বিপত্তি মেট্রোয়।
চলন্ত মেট্রোয় আচমকাই বিস্ফোরণের শব্দ। পর পর দু’বার। সেই সঙ্গে বিদ্যুতের ঝলকানি। কিছু ক্ষণের জন্য থমকে গেল মেট্রো পরিষেবা। নববর্ষের রাতে কুঁদঘাট মেট্রো স্টেশনে আতঙ্ক ছড়াল যাত্রীদের মধ্যে। হুড়োহুড়ি করে বাইরে বার হতেও চেষ্টা করলেন যাত্রীরা। মেট্রোর জানলার কাঁচ ভেঙে স্টেশনে নামলেন বহু যাত্রী।
রবিবার রাতের এই ঘটনার জেরে টালিগঞ্জ এবং কবি সুভাষ স্টেশনের মাঝে বেশ কিছু ক্ষণ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ট্রেন চলাচল। মেট্রো কর্তৃপক্ষ অবশ্য বিস্ফোরণের বিষয় নিয়ে কোনও সঠিক তথ্য দেননি। মেট্রো সূত্রে খবর, বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে গড়িয়াগামী মেট্রোতে ওই বিপত্তি দেখা গিয়েছে।
মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রানী বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, এ দিন রাত সাড়ে ন’টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে। তাঁর কথায়, ‘‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আমরা সব সময় চেষ্টা করি যাত্রীদের ভাল মেট্রো পরিষেবা দিতে। যাত্রীদের অসুবিধার বিষয়টি মাথায় রাখতে। আশা করি, সকলে আমাদের সঙ্গে সহযোগিতা করবেন।’’ যাত্রীরা যে কাঁচ ভেঙেছেন সেটাও খুব অনভিপ্রেত বলে দাবি করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
আধুনিক থার্ড রেল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয়
মেট্রোর কাজে যানজটের আশঙ্কা ধর্মতলায়
রবিবার রাতে রকমই ছিল ভিড় দেখা গিয়েছে ট্রামগুলিতে।
গোটা ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। নববর্ষের রাতে অন্য রবিবারের তুলনায় মেট্রোয় ভিড় বেশিই ছিল। এক মহিলা যাত্রী জানিয়েছেন, টালিগঞ্জ থেকে মেট্রো ছাড়ার পরই সেটি অনেক ধীর গতিতে চলছিল। তিনি বলেন, ‘‘কুঁদঘাট স্টেশনে ঢোকার পরই শুনতে পাই, আগুন লেগে গিয়েছে। খুব অন্ধকার হয়ে গিয়েছিল। কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না। বাচ্চারাও কান্নাকাটি করছিল।’’ মেট্রো রেলের রক্ষণাবেক্ষণে যে অনেক গলদ রয়েছে সেই দাবিও তুলেছেন যাত্রীরা।
মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, পরিষেবা এখন স্বাভাবিক। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘটনাস্থলে রয়েছেন মেট্রোর উচ্চপদস্থ আধিকারিকেরা। বিকল মেট্রোটিকে সরানো যায়নি। তাই টালিগঞ্জ ও কবি সুভাষের মধ্যে ডাউন লাইনটি বন্ধ রেখে আপ লাইন দিয়ে ট্রেন চালানো হয়েছে।
দীর্ঘক্ষণ মেট্রো পরিষেবা বন্ধ থাকায় ক্ষোভ ছড়ায় যাত্রীদের মধ্যে। অভিযোগ, কুঁদঘাট স্টেশনে ভাঙচুর চালিয়েছেন কয়েক জন যাত্রী। পরিস্থিতি সামলাতে আধ ঘণ্টারও বেশি সময় কেটে যায়। যদিও যাত্রীদের একাংশের অভিযোগ, তার পরেও, রাত ১০টা ২০ নাগাদ ট্রেন ধরার জন্য চাঁদনি চক স্টেশনে নেমে বিপাকে পড়েন তাঁরা। এক যাত্রী জানান, স্টেশনের বোর্ডে ট্রেনের সময় দেখালেও ভিতরে ঢোকার পরে জানা গেল, দমদমগামী গাড়ি কখন আসবে তার ঠিক নেই! এই অবস্থায় প্ল্যাটফর্ম থেকে বেরনো নিয়ে মেট্রোকর্মীদের সঙ্গে যাত্রীদের বচসাও বাধে। ফলে, মেট্রোর যাত্রীদের ভিড় দেখা যায় বাস, ট্রামগুলিতে। ট্রামে করে বাদুড়ঝোলা হয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা যায় যাত্রীদের।