এ ভাবেই সার্ভিস রোড জুড়ে চলে প্রাতর্ভ্রমণ। নিজস্ব চিত্র
একাধিক বার প্রাতর্ভ্রমণে বেরোনোর পরিকল্পনা করেছেন রঘুনাথপুরের বছর পঞ্চান্নর নীলাঞ্জন সাহা। কিন্তু মাঠ বা পার্ক বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে। ফলে ইচ্ছে পূরণ আর হয়নি। এ দিকে রোগের চোখরাঙানিও বাড়ছিল। শেষমেশ হাঁটা শুরু করলেন বাড়ির দোরগোড়ায়। শুধু নীলাঞ্জনবাবুই নন, কৈখালি থেকে ভিআইপি রোড সংলগ্ন এলাকার মানুষেরও ভরসা সেটাই। বাড়ির সামনেই চলে দৌড় এবং শারীরিক কসরত।
ভিআইপি রোডের সার্ভিস রোড। বছর খানেক ধরে ধীরে ধীরে ভোরের এই রাস্তা কার্যত বদলে যাচ্ছে ‘জগিং ট্র্যাক’-এ। সকাল সাতটার পরে অবশ্য ওই সার্ভিস রোড গাড়ির দখলে চলে যায়। কয়েক বছর ধরেই ভিআইপি রোডে চলছে সৌন্দর্যায়ন। কৈখালি থেকে কেষ্টপুর পর্যন্ত দু’দিকের প্রায় পুরো অংশে হয়ে গিয়েছে সার্ভিস রোড। টাইলস বসিয়ে ফুটপাতও চওড়া হয়েছে। ভোরে ওই অঞ্চলই প্রাতর্ভ্রমণকারীদের দখলে চলে যায়।
তেঘরিয়ার বাসিন্দা অনুপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘গত কয়েক বছরে ভিআইপি রোডের আশেপাশে প্রচুর আবাসন হয়েছে। কিন্তু সর্বত্র হাঁটার জায়গা নেই। ফলে শারীরচর্চা করতে সমস্যা হত। ভোরে সার্ভিস রোড দিয়ে গাড়ি প্রায় চলেই না। একটু সাবধান হতে হয় এই যা, নইলে প্রাতর্ভ্রমণ আর ব্যায়ামের জন্য আদর্শ জায়গা এই রাস্তা।’’ ডন-বৈঠক দিতে দিতে এক প্রাতর্ভ্রমণকারী বলেন, ‘‘ঘেরাটোপে নয়, আকাশের নীচে ব্যায়ামের সুযোগ মিলছে। ভোরে দূষণও কম থাকে।’’
ওই সার্ভিস রোডে যে ভোরে একেবারেই গাড়ি চলে না তেমনটা নয়। সার্ভিস রোড বেশি ফাঁকা থাকে শনি ও রবিবার। সে দিন জগিং জমে ওঠে। প্রাতর্ভ্রমণকারীদের অভিযোগ, মাঝেমধ্যে সার্ভিস রোডে ছোট গাড়ি, ট্যাক্সি চলে আসে। জোড়ামন্দির এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘অনেক শহরে দেখেছি, ভোরে যাতে গাড়ি না আসে সে জন্য সার্ভিস রোডে ঢোকার মুখে গার্ড রেল দেয় পুলিশ। থাকে পুলিশের টহলদারিও। ফলে নিশ্চিন্তে হাঁটা বা ব্যায়াম করা যায়। এখানেও এমন হলে ভাল হয়। কারণ শহরে খোলা জায়গার বড় অভাব।’’
বিধাননগর কমিশনারেটের ডিসি হেড কোয়ার্টার্স অমিত জাভালগির বক্তব্য, ‘‘সার্ভিস রোড শারীরচর্চার জায়গা নয়। মাঠ বা পার্কে গিয়েই তা করা উচিত। তবে ভোরে ভিআইপি রোডের সার্ভিস রোডে কী ধরনের যানবাহন চলে তা দেখতে হবে। প্রয়োজনে ভোরে সেখানকার যান চলাচল আরও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’’