প্রায় চালকহীন দৌড়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো।
এই মেট্রোর কর্তৃপক্ষের দাবি, যাত্রীদের ওঠা-নামা ও ট্রেনের দরজা খোলা-বন্ধের উপরে নজরদারি ছাড়া চালকের আর কোনও কাজ থাকবে না। ট্রেনের যাতায়াত এবং গতি নিয়ন্ত্রিত হবে কন্ট্রোল রুমের নির্দেশে, কমিউনিকেশন বেসড ট্রেন কন্ট্রোল সিস্টেম (সিবিটিসি) পদ্ধতিতে। শুক্রবার রাতে বেঙ্গালুরু থেকে সড়কপথে এসে পৌঁছেছে ছয় কোচের ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রথম রেকটি। মোট ১৪টি রেকের এক-একটি তৈরিতে খরচ পড়েছে প্রায় ৬৫ কোটি টাকা। আজ, সোমবার কোচগুলিকে ক্রেনের সাহায্যে ডিপোর লাইনে নামানো হবে। এই কাজের জন্য প্রায় ২০০ টনের একটি অতিকায় ক্রেন নিয়ে আসা হয়েছে।
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সূত্রে খবর, ছয় কামরার ট্রেনে দু’টি ট্রেলার কোচ বা ইঞ্জিন কোচ। তবে সে দু’টিতেও যাত্রীরা উঠতে পারবেন। সুড়ঙ্গে দ্রুত ছোটার সময়ে বাতাসের বাধা কাটাতে বিশেষ আকৃতি দেওয়া হয়েছে রেকগুলিকে। নতুন এই মেট্রোর কামরাগুলি ২.৮৮ মিটার চওড়া। প্রতিটি ট্রেনে সর্বাধিক ২০৬৮ জন যাত্রী উঠতে পারবেন। একটি কামরায় প্রতি বর্গমিটারে দাঁড়াতে পারবেন ৮ জন। প্রত্যেক কামরায় ২৫ টন ক্ষমতাসম্পন্ন বাতানুকূল যন্ত্র থাকবে। এ ছাড়াও থাকবে সিসি ক্যামেরা এবং টক-ব্যাক ব্যবস্থা।
প্রয়োজন হলে চালক সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে কামরার ছবি দেখতে পাবেন। এ ছাড়াও আপৎকালীন পরিস্থিতিতে যাত্রীরা টক-ব্যাক ব্যবস্থায় সরাসরি কামরা থেকে চালকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন। মেট্রো সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে হুইলচেয়ার থেকে না নেমে সরাসরি ট্রেনে ওঠার ব্যবস্থা থাকবে। প্রতি কামরায় থাকবে হুইলচেয়ার রাখার পৃথক জায়গা। দরজার পরিসরও বর্তমান মেট্রোর চেয়ে অনেকটাই বেশি হবে। এক কামরা থেকে আর এক কামরায় যাওয়ার রাস্তা অর্থাৎ ভেস্টিবিউলের প্রস্থ হবে বর্তমান মেট্রোর প্রায় দ্বিগুণ। ফলে যাত্রীদের যাতায়াত অনেকটাই সহজ বলে দাবি ইস্ট-ওয়েস্ট কর্তৃপক্ষের।
জাপানের মেলকো নামে একটি সংস্থা রেকগুলির ‘প্রপালসন’ বা মোটর-সহ মূল কাঠামো তৈরি করেছে। রেকের বাকি কাঠামো তৈরি করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ভারত আর্থ মুভার্স লিমিটেড (বিইএমএল)। মেট্রোর দরজা এবং ব্রেকের প্রযুক্তি সরবরাহ করেছে জার্মানির নর-ব্রেমজে নামে একটি সংস্থা। মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ইন্দ্রাণী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোচের চাকায় কনিক্যাল স্প্রিং ছাড়াও এয়ার সাসপেনশন থাকবে। ফলে ঝাঁকুনি অনেক কম হবে।’’