দমদমের পাশেই দক্ষিণ দমদম পুরসভা। তবে ভিন্ন মতের শরিক উত্তর দমদম।
রোগী ‘বহিরাগত’ হলে বিনামূল্যে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক দেওয়ার প্রশ্নে ‘আমরা-ওরা’র নীতি নেওয়ার পক্ষপাতী দক্ষিণ দমদমের পুরপ্রধানও। সম্প্রতি পুর হাসপাতালগুলির চাহিদা মেনে জলাতঙ্কের প্রতিষেধক সরবরাহ করতে পারছে না জেলা স্বাস্থ্য দফতর। বাধ্য হয়ে বাজার থেকে অ্যান্টি র্যাবিজ কিনে পরিষেবা সচল রেখেছে পুর হাসপাতালগুলি। দমদম পুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি টাঙিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, অন্য পুর এলাকার বাসিন্দাদের জলাতঙ্কের প্রতিষেধক দেওয়া তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়।
তবে বিজ্ঞপ্তি না টাঙালেও দমদম পুরসভা যুক্তিসঙ্গত কাজ করেছে বলে দাবি দক্ষিণ দমদমের পুরপ্রধানের। তাঁর কথায়, ‘‘পুরসভার আয়ের সীমাবদ্ধতা আছে। তাই খরচের ক্ষেত্রেও সীমাবদ্ধতা থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক।’’ এমনকী ডেঙ্গি পরীক্ষার ক্ষেত্রেও একই নীতি এই পুরসভার। পুরপ্রধানের বক্তব্য, ‘‘আমাদের পুর এলাকায় ডেঙ্গি, জলাতঙ্ক এত বেশি হয় যে নিয়ন্ত্রণ না করলে সামলানো যাবে না।’’
দক্ষিণই হোক বা উত্তর, পুর হাসপাতালগুলিতে প্রতি মাসে অন্তত ৫০০ রোগী এ ধরনের টিকা নেওয়ার জন্য আসেন। এপ্রিলেই দু’দফায় ৬০০ প্যাকেট প্রতিষেধক কিনেছে দক্ষিণ দমদম। গত মাসে প্রতিষেধক এবং সিরাম কিনতে ১ লক্ষ ৭৮ হাজার টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন উত্তর দমদমের চেয়ারম্যান পারিষদ (স্বাস্থ্য) মহুয়া শীল।
স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, জরুরি পরিষেবায় এই বিভাজন কেন? দক্ষিণ দমদমের পুরপ্রধানের কথায়, ‘‘সকলের জন্য রাজ্য সরকারের হাসপাতাল আছে। বিনামূল্যে ডেঙ্গির সংক্রমণের পরীক্ষা বা জলাতঙ্কের প্রতিষেধকের ক্ষেত্রে পুর এলাকার বাসিন্দারাই আমাদের অগ্রাধিকার।’’
যদিও পত্রপাঠ সেই বক্তব্য খারিজ করে উত্তর দমদমের পুরপ্রধান কল্যাণ কর বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে আমরা-ওরা নীতি ঠিক নয়। যত ক্ষণ ক্ষমতা থাকবে, মুখ্যমন্ত্রীর নীতি মেনে পরিষেবা দেব।’’ জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘যে সংস্থা জলাতঙ্কের প্রতিষেধক সরবরাহ করে, তাদের কাছে চেয়েও তা পাচ্ছি না। আমরা না পেলে পুরসভাগুলিকে কী ভাবে দেব? তবে সীমিত ক্ষমতার মধ্যেও পুরসভাগুলির সকলকে পরিষেবা দেওয়া উচিত।’’