ভার কমিয়ে সুস্থ শৈশবের আবেদন

মঙ্গলবার স্কুলের ১২৫তম বর্ষের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ফুটিয়ে তুলল উত্তর কলকাতার আদি মহাকালী পাঠশালার ছাত্রীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২০
Share:

উৎসব: স্কুলের ১২৫তম বর্ষের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে খুদে পড়ুয়ারা। মঙ্গলবার, উত্তর কলকাতায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

সকালে ঘুম চোখে উঠে পড়তে বসা। তার পরেই স্কুল। সেখান থেকে ফিরে প্রাইভেট টিউশন। এরই ফাঁকে নাচগান বা ক্যারাটের ক্লাস।

Advertisement

এ সবের শেষে পড়ুয়াদের মাঠে খেলার অবসর কোথায়? শৈশব জীবনের এই ব্যস্ততার মাঝে আরও এক অন্তরায় স্কুল ব্যাগের ওজন। শিক্ষা ব্যবস্থার এই চিত্রই

মঙ্গলবার স্কুলের ১২৫তম বর্ষের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ফুটিয়ে তুলল উত্তর কলকাতার আদি মহাকালী পাঠশালার ছাত্রীরা।

Advertisement

এ দিনের অনুষ্ঠানে গান ও নাটকের মাধ্যমে ছাত্রীরা পড়ুয়াদের করুণ অবস্থা তুলে ধরল। এক ছাত্রী তার মায়ের কাছে গান গেয়ে কাতর আর্তি জানায়, ‘‘মা, তোমাদের আম কুড়নো, ঘুড়ি ওড়ানোর সেই শৈশবের দিন ফিরিয়ে দাও।’’ সকলে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে বললেও, এক জন আদর্শ হয়ে ওঠার পরামর্শ যে দুর্লভ সেটাও গান-নাচে প্রকাশ করে ছাত্রীরা। এ দিনের অনুষ্ঠানে ছিলেন জেলা স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা শ্যামকৃষ্ণ মণ্ডল। তিনি অবশ্য জানান, বর্তমানে সরকারি স্কুলের পাঠ্যক্রম বিজ্ঞানসম্মত। তাদের থেকে বেসরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের বরং ব্যাগের বোঝা বেশি। পাশাপাশি সরকার ও সরকার পোষিত স্কুলগুলির উন্নতিতে অভিভাবকদের এগিয়ে আসতে হবে বলেও জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে আইসিএসই স্কুল সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নবারুণ দে-র দাবি, ‘‘২০১৬ সাল থেকে নতুন ভাবে পাঠ্যক্রম করা হয়েছে। তাতে বইয়ের বোঝা আগের থেকে কমানো হয়েছে এমনকী, স্কুলে কতগুলি ক্লাস হবে সেটাও বিজ্ঞানসম্মত ভাবে স্থির হয়েছে। তাই এখনও পড়ুয়াদের ব্যাগের ওজন বেশি, এ কথা ঠিক নয়।’’ বাংলা মাধ্যমের স্কুলের অনেক উন্নতি হয়েছে। সরকার আরও উন্নতি করছে, এ দিনের অনুষ্ঠানে এসে এমনটাই দাবি করলেন রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা দফতরের মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে।

অথচ বাস্তব ছবিটা কিন্তু ভিন্ন। সর্বশিক্ষা মিশনের রিপোর্ট বলছে, কলকাতায় বহু বাংলা মাধ্যম স্কুল বন্ধ হওয়ার মুখে। গ্রামেও মাথা তুলছে বেসরকারি স্কুল। বাংলা মাধ্যমের পড়ুয়ারা কত রকমের সুবিধা পায়, এ দিন সেটা বারবার স্মরণ করিয়ে দেন শ্যামকৃষ্ণবাবু। শিক্ষা মহলের অবশ্য মত, ওই সব সুবিধার থেকে পঠনপাঠনের মানোন্নয়নে বেশি জোর দেওয়া প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত পাঠ্যক্রম কমিটির চেয়ারম্যান অভীক মজুমদার জানান, পড়ুয়াদের শৈশব কোনও ভাবেই যেন চলে না যায়, সে কারণে মনোবিদদের সঙ্গে আলোচনা করেই স্কুলশিক্ষা দফতর পাঠ্যক্রম ঠিক করেছে। সুতরাং বর্তমান পাঠ্যক্রম যথেষ্ট বিজ্ঞানসম্মত বলে তাঁর দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন