প্রতিবাদে এক হল শহরের পাঁচ মোড়

বিচার চাই! কাঠুয়া চায়, উন্নাও চায়, কুশমাণ্ডি চায়, রোহতক চায় বিচার— বলে ধর্মতলার ভিড়টা গলা ফাটালেন ‘মৈত্রী’-র সঙ্গে। সন্ধে নামার মুখে জড়ো হয়েছিলেন বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি।

Advertisement

অন্বেষা দত্ত

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৫২
Share:

জ্বলন্ত: দেশ জুড়ে ধর্ষণের প্রতিবাদে মোমবাতি-জমায়েত। বুধবার, ধর্মতলায়। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী

আমার নামটা পাল্টে যায়। #মাইনেমকিপসঅনচেঞ্জিং। যথেষ্ট হয়েছে! আর ধর্ষণ নয়। খুন নয়। হিংসা নয়। এই দাবিতেই প্রতিবাদ। বুধবার বিকেলে শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন বয়সের প্রতিবাদী একজোট হয়েছিলেন। শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়, ধর্মতলা, হাজরা মোড়, যাদবপুরের এইট বি বাসস্ট্যান্ড আর করুণাময়ী। মোমবাতি জ্বেলে মানববন্ধন তৈরি করে স্লোগান দিয়েছেন তাঁরা।

Advertisement

বিচার চাই! কাঠুয়া চায়, উন্নাও চায়, কুশমাণ্ডি চায়, রোহতক চায় বিচার— বলে ধর্মতলার ভিড়টা গলা ফাটালেন ‘মৈত্রী’-র সঙ্গে। সন্ধে নামার মুখে জড়ো হয়েছিলেন বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি। ব্যক্তিগত ভাবেও এসেছিলেন অনেকে। মেয়েদের পাশাপাশি ছিলেন পুরুষেরাও। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে এসেছিল এপিজে স্কুলের বেশ কয়েক জন ছাত্র। এসেছিল লোরেটোর মেয়েরা।

কিশোর বয়সের মুখ মোমবাতির আলোয় উজ্জ্বল। এই ভাবে প্রতিবাদ করে কিছু হবে? ‘‘আমরা ভয় পাওয়াতে চাই। কাঠুয়ার মেয়েটার সঙ্গে যারা এমন করল, তাদের মতো অনেকে শুনুক, বুঝুক।’’ তোমার কোনও বন্ধু বা অন্য কেউ বড় হয়ে মেয়েদের উপরে এমন নির্যাতন করলে কী বলবে তাদের? ‘‘বোঝাব। বোঝানো ছাড়া আর কী করা যায়?’’ পাশ থেকে খেই ধরিয়ে দেন সংগঠনের প্রধান বিদিশা ঘোষবিশ্বাস। ছেলেগুলো সমস্বরে বলে ওঠে, ‘‘সচেতন করাটাই বড় কাজ।’’

Advertisement

ছিল লোরেটো হাউসের এক ঝাঁক মুখ। হাতে প্ল্যাকার্ড। নবম-দশম শ্রেণির ছাত্রী। ক্যারাটে শেখে। তায়কোয়েন্দোও। স্কুলে এ সব শেখানো হচ্ছে জানিয়ে দেয় দ্রুত। শম্পা-শ্বেতাদের দল বলে ওঠে, পথে প্রতিবাদ করে সরকারের কাছে বার্তা পৌঁছতে চায় তারা। স্লোগানে গলা মিলিয়ে এই অনুভূতি তাদের।

আর একটি সংগঠনের সদস্য কাকলি দে। পুরুষদের সঙ্গে নিয়ে কাজ শুরু করেছেন তাঁরা— ‘ফোরাম টু এনগেজ মেন।’ এখানে সেই সব পুরুষ আসেন যাঁরা মনে করেন, তাঁরা লিঙ্গ সাম্যের পক্ষে। যাঁরা মনে করেন, এতে পুরুষদেরই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া দরকার। পুরুষমাত্রেই ধর্ষক নয়, এই বার্তাটা দিতে চান তাঁরা। বিদিশা মনে করালেন জরুরি কথাটা। যে কোনও হিংসা বা অপরাধ যখন ধর্মের আড়ালে বা রাজনীতির আশ্রয়ে ঘটে, তার চেয়ে খারাপ কিছু হয় না।

মোমবাতিগুলো একটু একটু করে শেষ। ভিড় পাতলা। এই মানুষগুলোর প্রতিবাদ কতটা কাঠুয়া-উন্নাওয়ের বিচারে সাহায্য করবে কেউ জানে না। তবে মানুষগুলো জানে, প্রতিবাদটাও জরুরি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন