এ ভাবেই দখল হয়ে রয়েছে ফুটপাত। সল্টলেকে। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
ফুটপাতে পথচারীদের চলাচল সুরক্ষিত করতে এবং রাস্তা গাড়ি চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করতে সল্টলেকের একটি বড় এলাকায় রাস্তা ও ফুটপাত থেকে ঝুপড়িবাসী, হকারদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু তাতে কি সমস্যার সমাধান হয়েছে?
বাস্তব ছবি বলছে ভিন্ন কথা। ফুটপাত জুড়ে রকমারি দখলদারি থেকে পরিকাঠামোগত সমস্যার জেরে এখনও সল্টলেকের বহু জায়গায় পথচারীরা রাস্তা দিয়েই চলাচল করছেন। ফলে এক দিকে পথচারী এবং গাড়ি চালকদের জন্য বিপজ্জনক অবস্থা তৈরি হচ্ছে। পাশাপাশি, তৈরি হচ্ছে দুর্ঘটনার নিত্য নতুন ঝুঁকি।
সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সের উল্টো দিকের রাস্তা ধরে পূর্ত ভবন আইল্যান্ডের দিকে যাচ্ছিলেন প্রবীণ অমর মুখোপাধ্যায়। সেখানে ফুটপাত সুদৃশ্য পেভার ব্লক দিয়ে সাজানো। তা সত্ত্বেও কেন রাস্তা ব্যবহার করছেন তিনি? অমরবাবুর অভিযোগ, ‘‘ফুটপাতের উচ্চতা বেশি। আবার ফুটপাত ধরে কিছুটা যাওয়ার পরেই বিভিন্ন বাড়ি থেকে গাড়ি বেরোনোর জন্য রাস্তা নিচু করা থাকে। ফলে বারবার ওঠানামা করতে পায়ের সমস্যা হয়।’’
শুধু ওঠানামাই নয়, ফুটপাতে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে বহু জায়গায়। পাশাপাশি বিভিন্ন দোকান, রেস্তোরাঁর সামনের ফুটপাতও বাণিজ্যিক কারণে ব্যবহৃত হয়। ফলে পথচারীরা সেই অংশ ব্যবহার করতে পারেন না। কোথাও আবার ফুটপাতে ইমারতি দ্রব্য প়ড়ে থাকে, কোথাও ফুটপাত জুড়ে থাকে দোকান। সেই দোকানের দু’পাশে ফুটপাতে চেয়ার টেবিল পাতা। আবার বেশ কিছু জায়গায় ফুটপাত কেটে অপটিক্যাল ফাইবার কেব্ল বসানো-সহ একাধিক কাজ হয়েছে। কিন্তু কাজ হওয়ার পরে তা মেরামত করা হয়নি।
বাসিন্দাদের প্রশ্ন, এক দিকে দত্তাবাদ থেকে শুরু করে অফিসপাড়া, করুণাময়ী হয়ে বেলেঘাটা-বাইপাস মোড় পর্যন্ত অংশে রাস্তার ধার এবং ফুটপাত থেকে দোকানদার, ঝুপড়িবাসীদের সরানো হল। ওই এলাকা ঢেলে সাজানো হল। অথচ সল্টলেকের বাকী অংশে অবস্থা যে কে সেই। সমস্যা সমাধানে পুরসভার কোনও তৎপরতাই চোখে পড়ে না। এমন বৈষম্য কেন?
পুরসভার দাবি ছিল, গোটা সল্টলেকই সাজানো হবে। ফুটপাত দখলমুক্ত করা হবে। কিন্তু সেই কাজ সল্টলেকের অন্যত্র কবে হবে? সদুত্তর মেলেনি। বিধাননগর পুরসভার ডেপুটি
মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায় জানান, একটি অংশে সমস্যা সমাধানে পুরসভা পদক্ষেপ করেছে। বাকি অংশে ফুটপাত নিয়ে যে সব সমস্যা রয়েছে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।
তবে মেয়র সব্যসাচী দত্ত বলেন, ‘‘দখলদারমুক্তি অবিলম্বে প্রয়োজন। পুরসভা ইতিমধ্যে নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় তা করে দেখিয়ে দিয়েছে। সকলে চাইলে বাকি জায়গাতেও পুরসভা কাজ করে দেখাবে।’’