প্রতীকী ছবি।
বই হারিয়ে ফেলার অপরাধে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে গাছের ডাল দিয়ে মারার অভিযোগ উঠল গৃহশিক্ষিকার বিরুদ্ধে। অভিযোগ, মেয়েটি শিক্ষিকার পায়ে ধরার পরেও ছাড় মেলেনি। আলাদা ঘরে নিয়ে গিয়ে তাকে ফের মারধর করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে, গড়িয়ার শ্রীনগর এলাকার ঘটনা। মারের চোটে অজ্ঞান হয়ে যায় জয়িতা সরকার নামে ওই পড়ুয়া। তার হাতে ও কোমরে আঘাত লাগে। বিষয়টি জানতে পেরে মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসেন বাবা বিকাশ সরকার। শুক্রবার জয়িতাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, অপর্ণা মণ্ডল নামে ওই শিক্ষিকার কাছে তিন বছর ধরে পড়ছে গড়িয়ার বিনোদ বিহারী স্কুলের ছাত্রী জয়িতা। বৃহস্পতিবার সে পড়তে গিয়ে বই হারানোর কথা জানায়। অভিযোগ, তখনই ওই শিক্ষিকা তাকে মারধর করেন। বিকাশবাবু বলেন, ‘‘ওই শিক্ষিকার সঙ্গে আমাদের এত দিনের যোগাযোগ। ওই দিন যখন মেয়েকে আনতে যাই, তখন তিনি বই হারানোর ব্যাপারে জানাননি। মেয়েও কিছু বলেনি। বাচ্চারা একটু-আধটু দুষ্টুমি করে থাকে। শাসনও করতে হয়। তা বলে এ ভাবে মারবে?’’ তিনি বলেন, ‘‘ওঁর শাস্তি হোক আমি চাই না। শুধু বলব, উনি যেন আর কাউকে এ ভাবে না মারেন।’’
পুলিশ জানায়, অপর্ণার বিরুদ্ধে সোনারপুর থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে তদন্তকারীরা জেনেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে আগেও অন্য পড়ুয়াদের করার অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে ঝামেলাও হয়েছে কয়েক বার। অভিযোগ অস্বীকার এ দিন অপর্ণা বলেন, ‘‘বেশি কিছু করিনি। সামান্য চড়-থাপ্পড় মেরেছিলাম।’’
এ প্রসঙ্গে যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এই ধরনের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাউন্সেলিং দরকার। ওঁর কোনও মানসিক সমস্যা থাকলেও থাকতে পারে। ওঁর একটি ভুল শিশুটির মনে শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি ভীতি তৈরি করে দিল। যা কাটাতে সময় লেগে যাবে।’’ বেথুন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী বলেন, ‘‘শিক্ষকদের ভূমিকা বাবা-মা ও বন্ধুর মতো। সেখানে শাসনের থেকে ভালবাসার স্থান বেশি। শাসনের প্রয়োজন হতে পারে, কিন্তু তার চেহারা এটা হতে পারে না। অত্যন্ত অমানবিক ঘটনা।’’