এলসিডি চালু না হওয়ায় ভোগান্তি

কবি সুভাষ থেকে নোয়াপাড়া পর্যন্ত ২৪টি মেট্রো স্টেশনের ২৩৩টি কাউন্টারে এলসিডি স্ক্রিন বসানো হয়। প্রস্তাব মতো স্ক্রিনের ৭৫ শতাংশ জুড়ে থাকবে বিজ্ঞাপন।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম

শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০১৮ ০২:৫২
Share:

নতুন: মেট্রোর এই এলসিডি স্ক্রিন নিয়েই অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র

টোকেনের মূল্য নিয়ে যাত্রীদের সংশয় ঘোচাতে মাসকয়েক আগে বুকিং কাউন্টারে এলসিডি স্ক্রিন বসানোর সিদ্ধান্ত নেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। গত ফেব্রুয়ারিতেই তা বসে যায়। অথচ তা চালু হতে পেরিয়ে গেল তিন মাস। এর জেরে অব্যাহত যাত্রী ভোগান্তি।

Advertisement

কবি সুভাষ থেকে নোয়াপাড়া পর্যন্ত ২৪টি মেট্রো স্টেশনের ২৩৩টি কাউন্টারে এলসিডি স্ক্রিন বসানো হয়। প্রস্তাব মতো স্ক্রিনের ৭৫ শতাংশ জুড়ে থাকবে বিজ্ঞাপন। নীচের বাকি অংশে টোকেনের মূল্য এবং গন্তব্য ফুটে উঠবে। মেট্রো কর্তৃপক্ষ মনে করেছিলেন, নতুন এই এলসিডি যন্ত্র বসানোর পরে টোকেন নিয়ে যাত্রী এবং কর্মীদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি কমবে। কিন্তু যন্ত্র পড়ে থাকায় সম্প্রতি ফের হেনস্থার শিকার হয়েছেন রানিকুঠির বাসিন্দা বছর পঞ্চাশের এক যাত্রী।

সম্প্রতি বেসরকারি সংস্থার ওই কর্মী দমদম যাবেন বলে যতীন দাস পার্ক মেট্রো স্টেশনে পৌঁছন। দুপুর ২টো ৪৫ মিনিট নাগাদ বুকিং কাউন্টারে কর্তব্যরত মহিলা কর্মীকে ৫০ টাকার নোট দিয়ে দমদম যাওয়ার জন্য টোকেন চান। অভিযোগ, ওই কর্মী তাঁকে চারটি ১০ টাকার নোট ফেরত দিয়ে বাকি টাকার টোকেন দেন। যাত্রীর দাবি, টোকেন নেওয়ার সময়ে মেট্রোর এলসিডি স্ক্রিনে কিছুই দেখতে পাননি তিনি। তা ছাড়া নিয়মিত মেট্রোযাত্রী না হওয়ায় ভাড়ার বিষয়টিও জানেন না তিনি| ফলে দমদমে নেমে সেই টোকেন স্বয়ংক্রিয় গেটে পাঞ্চ করতে গিয়েই আটকে পড়েন। ওই যাত্রীর অভিযোগ, উপযুক্ত অঙ্কের টোকেন ছাড়া মেট্রোয় সফর করার অভিযোগে তাঁকে আটক করে দমদম স্টেশনের এক সিনিয়র অফিসারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।

Advertisement

অভিযোগ, কর্তব্যরত ওই অফিসার বিষয়টি শুনতে চাননি। উপরন্তু জরিমানা না দিলে তাঁকে হাজতে পাঠানোর হুমকি দেন। প্রায় ঘণ্টা দেড়েক ওই যাত্রীকে আটকে চূড়ান্ত হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে জরিমানা দিয়ে ছাড়া পান ওই যাত্রী। পরে যতীন দাস পার্ক মেট্রো স্টেশনে ফিরে স্টেশন ম্যানেজার এবং কর্মীদের কাছে সমস্যার কথা জানান। নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে তাঁরা দুঃখ প্রকাশ করেন। এমনকি কর্মীরা নিজেরা টাকা তুলে তাঁকে জরিমানার টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাবও দেন। পরে এ নিয়ে মেট্রো ভবনে লিখিত অভিযোগ জানান ওই যাত্রী।

যাত্রীদের অভিযোগ, টোকেনে টাকার অঙ্ক উল্লেখ না থাকায় ঠিক মূল্যের টোকেন কেনার যাবতীয় দায় যাত্রীদের ঘাড়ে চাপছে। অনিয়মিত মেট্রো যাত্রীরাই বেশি নাজেহাল হন বলে অভিযোগ। যাত্রীদের সংশয় ঘোচাতে মেট্রোর কাউন্টারে এলসিডি স্ক্রিন বসানো হলেও তা সচল করতে এত দেরি কেন, প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও।

মেট্রোর এক কর্তা জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে স্ক্রিনগুলো বসিয়েছিল এক বেসরকারি সংস্থা। এ জন্য মেট্রো কর্তৃপক্ষের খরচও হয়নি। উপরন্তু বছর শেষে ওই সংস্থাটির মেট্রোকে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়ার কথা| সংস্থা প্রযুক্তিগত কাজ শেষ করে উঠতে না পারায় স্ক্রিন চালু করতে দেরি হচ্ছিল।

মেট্রোর এক কর্তা অবশ্য জানাচ্ছেন, ওই ঘটনার পরে গত সোমবার থেকে যতীন দাস পার্ক স্টেশনে কয়েকটি এলসি়ডি মনিটর চালু হয়েছে। এ ছাড়াও চলতি সপ্তাহেই বাকি স্টেশনগুলিতে মনিটর চালু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন