গল্ফ গার্ডেনের রাস্তায় উদ্ধার রক্তাক্ত-অচৈতন্য ছাত্রী, ধর্ষণ বলে সন্দেহ

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এম আর বাঙুর হাসপাতালে প্রায় দুপুর পর্যন্ত সংজ্ঞাহীন ছিল ওই কিশোরী। বৃহস্পতিবার স্কুলে বা টিউশনে না গিয়ে, সারা দিন সে কোথায় ছিল, তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৮ ১১:০৪
Share:

প্রতীকী চিত্র।

গোটা দেহে আঁচড়ের চিহ্ন।পোশাক এলোমেলো।শরীর রক্তাক্ত।

Advertisement

এমনই অবস্থায় অচৈতন্য এক কিশোরীকে উদ্ধার করা হল কলকাতার গল্ফ গার্ডেন থেকে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ ধর্ষণের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিতে পারছে না বলেই জানা গিয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ওই কিশোরী এখন এম আর বাঙুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

পুলিশ সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার থেকেই ওই কিশোরী নিখোঁজ ছিল। ওই দিন রাতেই অভিযোগ জানানো হয় যাদবপুর থানায়।শুক্রবার সকাল সাতটা নাগাদ স্থানীয় এক খবরের কাগজ বিক্রেতা মহিলা প্রথম ওই কিশোরীকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পান।গল্ফ গার্ডেনে গোলাম মহম্মদ শাহ রোডে দু’টি আবাসনের মাঝখানের সরু গলির মধ্যে ওই কিশোরীকে পড়ে থাকতে দেখেন তিনি।ওই কাগজ বিক্রেতার কাছ থেকে খবর পেয়ে স্থানীয়েরা যাদবপুর থানাকে বিষয়টি জানান।

Advertisement

ঘটনাস্থল থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে ওই কিশোরীর বাড়ি।একটি আবাসনে নিরাপত্তা রক্ষী হিসেবে কাজ করেন তার দাদু। ছোটবেলায় মা মারা যাওয়ার পর, দাদু-দিদার কাছেই বড় হয়েছে নবম শ্রেণির এই পড়ুয়া।কিশোরীর দাদুর দাবি, অন্য দিনের মতোই বৃহস্পতিবার স্কুলে গিয়েছিল টালিগঞ্জ গার্লস স্কুলের ওই ছাত্রী। তাঁর কথায়,“অন্যদিন স্কুল থেকে ফিরে, খাবার খেয়ে টিউশন নিতে যেত। বৃহস্পতিবার খাবার খেতে না আসায়, আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম যে স্কুল থেকে সোজা পড়তে চলে গিয়েছে।”কিন্তু সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত না ফেরায়, কিশোরীর খোঁজ করা শুরু করেন তার পরিবারের লোকজন। বেশি রাত পর্যন্ত কোথাও কোনও খোঁজ না পেয়ে শেষেযাদবপুর থানায় অভিযোগ জানান কিশোরীর দাদু।

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, বৃহস্পতিবার স্কুল বা টিউশন, কোথাও যায়নি এই কিশোরী। শুক্রবার সকালে স্কুলের পোশাকেও তাকে পাওয়া যায়নি। “আমার নাতনি সবসময় অতিরিক্ত একটা পোশাক রাখত স্কুলের ব্যাগে। আজ সকালে ওই পোশাকেই পাওয়া গিয়েছে ওকে,”—বলেন কিশোরীর দাদু। নীলিমা সরদার নামে এক প্রত্যক্ষদর্শীর দাবি, “ওর গোটা শরীরে রক্ত মাখামাখি ছিল। যেখানে পড়েছিল, সেখানেও রক্তের দাগ। মুখ, হাতে, নখের আঁচড় বা ব্লেডের মতো কোনও ধারালো কিছু দিয়ে চিরে দেওয়ার মতো ক্ষত। জামাকাপড়ও ছেঁড়া ছিল।”

চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এম আর বাঙুর হাসপাতালে প্রায় দুপুর পর্যন্ত সংজ্ঞাহীন ছিল ওই কিশোরী। বৃহস্পতিবার স্কুলে বা টিউশনে না গিয়ে, সারা দিন সে কোথায় ছিল, তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে পুলিশ। এখনও বয়ান দেওয়ার মতো অবস্থায় নেই সে, দাবি চিকিৎসকদের। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, দু’টি আবাসন থেকে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।এছাড়াও স্থানীয় সূত্রে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন যে, সম্প্রতি ওই কিশোরীকে এক যুবকের সঙ্গে দেখা গিয়েছে কয়েকবার। সেই যুবককেও চিহ্নিত করার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন