অগ্নিবাণ: পথে সঙ্গী হাতপাখা। মঙ্গলবার, ধর্মতলায়। ছবি: সুমন বল্লভ
মঙ্গলবার সকাল দশটা নাগাদ চেতলার বাসিন্দা, বছর আঠাশের স্বরূপ সেন নিউ আলিপুরে যাচ্ছিলেন। দুর্গাপুর ব্রিজ ধরে হেঁটে যাওয়ার সময়ে হঠাৎ জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানান, তিনি মারা গিয়েছেন। তাঁদের অনুমান, গরমে অসুস্থ হয়েই মৃত্যু হয়েছে স্বরূপের।
তাপমাত্রার পারদ চড়ছে। সঙ্গে বাড়ছে বিপদও। অনেকেই গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। তাই বাড়তি সতর্কতা জরুরি বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের বক্তব্য, যে কোনও ধরনের অ্যালার্জির সমস্যায় আক্রান্তদের বাড়তি সতর্ক হওয়া জরুরি। কারণ বাইরে গরম আর ঘরের ভিতরে ঠান্ডা— তাপমাত্রার এই ফারাকই ডেকে আনছে সর্দিকাশি-সহ নানা রোগভোগ। তাই তাঁদের বাড়তি সাবধান হতে পরামর্শ দিচ্ছেন মেডিসিনের চিকিৎসক অরুণাংশু তালুকদার। অ্যালার্জির পাশাপাশি কিডনির সমস্যায় ভুক্তভোগীদেরও রোদে না বেরোনোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। অরুণাংশুবাবু জানান, এখন গরমে খুব ঘাম হচ্ছে। অর্থাৎ, শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণ জল বেরিয়ে যাচ্ছে। ফলে যাঁরা কিডনির সমস্যায় ভুগছেন, তাঁদের শরীর থেকে অতিরিক্ত জল বেরিয়ে গেলে বড় বিপদ ঘটতে পারে। বয়স্কদের ক্ষেত্রেও বেশি রোদে সর্দিগর্মির ঝুঁকি থাকে।
শহরে গরমে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ছে বলে জানান বক্ষরোগের চিকিৎসক রাজা ধর। তিনি জানান, শীতের শুরুতে যেমন দিল্লিতে শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ে, গরমে কলকাতায় সেই সমস্যা দেখা দেয়।
অতিরিক্ত সময় রোদে খেলাধুলোর জেরে শিশুদের শরীর থেকে অতিরিক্ত জল বেরিয়ে যায়। যার জেরে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে তারাও। গরমে সুস্থ রাখতে শিশুর খাবার ও জলে বাড়তি নজরদারি প্রয়োজন বলেই মনে করছেন শিশুরোগ চিকিৎসক অপূর্ব ঘোষ।
যে কোনও বয়সেই সুস্থ থাকতে হাল্কা খাবার, বেশি পরিমাণ জল এবং ফল খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। তবে রাস্তার কাটা ফল কিংবা রঙিন সরবত কখনও নয়। সকাল দশটা থেকে দুপুর দুটো পর্যন্ত বাইরে না যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তাঁরা। যদি বাইরে বেরোতেও হয়,
তা হলে সানগ্লাস, ছাতা সঙ্গে রাখা উচিত। বেরোনোর আগে ও ফিরে এসে নুন-চিনির জল খাওয়ার পরামর্শও দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা।