পিৎজার আড়ালে বিদেশি গাঁজা, গ্রেফতার যুবক

কিন্তু এই পিৎজা যে আসলে ছোট ছোট বিদেশি গাঁজার পুরিয়া, তা শুধু জানতেন তাঁর দীর্ঘ দিনের পরিচিত ক্রেতারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ১৬:৩৫
Share:

পিঠে কালো ব্যাকপ্যাক। চোখে সানগ্লাস। পিৎজার ডেলিভারি বয় বলে নিজের পরিচয় দেন তিনি।

Advertisement

যেখানে দরকার, সেখানেই পৌঁছে যাবে পিৎজা!

কিন্তু এই পিৎজা যে আসলে ছোট ছোট বিদেশি গাঁজার পুরিয়া, তা শুধু জানতেন তাঁর দীর্ঘ দিনের পরিচিত ক্রেতারা। কী ধরনের পিৎজা লাগবে? বেলজিয়ামের পিৎজা, না ফ্রান্সের পিৎজা? যে দেশের পিৎজা লাগবে, তা-ই পৌঁছে যাবে ক্রেতার বাড়িতে বা বাড়ির কাছে যে কোনও জায়গায়।

Advertisement

গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে এই ভাবে পিৎজার আড়ালে গাঁজার কারবার চালিয়ে শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাতে ধরা পড়ে গেলেন বছর পঁচিশের যুবক অজয় চট্টোপাধ্যায়। কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে রমরমিয়ে গাঁজার ব্যবসা চালাচ্ছিলেন অজয়। পরিচিত ক্রেতারা তাঁকে ফোন বা হোয়াট্‌সঅ্যাপে সাঙ্কেতিক ভাষায় বলে দিতেন, কী ধরনের গাঁজা দরকার। কয়েক ঘণ্টার নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে যেত গাঁজা।

পুলিশের দাবি, জেরায় অজয় জানিয়েছেন, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাই তাঁর প্রধান ক্রেতা। তবে অজয় নিজে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে গাঁজা পৌঁছে দিতেন না। বেশির ভাগ সময়েই ঢাকুরিয়া স্টেশন বা যাদবপুর স্টেশনের কাছ থেকে ছাত্রছাত্রীরা এসে তাঁর কাছ থেকে গাঁজা নিয়ে যেতেন।

অভিযোগ, শহরের আনাচকানাচে গাঁজার বিক্রি বাড়ছে। অলিগলি থেকে শুরু করে স্টেশন চত্বর, বাসস্ট্যান্ড— বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে গাঁজা পৌঁছে দেওয়া ব্যবসায়ীদের সংখ্যা এখন প্রচুর। পুলিশ বারবার অভিযান চালালেও তা নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তবে অন্য বিক্রেতাদের থেকে অজয়ের গাঁজার চাহিদা অনেকটাই বেশি। অজয়ের গাঁজা মানেই মৌতাত তুঙ্গে। ফলে তাঁর চাহিদাও ছিল তুঙ্গে।

অজয়ের ব্যাকপ্যাকের ভিতরে গাঁজার পুরিয়া দেখে তদন্তকারীদের চোখ কপালে। বেশির ভাগ পুরিয়াই বিদেশি। বেলজিয়াম, ফ্রান্স, ইতালি— অজয়ের ব্যাকপ্যাকে আলাদা প্যাকেটে সব দেশের গাঁজাই থাকত। তদন্তকারীরা জানান, বিদেশের গাঁজা বলে তার দামও বেশ কিছুটা বেশি। ফলে তাঁর ক্রেতারাও মূলত আর্থিক ভাবে সম্পন্ন পরিবারের।

‘কোন দেশের পিৎজা লাগবে?’ পরিচিত ক্রেতাদের এইটুকুই জিজ্ঞেস করে নিতেন অজয়। সেই মতোই তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হত ক্রেতার পছন্দ করা দেশের গাঁজা। পুলিশ জানায়, অজয়ের কাছ থেকে বিভিন্ন দেশের প্রায় এক কেজি তিনশো গ্রামের গাঁজা উদ্ধার হয়েছে। এর আনুমানিক বাজারদর ৬০ হাজার টাকা। এক তদন্তকারী অফিসার জানান, একই পরিমাণ সাধারণ গাঁজার

দাম কেজি প্রতি ৬-৭ হাজার টাকা। কিন্তু বিদেশি এই গাঁজার মূল্য তার থেকে কয়েক গুণ বেশি। কোন পথে এই বিদেশের গাঁজা আসছে এবং এই ধরনের গাঁজা বিক্রির চক্র শহরে কাজ করছে কি না, তার তদন্ত চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন