চুরি ঠেকাতে লিফলেটই অস্ত্র পুলিশের

কী করবেন এবং কী করবেন না। গোটা এক পাতা সতর্কবাণী, যা মেনে চললে নাকি ঠেকানো যাবে চুরি। এই আশা নিয়েই অপরাধ রুখতে, মানুষকে সচেতন করতে লিফলেট ছড়াচ্ছে কলকাতা পুলিশ। চুরি ঠেকাতে এমন ঘটা করে প্রচার আগে হয়েছে বলে মনে করতে পারছেন না লালবাজারের গোয়েন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৬ ০১:৫১
Share:

সেই লিফলেট।

কী করবেন এবং কী করবেন না। গোটা এক পাতা সতর্কবাণী, যা মেনে চললে নাকি ঠেকানো যাবে চুরি। এই আশা নিয়েই অপরাধ রুখতে, মানুষকে সচেতন করতে লিফলেট ছড়াচ্ছে কলকাতা পুলিশ। চুরি ঠেকাতে এমন ঘটা করে প্রচার আগে হয়েছে বলে মনে করতে পারছেন না লালবাজারের গোয়েন্দারা।

Advertisement

আসলে কলকাতা পুরসভার সংযোজিত এলাকায় ল্যাপটপ ও মোবাইল চুরি নিয়ে একের পর এক মামলায় নাজেহাল পুলিশ। সংযোজিত এলাকায় থানা ২২টি। জুন-জুলাইয়ে ২৯টি ল্যাপটপ ও ৩৯টি মোবাইল চুরির অভিযোগ জমা পড়েছে বলে খবর। যে সংখ্যাটি বেশি বলেই মানছে পুলিশ। এ দিকে, একটি বানজারা দলের দু’জন ছাড়া কেউ এখনও তেমন কেউ ধরা পড়েনি, চুরি যাওয়া সামগ্রীও উদ্ধার হয়নি। অথচ নতুন অভিযোগ জমা পড়ার বিরাম নেই।

ন’টি পরামর্শ সম্বলিত এই লিফলেটের পুলিশের প্রথম সতর্কতার নিদান, সদর দরজা বন্ধ রাখা। লালবাজারের এক অফিসার বলছেন, ‘‘ল্যাপটপ ও মোবাইল চুরির প্রতিটি ঘটনায় বাড়ি বা ফ্ল্যাটের সদর দরজা খোলা ছিল। বাড়ির লোক তখন শৌচাগার বা রান্নাঘরে ছিলেন। চোর কাজ সেরেছে একেবারে নিঃশব্দে।’’

Advertisement

অচেনা কাউকে বাড়িতে ঢুকতে না দেওয়ার ও তাঁকে একা বসিয়ে উঠে না যাওয়ারও পরামর্শ দিচ্ছে পুলিশ। ল্যাপটপ-ফোন-ঘড়ি-ব্যাগ জানালার পাশে রাখতেও বারণ করা হয়েছে। বেশি টাকা ও গয়নাও বাড়িতে রাখতে বারণ করেছে পুলিশ। পরিচারক-পরিচারিকা সম্পর্কে সতর্কতার কথাও লিফলেটে বলা রয়েছে। দরজায় সেফ্‌টি চেন লাগানো, বেরোনোর আগে জানলা-দরজা বন্ধ করা এবং সম্ভব হলে সিসিটিভি বসানোর কথা বলা হয়েছে।

লালবাজার সূত্রে খবর, ২২টি থানার প্রতিটিতে প্রাথমিক ভাবে তিন হাজার করে লিফলেট বিলি হবে। বিভিন্ন মোড়, বাজার, বাসস্ট্যান্ড ও অন্য জনবহুল জায়গায় দেওয়ালে সাঁটানো হবে তা। সংবাদপত্র বিক্রেতাদেরও অনুরোধ করা হবে, যাতে তাঁরা লিফলেট ক্রেতাদের দেন। অন্য থানা এলাকাতেও সতর্কতা হিসেবে লিফলেট বিলি করা হবে।

গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সকালের দিকে চুরিগুলিতে মূলত জড়িত কিছু বানজারার দল। এদের একাংশ শিশুদের নিয়ে বাড়ি ঢুকে চুরি করছে, ধরা পড়ে গেলে দাবি করছে, তারা ভিক্ষার জন্য এসেছে। আবার রিজেন্ট পার্ক, যাদবপুরের মতো কয়েকটি এলাকায় রাতে স্থানীয় মাদকাসক্তেরাই চুরি করছে। তবে ঘুটিয়ারি শরিফ থেকে আসা ৮ থেকে ১৩ বছরের চুরিতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বালকদের নিয়েই সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন গোয়েন্দারা। যারা সকালের দিকে বাড়ি বা ফ্ল্যাটে ঢুকে হাতসাফাই করছে। এদের কাজ মাখনে ছুরি চালানোর মতো মসৃণ বলে মত পুলিশের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন