শিল্পীর ভাবনায়

ভগীরথদের সুখ-দুঃখের গল্প

কলকাতার পুজো এখন থিমের পুজো। যত বড় শিল্পী, তত জবরদস্ত থিম। এই সব থিমের মধ্যে উঠে আসে বিভিন্ন সামাজিক সমস্যার প্রতিচ্ছবি। শিল্পী কী ভাবছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জানেন না উদ্যোক্তারাও। শেষ মুহূর্তে চমক দেওয়ার জন্য শিল্পীরা থিম লুকিয়ে রাখেন আস্তিনে। এমনই কিছু থিম বেছে এনেছে আনন্দবাজার।পুজো নিয়ে চারদিকে এত হইচই, এই বুঝি ঠাকুরের খড়ের উপরে মাটি দেওয়া হল। এই বুঝি মায়ের ত্রিশূল ঢুকে গেল অসুরের বুকে। এই বুঝি মায়ের চোখ আঁকা হল।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৭ অগস্ট ২০১৭ ১০:০০
Share:

কথিত আছে, গঙ্গাকে মর্ত্যে এনেছিলেন ভগীরথ। সেই ভগীরথকেই এ বার দেখা যাবে উত্তর কলকাতার একটি মণ্ডপে। মা দুর্গাকে সে ডেকে আনছে পৃথিবীতে। তবে এই ভগীরথ কোনও পৌরাণিক চরিত্র নয়। আমার-আপনার ঘরের ছেলে।

Advertisement

পুজো নিয়ে চারদিকে এত হইচই, এই বুঝি ঠাকুরের খড়ের উপরে মাটি দেওয়া হল। এই বুঝি মায়ের ত্রিশূল ঢুকে গেল অসুরের বুকে। এই বুঝি মায়ের চোখ আঁকা হল। পাড়ার অন্য ছেলেরা হই হই করে ঠাকুরদালানে ভিড় জমায়। শুরু হয়ে যায় ওদের পুজো। কিন্তু, পুজোর ভগীরথেরা অন্যদের সঙ্গে সেই আনন্দ কখনওই ভাগ করে নিতে পারে না। ওদের জগৎটাই যে কাটে ঘরের চার দেওয়ালের মধ্যে।

ভগীরথদের কেউ পুজো দেখে টিভির পর্দায়, কেউ তা অন্যের মুখে শোনে। কেউ আবার বুঝতেই পারে না, পুজো জিনিসটা আসলে কী। কিন্তু বছরের ওই চারটে দিন নতুন জামা হাতে পেলে ওদের মুখের হাসিটা বাঁধিয়ে রাখতে হয়। কেউ ওদের দিকে বেশি নজর দিলে, ওদের ভালবাসলেই ওরা খুশি। এটুকুই ওদের চাহিদা।

Advertisement

উত্তর কলকতার ওই মণ্ডপটি শিল্পী রিন্টু দাস এ বার উৎসর্গ করেছেন ভগীরথদের। রিন্টুর প্রশ্ন, ‘‘সবাই পুজোয় আনন্দ করে, মণ্ডপে মণ্ডপে ঠাকুর দেখে বেড়ায়, কিন্তু শারীরিক এবং মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের কাছে পুজোর কোনও আনন্দই নেই। ভগীরথদের পুজো কেমন কাটে, আমি সেটাই সেটাই ফুটিয়ে তুলতে চাইছি।’’

শারীরিক প্রতিবন্ধী শিশু ভগীরথ মণ্ডপে শিল্পীর কথক ঠাকুর। প্রতিবন্ধী শিশুদের মনের ব্যথা ফুটে উঠবে ভগীরথের নানা অভিব্যক্তির মাধ্যমে। প্রতিবন্ধীদের হতাশা, হাসি, আনন্দ, দুঃখ সব জুড়ে থাকবে মণ্ডপের পরতে পরতে। ভগীরথ যেন বলতে চাইছে, ‘‘মা তুমি কার? তুমি কি এক বারের জন্যও আমাদের হতে পারো না?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন