স্ট্র্যান্ড রোডে রেলের কয়লাঘাট ভবনে এ ভাবেই জ্বলেছিল আগুন। —ফাইল চিত্র
লিফটে চেপে সরাসরি চোদ্দ তলায় পৌঁছয়নি পুলিশ ও দমকলের দল। তার আগে একাধিক বার বিভিন্ন তলায় থেমেছিলেন তাঁরা। কোথাও আগুন লেগেছে কি না, তাও খতিয়ে দেখেছিলেন ওই সাত জন। কয়লাঘাট অগ্নিকাণ্ডের তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে এ কথাই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, সে দিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ ও দমকলকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এ কথা জানা গিয়েছে। তাঁরা ওই সাত জনকে বিভিন্ন তলায় টর্চের আলো ফেলতে দেখেছিলেন বলে তদন্তকারীদের জানিয়েছেন।
পুলিশ সূত্রের খবর, চোদ্দো তলায় পৌঁছে লিফট খুলতেই ভিতরে থাকা অক্সিজেন আগুনে ইন্ধন জোগায়। সেটাই চরম সর্বনাশ ডেকে আনে ওই সাত জনের। এ কথাও জানা গিয়েছে, বহুতলের একাংশের বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বন্ধ করার পরেও লিফট চালু ছিল। তার কারণ জানতে চাইছে তদন্তকারী দল। পুলিশ জানতে চায়, সাত জন যখন ওই লিফটে উঠেছিলেন তখন সেখানে নীচে কারা উপস্থিত ছিলেন। কে তাঁদের লিফট ব্যবহার করতে বলেছিলেন? নাকি তাঁরা নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিয়ে লিফটে চেপেছিলেন।
তদন্তকারীদের মতে, ওটা জানা গেলেই বোঝা যাবে কেউ তাঁদের উপরে উঠতে প্রভাবিত করেছিল কিনা। ওই সাত জন যখন ওই লিফটে উঠেছিলেন তখন সেখানে কারা উপস্থিত ছিলেন, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, সার্ভার রুমেই প্রথম আগুন লেগেছিল। সেখান থেকে আগুন ছড়ায়। সার্ভার রুমে আগুন লাগলেও কেন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু ছিল তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আগুন নেভানোর চেষ্টা যে গোড়ায় রেলকর্মীরা করেছিলেন তা জানতে পেরেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, আগুন নেভাতে প্রথমে রেলের কর্মীরা অগ্নিনির্বাপণ রাসায়নিকের সিলিন্ডার ব্যবহার করেছিলেন।
তাতে সাময়িক ভাবে আগুন ‘নিভলেও’ পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়নি। তবে ওই কর্মী কারা তা বুধবার রাত পর্যন্ত জানতে পারেননি তদন্তকারীরা। একটি সূত্রের দাবি, অগ্নিনির্বাপণ রাসায়নিক ব্যবহার করলে তার প্রমাণ থাকে। সেটা দেখেই এই অনুমান করা হয়েছে। তবে ওই কর্মীদের সঙ্গে কথা বললে বিষয়টি পরিষ্কার হবে বলেই পুলিশ কর্তারা জানিয়েছেন। লালবাজারের একটি সূত্রের দাবি, এখনও অগ্নিকাণ্ডের পিছনে কোনও ষড়যন্ত্রের কথা জানা যায়নি। তাই এটিকে প্রাথমিক ভাবে দুর্ঘটনা বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
মঙ্গলবারের পর এ দিন ফের ঘটনাস্থলে যায় ফরেন্সিক দল। সঙ্গে যান কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান মুরলীধর শর্মা-সহ বিশেষ তদন্তকারী দলের সদস্যরা। গোয়েন্দাপ্রধান নিজে ফরেন্সিক দলের সঙ্গে ঘটনাস্থল খুঁটিয়ে দেখেন। সূত্রের খবর, কিছু ‘বিশেষ’ বিষয় নিয়ে ফরেন্সিক দলের সঙ্গে আলোচনাও করেছেন তিনি। সূত্রের খবর, কয়লাঘাটের ওই বাড়িটির ‘বিল্ডিং প্ল্যান’ চেয়ে রেলকে চিঠি দিয়েছে কলকাতা পুলিশ। অগ্নিসুরক্ষা ব্যবস্থা আগে থেকে দেখা হয়েছিল কি না এবং ঐ বহুতলের অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা কী ছিল তা জানতে চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে দমকলকে। অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ছিল না বলে ইতিমধ্যেই দমকল