হারানো স্থান কাল পাত্র
সময় ও জোয়ারভাটা কারও জন্য অপেক্ষা করে না, এ কথা বহু উচ্চারিত। কিন্তু কখনও কখনও সময়কে বাঁধা পড়তে হয় সাহিত্যিক বা শিল্পীর কাছে। বিশেষ করে আলোকচিত্র যে ভাবে সময়কে ধরে রাখে, আর কোনও মাধ্যমেই বোধ হয় তা সম্ভব নয়। তিন-চার দশক আগের কলকাতা ও মুম্বইয়ের অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান সমাজ আর গোয়ার ক্যাথলিক সমাজের প্রবীণ মানুষেরা এমনই এক বিলুপ্তপ্রায় প্রজন্মের প্রতিনিধি ছিলেন। অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের মধ্যে যেমন ব্রিটিশ রাজের শেষ চিহ্ন তেমনই গোয়ার ক্যাথলিকদের মধ্যেও হারিয়ে যাচ্ছিল পর্তুগিজ গোয়ার অবশেষ। কর্ণ কপূরের ১৯৮০ ও ’৯০-এর দশকে তোলা ছবির মধ্যে থেকে গেলেন তাঁরা। শশী কপূর আর জেনিফার কেন্ডল-এর ছেলে কর্ণ নিজেও মিশ্র সংস্কৃতির উত্তরাধিকারী— হয়তো সে জন্যই বিষটি টেনেছিল তাঁকে— কলকাতায় আশির দশকে তিনি খুঁজেছিলেন টালিগঞ্জ হোমের বৃদ্ধ অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান আবাসিকদের। খেয়াল রাখতে হবে, জেনিফার ১৯৮১-তে অভিনয় করছেন অপর্ণা সেন পরিচালিত ‘থার্টি সিক্স চৌরঙ্গি লেন’-এ, যা কিনা অ্যাংলো-ইন্ডিয়ানদের নিয়ে অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র। আর মুম্বই তো কর্ণের চেনা শহর। গোয়ার ছবিগুলি কর্ণ তুলেছিলেন নব্বই দশকে, বাগা-র সমুদ্রসৈকতে তাঁদের বাড়িতে পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাতে গিয়ে। এই সব ছবিতে ধরা রয়েছে এমন সব চরিত্র যাঁরা এক বিশেষ সময়ের প্রতিনিধি। কর্ণ এখন থাকেন লন্ডনে, আশির দশকেই তাঁর আলোকচিত্র তোলা শুরু। ছবিগুলি তসবির দেখাচ্ছে ভারত জুড়ে ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শর্নীতে, এখন যা কলকাতায়, হ্যারিংটন স্ট্রিট আর্টস সেন্টারে। চলবে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত, ১২-৭টা। নাথানিয়েল গ্যাসকেল এই প্রদর্শনীটি কিউরেট করেছেন। এই সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে একটি চমৎকার ক্যাটালগ, যেখানে উইলিয়াম ডালরিম্পল আর ফেলিসিটি কেন্ডল-এর দুটি রচনা বিষয়-প্রবেশক হিসেবে অনবদ্য। আলোকচিত্রীর স্বাক্ষরিত সীমিত সংস্করণের প্রিন্টও পাওয়া যাচ্ছে প্রদর্শনীতে। সঙ্গের ছবি ১৯৮০-তে টালিগঞ্জে তোলা।
পুনরুদ্ধার
• উনিশ শতকের কাঠামো, প্রণালী, শিক্ষক— সব মিলিয়ে তৎকালীন প্রথাবদ্ধ যে শিক্ষাব্যবস্থা, তার সঙ্গে আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞান ও ভাষার সমন্বয় যিনি করেছিলেন, বাংলার মাধ্যমে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা যিনি গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন, সেই মনস্বী ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের লেখালিখি নিয়ে তাঁরই নামাঙ্কিত বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হচ্ছে বিদ্যাসাগর রচনাসমগ্র। এর আগে তাঁর রচনাবলির যে ক’টি সংস্করণ বেরিয়েছে তার মধ্যে ১৯৩৮-’৩৯-এর বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ সংস্করণটিকেই প্রামাণিক ধরা হয়। ‘বর্তমান উদ্যোগের প্রাথমিক উদ্দেশ্য হল... বিদ্যাসাগরকৃত মূল বানান ও রচনার অবিকল পুনরুদ্ধার... যাতে ভবিষ্যতের পাঠক ও গবেষককুলের কাছে তাঁর রচনার মূল চেহারাটির অবিকৃত রূপটিই ধরা পড়ে।’ জানিয়েছেন উপাচার্য ও সম্পাদকমণ্ডলীর সভাপতি রঞ্জন চক্রবর্তী। এ প্রয়াসের মুখ্য উপদেষ্টা অরুণ নাগ। বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় ও ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল হল-এর যৌথ আয়োজনে পোর্ট্রেট গ্যালারিতে ১১ এপ্রিল দুপুর ২টোয় ‘প্রথম খণ্ড-প্রথম ভাগ’ প্রকাশ করবেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গের প্রতিকৃতি: শিল্পী অতুল বসু।
চলচ্চিত্র-শতবর্ষ
• এত কাল ধারণা ছিল ‘বিল্বমঙ্গল’ই (১৯১৯) প্রথম বাংলা ছবি। কিন্তু হালের তথ্য বলছে, প্রথম বাংলা কাহিনিচিত্র ‘সত্যবাদী রাজা হরিশচন্দ্র’, আর তা মুক্তি পায় ১৯১৭-র ২৪ মার্চ। সে ছবির টাইটেল-কার্ড ছিল বাংলায় লেখা। এই সব নতুন তথ্য জানিয়ে ঋতব্রত ভট্টাচার্য বললেন ‘গোটা ঘটনাটি এতই বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে গিয়েছে যে আমরা ভুলেই গিয়েছি ২০১৭ বাংলা কাহিনিচিত্রের শতবর্ষ।’ তাঁর ‘সিনেমাথেক, কলকাতা’ এবং নন্দন-এর যৌথ উদ্যোগে পালিত হবে বাংলা কাহিনিচিত্রের শতবর্ষ। ১৬ এপ্রিল নন্দনে বিকেল ৫টায়। বাংলা ছবির বিস্মৃতপ্রায় ঐতিহাসিক ঘটনা ও বহু দুষ্প্রাপ্য তথ্যসমন্বিত গ্রন্থ বাংলা চলচ্চিত্রের কথা ও কাহিনি (সিনেমাথেক ও দে পাবলিকেশনস) প্রকাশ পাবে সে সন্ধ্যায়। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করবেন মাধবী মুখোপাধ্যায়। তাঁকে নিয়ে ঋতব্রতর তথ্যচিত্র ‘নায়িকার সন্ধানে’ও দেখানো হবে। সঙ্গের ছবিতে ক্যামেরা-সহ নীতীন বসু।
সম্পর্ক
• সম্পর্কের কত রকমফের হয়, কত রকমের তল সম্পর্কের, রামধনুর মতো কত রং লেগে থাকে তাতে। কোনও সম্পর্ক টানাপড়েনেও শক্ত, পাকাপোক্ত, আবার কোনও সম্পর্ক সময়ের সঙ্গে বদলাতে থাকে। যে সম্পর্কের মধ্যে কোনও ওঠাপড়া নেই, তা কখনও মানুষের মনে ছাপ ফেলে না। সেই সম্পর্ক নিয়েই সৃষ্টি করেন শিল্পী-সাহিত্যিকেরা, যা মননে স্মৃতিধার্য করে রাখার মতো। আর সে সবের পাঠ-আবৃত্তি-অভিনয়ই শোনা যাবে বিপ্লব দাশগুপ্ত ও সুতপা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠে। ‘স্মরণীয় সম্পর্ক’: ১৬ এপ্রিল শিশির মঞ্চে সন্ধে ৭টায়। মহাভারত, রামায়ণ-এর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ, আবার ইউরিপিদেস, ইবসেন, সার্ত্রের সাহিত্য থেকে নির্বাচিত পাঠ।
বহুস্বর
• মনুষ্যত্বের অবমাননার বিরুদ্ধে বারে বারে ঝলসে উঠেছে তাঁর লেখনী— ইসমত চুঘতাই। নারীর বিপন্নতা, স্বপ্ন ও স্বপ্নভঙ্গের কথা উঠে এসেছে চুঘতাইয়ের লেখনীতে। চুঘতাইয়ের ১৯৪৬ সালের রচনা ‘চৌথী কা জোড়’ অবলম্বনে ‘চতুর্থীর জোড়’ (নাট্যরূপ পুষ্পল মুখোপাধ্যায়) মঞ্চস্থ হবে নবগঠিত নাট্যদল ‘বহুস্বর’ ও ‘নিভা আর্টস’-এর যৌথ প্রয়াসে। এই কাহিনির কেন্দ্রেও রয়েছেন এক প্রান্তিক নারী— আয়েষা বিবি। যিনি বিশ্বাস করতেন, ‘পুরুষ বিনে কোনও গতি নাই।’ জীবনের নানা ওঠাপড়ায় তিনিই আবার বলতে পারেন, ‘আমার মেয়েদের শাদির আর দরকার নেই, ওরা আমার কাছেই থাক।’ ‘বহুস্বর’-এর এই প্রথম প্রযোজনা কলকাতার তপন থিয়েটারে, ১৫ এপ্রিল, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। সঙ্গীত পরিচালনায় অভিজিৎ আচার্য, অঙ্গভাষা: অঞ্জন দেব। সংলাপ ও সংগীতের বুনটে বাংলার মঞ্চে চুঘতাইয়ের সৃষ্টির এ এক অভিনব প্রদর্শন। নির্দেশনায় তুলিকা দাস।
কালিকা-স্মরণ
• কালিকাপ্রসাদ বলতেন, ‘আমরা লোকগান গাই। নতুন গান লিখি না বা গাই না। আমাদের গানে পশ্চিমি বাদ্যযন্ত্র ব্যবহার হয় না। সেই জন্যই ‘দোহার’ গানের দল। ব্যান্ড নয়।’ আর সেই কারণেই ব্যতিক্রমী ‘দোহার’ পরিচিতি পেয়েছিল আবহমান বাংলার বাউল, কীর্তন, বিচ্ছেদী, ঝুমুর, ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, চটকার মতো ভুলতে বসা লোকগান নতুন করে তুলে এনে। এই বার অকালপ্রয়াত শিল্পী কালিকাপ্রসাদকে নিয়েই ১৩ এপ্রিল, বিকেল ৪টেয়, শিশির মঞ্চে ‘থাকো ভক্তের অন্তরে’ শীর্ষক এক মিলন সভার আয়োজন করেছে তপন রায়ের ভাবনায় গড়ে ওঠা তিন সংস্থা লোকায়ত, বাহিরানা, মাদল। সহযোগী সংস্থা দক্ষিণ কলকাতা সিলেট অ্যাসোসিয়েশনের সাংস্কৃতিক দল ‘শ্রীভূমি’।
মঙ্গল শোভাযাত্রা
• বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশের যশোরে প্রথম ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ শুরু হয় ১৯৮২-তে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের উদ্যোগে ১৯৮৯ থেকে বাংলাদেশ জুড়ে এই উদ্যোগ ছড়িয়ে পড়ে। উদ্দেশ্য বাংলার প্রবহমান লোকায়ত জীবনের সংস্কৃতি ও সম্প্রীতির সুরকে তুলে ধরা। কালক্রমে এটি জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়। এই ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’কে ইউনেস্কো এ বছর ‘ইনট্যানজিবল হেরিটেজ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। কলকাতার গত দুর্গাপূজায় এই বিষয়টি থিম হিসেবেও এসেছে, সঙ্গে তারই একটি সৃজন দে সরকারের তোলা ছবিতে। এ বারে এই মঙ্গল যাত্রার উদ্যোগ এ শহরে এই প্রথম। ১৫ এপ্রিল নববর্ষের প্রভাতে দক্ষিণ কলকাতার গাঙ্গুলিবাগান থেকে এই যাত্রা শুরু হয়ে পৌঁছবে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। থাকবেন নানা বিশিষ্টজন। রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। থাকছে বিভিন্ন লোকগানের দল এবং ছো নাচ, রণপা, রায়বেঁশে, মুখোশ ও কাঠিনাচ, লোকনাটক এবং লোকবাদ্য। পেঁচা, সুন্দরবনের বাঘ, শুক-সারি, বাঁকুড়ার ঘোড়া, মুখোশ, পটচিত্র এই সমস্ত কারুপণ্য এবং নানা লোক-মোটিফে বর্ণময় হয়ে উঠবে উৎসব। আগের রাতে শোভাযাত্রার পথ জুড়ে দেওয়া হবে আলপনা। আয়োজক বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন পরিষদ, সঙ্গে হাত বাড়িয়েছে কিছু লিটল ম্যাগাজিন, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ও বিদ্যালয়।
অঞ্চলকথা
• বাঙালির ইতিহাস চর্চার ধারাটিকে সযত্নে বহমান রেখেছে যে সব সংগঠন, সোসাইটি ফর আন্ডারস্ট্যান্ডিং কালচার অ্যান্ড হিস্টরি ইন ইন্ডিয়া বা ‘শুচি’ তাদের অন্যতম। ৮ এপ্রিল সাড়ে ৫টায় পশ্চিমবঙ্গ ইতিহাস সংসদ ও ভারতীয় সংগ্রহশালার সহায়তায় আশুতোষ জন্মশতবার্ষিকী হল-এ গৌতম চট্টোপাধ্যায় স্মারক বক্তৃতা: বিপ্লবী সংবাদপত্রে ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রের বিকল্প সন্ধান?, বক্তা শুক্লা সান্যাল। ১১-১৩ এপ্রিলের অধিবেশনে মূল আলোচ্য ‘বাংলার অঞ্চলকথা: সংস্কৃতি ও ইতিহাস’। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীন ভারতীয় ইতিহাস ও সংস্কৃতি এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া বিদ্যাচর্চা বিভাগের সঙ্গে শুচি-র উদ্যোগে। থাকবেন গৌতম ভদ্র, সব্যসাচী ভট্টাচার্য ও অরুণ বন্দ্যোপাধ্যায়। আলোচনায় বিশিষ্ট গবেষকরা। ১৩ এপ্রিল আচার্য দীনেশচন্দ্র সেন স্মারক আলোচনাচক্রের বিষয় ‘আঞ্চলিকতা ও কেন্দ্রিকতার টানাপড়েন: ব্যক্তিস্বরূপের সংকট’।
বই উৎসব
• পাবলিশার্স এবং বুকসেলার গিল্ডের উদ্যোগে প্রতি বছরের মতো এ বছরও কলকাতা পেতে চলেছে এক অনন্য বই উৎসব। কলকাতা পুরসভার সার্বিক সহায়তায় প্রায় সত্তরটির মতো বুক স্টল নিয়ে হাজির হবে ‘নববর্ষ বই উৎসব’, কলেজ স্কোয়ার বা বিদ্যাসাগর উদ্যানে। চলবে ১১-১৯ এপ্রিল, ১২-৮টা পর্যন্ত। ১১ এপ্রিল, বিকেল সাড়ে পাঁচটায় উদ্বোধনেও থাকছে চমক। আগের বছরগুলির মতো শোভাযাত্রা ও ঘোড়ার গাড়িতে বিশিষ্টদের ঘোরানর ব্যবস্থা তো থাকছেই, সঙ্গে ঝুমুর গান, নাচের দল, রণপা, মহিলা ঢাকিদের ঢাকের বাদ্যিতে মেতে উঠবে পুরো এলাকা। থাকবে শহরের বিভিন্ন স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা। অন্য দিকে, পয়লা বৈশাখ দীপ প্রকাশনের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে সংবর্ধনা দেওয়া হবে অভিনেত্রী চিত্রা সেনকে। ‘প্রথম পার্থ’ ও ‘অলকানন্দার পুত্রকন্যা’ থেকে নির্বাচিত অংশ অভিনয় করে শোনাবেন তিনি। সঙ্গে থাকছে স্মৃতিচারণাও। প্রয়াত শিল্পী কালিকাপ্রসাদের স্মরণ অনুষ্ঠানে গান শোনাবেন রাতুল চন্দরায় ও অভীক চট্টোপাধ্যায়। এ ছাড়া বাংলা নববর্ষের পরম্পরা ও বইপ্রকাশের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে বইপাড়ায় খোলা আকাশের নীচে প্রকাশিত হবে প্রকাশক সভার বই-বিষয়ক পত্রিকা ‘বার্তা’।
স্কুলের স্মৃতি
বালিগঞ্জ প্লেসে আমার মায়ের বাড়িতে সব সময়ই সঙ্গীতময় পরিবেশ এবং রবীন্দ্রনাথের গানই সেখানে প্রধান, তবুও আমার রবীন্দ্রসঙ্গীতের শুরু আমার স্কুল পাঠভবনে। স্কুলে সকালের প্রার্থনা সঙ্গীতে নিয়মিত আমরা রবীন্দ্রনাথের গান গাইতাম। আমার গান গাওয়ার পঞ্চাশ বছরে প্রথম সুযোগ এসেছিল রবীন্দ্রসঙ্গীতের অ্যালবাম বের করার।’ পাঠভবন স্কুলে বসে স্মৃতিতে ফিরে যাচ্ছিলেন অমিতকুমার, সেখানেই প্রকাশিত হল তাঁর দ্বিতীয় রবীন্দ্রগানের অ্যালবাম ‘অকারণে গান গাই’ (আশা অডিয়ো)। মনে রবে কি না রবে, যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক, গোধূলিগগনে মেঘে, প্রাণ ভরিয়ে তৃষা হরিয়ে, আজি ঝরঝর মুখর বাদর-দিনে, এত দিন যে বসে ছিলেম... ছ’টি গানের এই অ্যালবামটি প্রকাশ করলেন তাঁর পাঠভবনেরই সহপাঠী বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার সন্দীপ রায়। একই সঙ্গে সুপূর্ণা চৌধুরী বা দীপঙ্কর সরকারের মতো শিক্ষকের সান্নিধ্যে এই অ্যালবামটির প্রকাশ সেদিন নস্টালজিক করে তুলছিল অমিতকুমারকে। দ্বিতীয় বার রেকর্ড করার সুবাদে আরও যে সহজ হয়ে উঠেছে তাঁর রবীন্দ্রনাথের গান গাওয়া, সে কথাও বললেন, এ এক ‘ফ্যাসিনেটিং’ অভিজ্ঞতা।