কলকাতার কড়চা

তখন তিনি অপর্ণা দাশগুপ্ত। ‘তিনকন্যা’-র এক কন্যা, ‘সমাপ্তি’-র মৃন্ময়ী, সেই প্রথম ফিল্মে অভিনয়, তাও আবার সত্যজিতের ছবিতে। গল্প রবীন্দ্রনাথের, তাঁরই জন্মশতবর্ষে। নিমতিতা-য় শুটিং-এ লাইকা ক্যামেরায় তাঁর ছবিটি (বাঁ দিকে) তুলেছিলেন সত্যজিতেরই অচ্ছেদ্য সঙ্গী শিল্প-নির্দেশক বংশী চন্দ্রগুপ্ত।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৭ ০০:০০
Share:

‘তিনকন্যা’র এক কন্যা

Advertisement

ত খন তিনি অপর্ণা দাশগুপ্ত। ‘তিনকন্যা’-র এক কন্যা, ‘সমাপ্তি’-র মৃন্ময়ী, সেই প্রথম ফিল্মে অভিনয়, তাও আবার সত্যজিতের ছবিতে। গল্প রবীন্দ্রনাথের, তাঁরই জন্মশতবর্ষে। নিমতিতা-য় শুটিং-এ লাইকা ক্যামেরায় তাঁর ছবিটি (বাঁ দিকে) তুলেছিলেন সত্যজিতেরই অচ্ছেদ্য সঙ্গী শিল্প-নির্দেশক বংশী চন্দ্রগুপ্ত। ‘বংশীকাকা ছবি তুলতেন ওই ক্যামেরাটায়, তখনও পর্যন্ত প্রোডাকশন স্টিল তোলা হত না তো তাই ডকুমেন্টেশনের জন্যেই ছবি তুলে রাখতেন। সেখানেই রিনাদির এই ছবিটা পেলাম।’ বলছিলেন সন্দীপ রায়। ২ মে জন্মদিন উপলক্ষে ‘সত্যজিৎ রায় স্মারক বক্তৃতা’ দেবেন এ বার অপর্ণা সেনই, আইসিসিআর-এ ২৯ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ৬টায়, সত্যজিৎ রায় সোসাইটির উদ্যোগে। ষাটের দশকে অভিনয়ে আসা সেই কন্যাটি আশির দশকে তাঁর তৈরি প্রথম ছবি থেকেই তুখড় পরিচালক। সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত তাঁর নতুন ছবিটিও তিন কন্যার গল্প— ‘সোনাটা’, মহেশ এলকুঞ্চওয়ারের নাটক অবলম্বনে। দোলন সেন (শাবানা আজমি), সুভদ্রা পারেখ (লিলেৎ দুবে), আর অরুণা চতুর্বেদী (অপর্ণা নিজে), এই তিন মধ্যবয়সি নারীকে নিয়ে কাহিনি। ‘এদের জীবনের নানা ওঠাপড়া-সম্পর্কের ভিতর দিয়ে নারীসত্তার নানা খুঁটিনাটি আবিষ্কার করার চেষ্টা করেছি, একটা বড় পরিপ্রেক্ষিতে। বন্ধুত্বই এদের মধ্যে বাঁচবার সাংঘাতিক স্পৃহা, জীবনের সঙ্গে যুঝবার প্রবল শক্তি এনে দেয়।’ জানিয়েছেন অপর্ণা।

Advertisement

শিল্পীকে নিয়ে

• ১৯৭৪-এ আমির খানের দুর্ঘটনাজনিত মর্মান্তিক মৃত্যু আজও কলকাতার সংগীতরসিক মহলকে শোকাহত করে রেখেছে। তাঁর গায়ন ঘরানার পরম্পরাকে সযত্নে লালন করে চলেছেন পণ্ডিত তেজপাল সিংহ। তিনি ও তাঁর শিষ্য প্রেরণা অরোরা হিন্দিতে তাঁর যে জীবনকথা ও সংগীতব্যাখ্যান প্রকাশ করেন ২০০৫-এ, তাতে তাঁর বহুশ্রুত গানগুলির বন্দিশ ও স্বরলিপি ছিল বিশেষ আকর্ষণ। বছর কয়েক আগে থীমা, মীনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলা অনুবাদে সে বইটি প্রকাশ ক’রে কলকাতার মানুষের কাছে তাঁর স্মৃতি ও কীর্তি ফিরিয়ে আনে। সম্প্রতি মীনার অনুবাদেই থীমা প্রকাশ করল ইংরেজি সংস্করণ: উস্তাদ আমির খান: পায়োনিয়ার অব ইনদওর ঘরানা। ভারতীয় ভাষা পরিষদ-এর উদ্যোগে তারই সভাঘরে ২৮ এপ্রিল সন্ধে সাড়ে ৬টায় বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করবেন পণ্ডিত বিজয় কিচলু। আমির খান সম্পর্কে বলবেন মীনা, আর পণ্ডিত অমরনাথের শিষ্য চন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় গাইবেন আমির খানের গাওয়া সুপরিচিত রাগসংগীতগুলি।

কলকাতাপ্রেমী

• কলকাতায় পড়াশোনা করতে এসে ছাত্রাবস্থাতেই ভালবেসে ফেলেছিলেন কলকাতা মহানগরীকে। শিবপুর বি ই কলেজের কৃতী ছাত্র, ফোর্ড ফাউন্ডেশনের বৃত্তি নিয়ে আমেরিকায় নগরায়ণ ও উন্নয়ন বিষয়ে গবেষণা করেছেন। বেশ কিছু কাল খড়্গপুর আই আই টি-তে অধ্যাপনাও করেছেন। বিপ্লবী ও সমাজকর্মী সন্তোষ চট্টোপাধ্যায়ের পুত্র মণিদীপ চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৮ সালে, ঢাকা বিক্রমপুরে। ষাটের দশকে সিএমপিও সংস্থায় যুক্ত হন, পরে সিএমডিএ-তে পরিকল্পনা আধিকারিক হিসেবে মহানগরের উন্নয়ন পরিকল্পনার শরিক ছিলেন। আশির দশকে ‘সোসাইটি ফর প্রিজার্ভেশন, কলকাতা’-র গড়ে ওঠা থেকে আমৃত্যু যুক্ত ছিলেন। তাঁর পশ্চিমবঙ্গের পরিকল্পিত নগরায়ণ/ উৎস ও সন্ধান বইটি প্রশংসিত। ৫ এপ্রিল হঠাৎই ৭৯ বছর বয়সে চলে গেলেন।

সেই স্টুডিয়ো

• বড় বড় সাহেবি স্টুডিয়োর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কলেজ স্ট্রিটের অ্যালবার্ট হলে ১৯২০ সালে অনেক যত্নে গড়ে তুলেছিলেন সি গুহ স্টুডিয়ো। সি গুহ অর্থাৎ চারুচন্দ্র গুহ জন্মেছিলেন ১৮৮৪ সালের ২৪ এপ্রিল। তাঁর সেই স্টুডিয়োয় আজ আর ছবি তোলা হয় না, তবে তার ঐতিহ্য বহন করে চলেছে কফি হাউসের তিন তলায় ওই একই ঘরে অবস্থিত বই-চিত্র সভাঘর। সেখানেই তাঁর ১৩৪তম জন্মদিন উপলক্ষে ২৪ এপ্রিল সন্ধে ৬টায় বসছে স্মরণ সভা। দেখানো হবে সেই আমলের বেশ কিছু অমূল্য আলোকচিত্র। আলোচনা করবেন আলোকচিত্রী অরুণ গঙ্গোপাধ্যায়। উপস্থিত থাকবেন চারুচন্দ্র গুহর কনিষ্ঠ পুত্র শ্যামল গুহ।

সইমেলা

• নবনীতা দেব সেন প্রতিষ্ঠিত সই-এর বয়স হল সতেরো বছর। এ বারও তাঁদের বাৎসরিক অনুষ্ঠান সইমেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে শিশির মঞ্চে। শুরু হয়েছে রবিবার, আজও অনুষ্ঠান বিকেল ৫টা-৮টা। নানা রাজ্যের নানা ভাষার সইরা এই অনুষ্ঠানে আছেন। এ বারের বিষয়: ‘ভূমিকন্যা: আদিবাসী সংস্কৃতি ও লোকসংস্কৃতিতে মেয়েরা’। আজ ক্রৈরী মগচৌধুরী মগ ভাষায় লোকগীতি লোককাব্য শোনাবেন। ভায়োলাসোনাচি সাঙমা (গারো), প্রমোদিনী হাঁসদা (সাঁওতাল), বিভারানি (মৈথিলি) এবং শেফালি দেববর্মা (কক্‌বরক)— আদিবাসী গল্পকথা এবং প্রবাদপ্রবচন নিয়ে আলোচনা করবেন। এর পর সই-দের সাহিত্যে যে সব জনজাতীয় মেয়ের কথা উঠে এসেছে, তারই কিছু অংশ নিয়ে তৈরি হয়েছে কোলাজ— ভূমিকন্যা। সঙ্গে জনজাতীয় গান ও কবিতা। গুজরাতের কল্পনা গাগডেকর (ছাড়া সম্প্রদায়) একক অভিনয়ের মাধ্যমে সারা ভারতের অ-নথিভুক্ত সম্প্রদায়ের মেয়েদের কথা তুলে ধরবেন। সমাপ্তি মাদলের লোকগীতি দিয়ে।

উত্তরাধিকার

• সত্তরোর্ধ্ব শিল্পী শিউলি বসুর বাবা অশেষ বন্দ্যোপাধ্যায়কে রবীন্দ্রনাথ মাত্র ১৭ বছর বয়সে শান্তিনিকেতনে এনেছিলেন সংগীতশিক্ষক হিসেবে। তাঁরই বাজানো এস্রাজের স্বর ও সুর শুনে রবীন্দ্রনাথ এই যন্ত্রটিকে ‘কমপালসরি’ করেন সংগীত ভবনে। বিষ্ণুপুর ঘরানার শিল্পী অশেষ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর উত্তরাধিকার দিয়ে যান কন্যা শিউলিকে। এ বার এই শিল্পীকে নিয়েই কস্তুরী সেনগুপ্ত ও সবুজ মুখোপাধ্যায় তৈরি করেছেন তথ্যচিত্র— ‘সারাবেলা শিউলিবনে— আ ডে উইথ শিউলি বসু’। ২৯ এপ্রিল সন্ধে ৬টায় রাশিয়ান কালচারাল সেন্টার ইন কলকাতা ও আইজেনস্টাইন সিনে ক্লাবের উদ্যোগে গোর্কি সদনে দেখানো হবে তথ্যচিত্রটি।

চৈতন্য-পার্ষদ

• কৃষ্ণদাস কবিরাজ চৈতন্যচরিতামৃত গ্রন্থের আদিলীলায় বলেছেন, ‘...গদাধর পণ্ডিতাদি প্রভুর নিজশক্তি। তাঁর সবার চরণে মোর সহস্র প্রণতি।’ নবদ্বীপে শ্রীগৌরাঙ্গ মহাপ্রভু কৃষ্ণভাবাবেশে যখন ‘আছাড়ি-পিছাড়ি’ খেতেন তখন এই গদাধরই তাঁকে সামলাতেন। এ বার শ্রীগদাধরের জন্মতিথি উপলক্ষে ২৫ এপ্রিল দুপুর আড়াইটেয় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে তাঁকে নিয়ে আলোচনা করবেন তাঁরই পরিবারের সদস্য রাধাকৃষ্ণ গোস্বামী। কীর্তনে ভূমিকা গোস্বামী। থাকবেন বৈষ্ণবশাস্ত্র-বিশেষজ্ঞ কাননবিহারী গোস্বামী, সত্যবতী গিরি প্রমুখ বিভাগীয় প্রাক্তনীসহ বর্তমান ছাত্রছাত্রী ও অধ্যাপকগণ।

বেহালার কথা

• ডিরোজিয়ো-শিষ্য হরচন্দ্র ঘোষ বেহালা অঞ্চলে একটি স্কুল স্থাপন করেছিলেন। ঘোষেদের কাছারিবাড়ি ছিল সরশুনা অঞ্চলে। শেষ পর্যন্ত সেই স্কুলের কী হয়েছিল তা জানা যায় না। তবে অনতি-অতীতে সরশুনা অঞ্চলে দু-দুটি কলেজ স্থাপিত হয়েছে জন-উদ্যোগে। একটি ডিগ্রি কলেজ ও একটি ল’ কলেজ। এ জন্য জন-উদ্যোগকে যিনি সুচারু ভাবে সংগঠিত করেছিলেন তিনি এলাকায় বাম-রাজনীতিক হিসাবেই খ্যাত, নির্মল মুখোপাধ্যায়। অন্তত চার বারের কাউন্সিলর, দু’বার বেহালা-পশ্চিম থেকে বিধায়কও হয়েছেন। কলকাতা পুরসভায় নানা দায়িত্ব পালন করেছেন। অশীতিপর এই প্রবীণ রাজনীতিক তাঁর পঞ্চান্ন বছরের রাজনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতা ও বেহালার উন্নয়নের ইতিহাস নিয়ে একটি স্মৃতিনির্ভর আত্মজীবনী লিখেছেন: বাম আন্দোলনের আলোয় বেহালা (সম্পা: শক্তিসাধন মুখোপাধ্যায়)। ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যা ৬টায় বেহালা শরৎ সদনে বইটি প্রকাশ করবেন পবিত্র সরকার।

উত্তরসূরি

• এম এন রায়ের আদর্শে দীক্ষিত নিউ থিংকার্স-এর এক আড্ডায় কল্যাণী সেনের (কার্লেকর) প্রেরণায় ‘উত্তরসূরি’ পত্রিকার জন্ম ১৩৫৪ বঙ্গাব্দে। একটি সংখ্যা প্রকাশের পর বন্ধ, পাঁচ বছর পর প্রকাশিত হতে থাকে শিবনারায়ণ রায় আর নারায়ণ চৌধুরীর সম্পাদনায়, দুই পর্বের সেতুবন্ধে ছিলেন অরুণ ভট্টাচার্য। লেখক-কবিদের মধ্যে ছিলেন জীবনানন্দ দাশ থেকে শঙ্খ ঘোষ। তৃতীয় পর্বে দায়িত্ব নেন অরুণ ভট্টাচার্য, তাঁর অকাল মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ১১৮টি সংখ্যা (১৩৬১-’৯১ বঙ্গাব্দ) প্রকাশিত হয় পত্রিকাটির। প্রকাশিত প্রবন্ধাদি থেকে ৬৪টি নির্বাচন করে সূত্রধর প্রকাশ করছে উত্তরসূরি/ নির্বাচিত প্রবন্ধ সংগ্রহ। বাংলা আকাদেমি সভাগৃহে ২৭ এপ্রিল সন্ধে ৬টায় প্রকাশ অনুষ্ঠানে থাকবেন অমিয় দেব অভিরূপ সরকার ও এ-বইয়ের সম্পাদক অলোক রায়। অরুণ ভট্টাচার্য স্মারক বক্তৃতা দেবেন স্বপন চক্রবর্তী, আর স্মারক পুরস্কার পাবে সুবল সামন্ত সম্পাদিত ‘এবং মুশায়েরা’। আয়োজনে সূত্রধর ও অরুণ ভট্টাচার্য স্মরণ সমিতি।

অশ্রুত প্রতুল

• তাঁর গান শুধু দুই বাংলার নয়, সারা বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে বাঙালি জাতিসত্তার প্রতীক। যে গান দুটি দিয়ে ‘ভাষা দিবস’ উদযাপিত হয় তার একটি রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা’, আর দ্বিতীয়টি প্রতুলের ‘আমি বাংলায় গান গাই’। প্রতুল মুখোপাধ্যায় গণসংগীত থেকে যাত্রা শুরু করে আধুনিক বাংলা গানের ধারায় কিংবদন্তি। সম্প্রতি তিনি বিন্দুবৎ-এর সহযোগিতায় তাঁর নির্বাচিত ১৭টি অপ্রকাশিত গান রেকর্ড করলেন। এ বার তা শোনা যাচ্ছে ইউটিউব এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ায়, জানালেন বিন্দুবৎ-এর তরফে শিল্পী বিপুলজিৎ বসু।

ভারতবর্ষ

• সোশ্যাল মিডিয়ায় কবিতা লিখে কি কবিখ্যাতি সম্ভব? ভার্চুয়াল মাধ্যমে একটি অণুগল্প যত ‘লাইক’ পায় তা কি পাঠকের সত্যিকারের পছন্দের নির্ণায়ক? আবার পত্রপত্রিকায় লিখে যিনি ‘প্রতিষ্ঠিত’, তিনি কি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখলে ‘কৌলীন্য’ হারান? এই সব কূটপ্রশ্ন হামেশাই শোনা যায় অথচ এই মাধ্যমকে অস্বীকার করতে পারেন না কেউই। এ বার ‘অন্তর্জালের সাহিত্য: বিস্তারে, স্বীকারে’ বিষয়ে বলবেন যশোধরা রায়চৌধুরী; উপলক্ষ রাজা ভট্টাচার্যের ভারতবর্ষ (বুক ফার্ম) প্রকাশ অনুষ্ঠান (২৯ এপ্রিল, জীবনানন্দ সভাঘরে, সন্ধে ৬টায়)। ফেসবুকে ফি–সপ্তাহে রাজার ‘ভারতবর্ষ’–সিরিজের লেখাগুলি যথেষ্ট আলোড়ন ফেলেছিল, তারই নির্বাচিত সংকলন। বইটির ছবিগুলি তুলেছেন সহেলী দাস। ‘অহর্নিশ’ পত্রিকা আয়োজিত এই সন্ধ্যার প্রথম পর্বে আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রকাশ পাবে ‘বিষয় কার্টুন যতীন সেন সংখ্যা’ (বুক ফার্ম)। আলোচনায় বিশ্বদেব গঙ্গোপাধ্যায়।

স্মরণ

• বসন্তের বজ্রনির্ঘোষ। চারু মজুমদারের সান্নিধ্যে আসার পরে ব্যাঙ্কের চাকরি ছেড়ে সিপিআই (এমএল)-এর সর্বক্ষণের কর্মী। পরে সংগঠনের ভার নিয়ে নারায়ণ সান্যাল ওরফে বিজয়দা চলে গেলেন বিহারে। গ্রেফতার ১৯৭২ সালে। হাজারিবাগ জেল থেকে মুক্তি ’৭৭-এ। আবার ঝাঁপিয়ে পড়া অতিবাম রাজনীতিতে। ধীরে ধীরে সিপিআই-এর (মাওবাদী) পলিটব্যুরো সদস্য। ২০০৬-এ রায়পুর থেকে ফের গ্রেফতার হন তিনি। জামিনে মুক্তি ২০১৪-য়। পরে ধরা পড়ল দুরারোগ্য ক্যান্সার। অবশেষে হার মানলেন ১৭ এপ্রিল, ৮২ বছর বয়সে, কলকাতায়। স্মরণসভা ২৭ এপ্রিল দুপুর ১২টা থেকে, ভারতসভা হল-এ। থাকার কথা ভারা ভারা রাও, দর্শন পাল, ভারনন গনজালভেস, অর্জুন প্রসাদ সিংহ প্রমুখের।

অন্য রকম

ছেলেবেলা থেকেই পড়াশোনায় তুখড়। তাঁর হাতে যখন থাকে রঙ-তুলি-পেনসিল, তখন পোশাকপরিচ্ছদ হয়ে ওঠে জীবন্ত ক্যানভাস। সাউথ পয়েন্টের প্রাক্তনী। আইআইটি-তে পড়ার প্রস্তুতি নিতে নিতেই বিলিতি ‘উইগান অ্যান্ড লে’ কলেজের কলকাতা শাখায় ফ্যাশন ডিজাইনিং নিয়ে পড়াশোনা শুরু করেন অভিষেক দত্ত। বাড়ির কেউই এ পথের পথিক নন বটে, তবে বাবা সুজিৎকুমার ও মা অলকা গভর্নমেন্ট আর্ট কলেজ থেকে পাশ করা শিল্পী। ইতিমধ্যে অভিষেকের বানানো পোশাক জাতীয় ও আন্তর্জাতিক খ্যাতি পেয়েছে। এ বার তিনিই প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে বন্দিদের দিয়ে বানাচ্ছেন ডিজাইনার পোশাক। ছত্রিশ বছরের এই ফ্যাশন ডিজাইনার বললেন, ‘প্রাথমিক ভাবে ৪১ জন পুরুষ বন্দির প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। প্রথম পর্বে এঁদের তৈরি ডিজাইনার পোশাক নিয়ে র‌্যাম্প শো করার যেমন পরিকল্পনা আছে, তেমনই ওঁদের বানানো জিনিস নিয়ে স্টোর খোলার পরিকল্পনাও আছে।’ এমন উদ্যোগের কারণ? ‘খুব ভাল লেগেছিল ডিজি অরুণকুমার গুপ্তর কাছ থেকে যে দিন এই কাজের অফারটা আসে। আসলে কাজটার গুরুত্বও আলাদা— সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পেয়ে মানুষগুলি যাতে নিজেরা কিছু করতে পারেন, সেই জন্যই এটা করা।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন