কলকাতার কড়চা

সে  বার দিল্লিতে ‘রক্তকরবী’। দর্শক জওহরলাল নেহরুও। নাটক শেষ। কিন্তু একটাও হাততালি নেই। ঘোর ভাঙতে বেশ কিছু ক্ষণ লাগল আর তারপরে আবেগের ঝড়ে ভেসে গেলেন বহুরূপীর অভিনেতারা।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৭ ০০:০০
Share:

সত্তরে পা দিল ‘বহুরূপী’

Advertisement

সে  বার দিল্লিতে ‘রক্তকরবী’। দর্শক জওহরলাল নেহরুও। নাটক শেষ। কিন্তু একটাও হাততালি নেই। ঘোর ভাঙতে বেশ কিছু ক্ষণ লাগল আর তারপরে আবেগের ঝড়ে ভেসে গেলেন বহুরূপীর অভিনেতারা। স্বাধীনতার ঠিক এক বছর পরে জন্ম বহুরূপীর। জওহরলাল মুগ্ধ হয়েছিলেন স্বাধীন দেশের একটি নাটকের দলের চিন্তার প্রকাশ দেখে। কিন্তু বহুরূপী আত্মতুষ্ট হয় না। তার কয়েক বছর পরের কথা। কানায় কানায় ভর্তি নিউ এম্পায়ারে ‘অয়দিপাউস’ শুরুর মুখে কোরাসের গলা মিলছে না বলে নাটক করতে চাননি শম্ভু মিত্র। কোরাস কারা? পরের যুগের দিকপাল দুই অভিনেতা। একজন প্রয়াত। আর এক জন এখন আর মঞ্চে নামেন না। তবে শেষ পর্যন্ত গলা মেলানো গিয়েছিল। বহুরূপীর কিংবদন্তির অঙ্গ হয়ে রয়ে গিয়েছে এই স্মৃতি। চিন্তা ও কাজের এই শৃঙ্খলা ধরে রেখেই সত্তরে পা দিল বহুরূপী। অ্যাকাডেমি মঞ্চে তাদের নাট্যোৎসব ২৯ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে। নিজেদের প্রযোজনা ‘নানা ফুলের মালা’, ‘ফুল্লকেতুর পালা’, ‘আত্মঘাতী’র পাশাপাশি ছিল ভুবনেশ্বর নাট্যচেতনা ও পটনা আইপিটিএ-র নাটকও। রাষ্ট্রের সঙ্গে সংঘাতের সময়ও ব্যক্তি স্বাতন্ত্রযাপন করতে পারে কি না, তাই নিয়ে আজ, ১ মে, বহুরূপীর নতুন নাটক ‘মেডেল’। অলখ মুখোপাধ্যায়ের লেখা, নির্দেশনায় দেবেশ রায়চৌধুরী। সঙ্গে তারই মহড়ায় দেবেশ রায়চৌধুরী ও কৃষ্ণা গঙ্গোপাধ্যায়।

Advertisement

কানন দেবী

জয়দেব ছবিতে একটি ছোট্ট চরিত্রে যখন কাজ করেন সেই সময় তিনি একেবারেই একরত্তি মেয়ে। সেই ছিল শুরু। ১৯২৭-এ শঙ্খবেলা ছবিতে কাজ করেন কাননবালা নামে, কিন্তু মানময়ী গার্লস স্কুল-এর অভিনয় ওঁকে খ্যাতির শিখরে পৌঁছে দেয়। একাধারে গায়িকা এবং নায়িকা কানন দেবী–র (১৯১৬-১৯৯২) জন্মশতবর্ষ পেরিয়ে গেল সদ্য। ১৯৬৪-তে পদ্মশ্রী এবং ১৯৭৬-এ দাদাসাহেব ফালকে সম্মান লাভ। লিখেছেন আত্মজীবনী সবারে আমি নমি। স্বর্ণযুগের এই শিল্পীকে মনে রেখেই সম্প্রতি নিউ থিয়েটার্স-এর সহায়তায় নন্দনে আয়োজিত হল উৎসব। নন্দন ৩-এ ফণী মজুমদারের হিন্দি ছবি স্ট্রিট সিঙ্গার প্রদর্শন দিয়ে সূচনা। স্মরণ অনুষ্ঠানের পর প্রদর্শিত হয় দেবকী বসুর বিদ্যাপতি ছবিটি। ‘সে সময়ের সিনেমা ও কাননদেবী’ শীর্ষক আলোচনায় বললেন সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় ও সোমা চট্টোপাধ্যায়। প্রদর্শিত হল নীতীন বসু-র লগন এবং প্রমথেশ বড়ুয়ার মুক্তি। ছিল কানন দেবীকে নিয়ে একটি চিত্র প্রদর্শনীও। এ দিকে ২৮-৩০ এপ্রিল নন্দন-৩ প্রেক্ষাগৃহে শিল্পী সংসদ ও নন্দন কর্তৃপক্ষ দেখালেন ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় ও জহর রায়ের জনপ্রিয় মোট ছয়টি ছবি।

তুলিতে হাস্যরস

১৯৭৬-এ কবি সমরেন্দ্র সেনগুপ্তর হাত ধরে পথচলা শুরু সংস্কৃতি সাহিত্য শিল্প বিষয়ক পত্রিকা বিভাব-এর। প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সমরেন্দ্র প্রয়াত হন ২০১১-র ৬ মার্চ। ২০১৪ থেকে প্রতি বছর পত্রিকাটি আয়োজন করে চলেছে তাঁর স্মরণে এক বক্তৃতার। এই তিন বছরে বক্তা হিসেবে এসেছেন শিবাজী বন্দ্যোপাধ্যায়, দীপেন্দু চক্রবর্তী ও চিন্ময় গুহ। এ বার ৫ মে সন্ধে সাড়ে ৬টায় অবনীন্দ্র সভাগৃহে কবির জন্মদিন উপলক্ষে চতুর্থ বর্ষের বক্তৃতা: ‘বাঙালির তুলিতে হাস্যরস’, অতীতের শিল্পীদের হাস্যরসাত্মক অলংকরণের প্রক্ষেপণ সহ বলবেন দেবাশীষ দেব। সঙ্গে তাঁরই রেখায় সমরেন্দ্র।

স্থাপত্য সংরক্ষণ

স্থাপত্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অনেকগুলি বিষয় স্মরণে রাখার প্রয়োজন হয়। স্থান-কাল-পাত্র এবং আবহাওয়া বিশেষে সংরক্ষণের পদ্ধতি বদলে যায়। অঞ্চল ভেদেও হয়। দীর্ঘদিন ধরেই স্থাপত্য সংরক্ষণের কাজ করে চলেছেন এই শহরের স্থপতি মণীশ চক্রবর্তী। কাজের সুবাদেই তাঁর ঝুলিতে জমা হয়েছে নানা অভিজ্ঞতা। গত বছর ইউনেস্কোর উদ্যোগে শ্রীরামপুরের সেন্ট ওলাভ’স চার্চ সংরক্ষণের কাজটি বিশেষ পুরস্কার পেয়েছে। গত দুই দশকে এই বঙ্গে সংরক্ষণের কাজ কেমন হয়েছে তারই একটি দিশা পাওয়া গেল সম্প্রতি যদুনাথ ভবন মিউজিয়াম অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার-এ আর্কিটেকচারাল হেরিটেজ কনজারভেশন ইন ওয়েস্ট বেঙ্গল শীর্ষকে মণীশের আলোচনায়।

দলিত সাহিত্য

‘লেখকের জন্ম হয়, তৈরি হয় না’, বলছিলেন মরাঠি সাহিত্যিক ও তাত্ত্বিক শরণকুমার লিম্বালে, ‘যাও, ভগবানের কাছে প্রার্থনা করো যদি তাঁর আশীর্বাদ পাও’, চল্লিশ বছর আগে আমাকে শুনতে হয়েছে এমন কথা।’ উত্তরে তিনি বলেছিলেন, ‘তা কী ভাবে সম্ভব, আমি তাঁর কাছে গেলে তিনি তো দূষিত হয়ে যাবেন!’ এমন বাধা পেরিয়েই তাঁকে চলতে হয়েছিল। বাবাসাহেব অম্বেডকর আর বিবেকানন্দ অন্ধকারে পথ দেখিয়েছিলেন। সমস্ত কুৎসার জবাব দিতেই কলেজ জীবনে কলম ধরেছিলেন, লিখেছিলেন আত্মজীবনীমূলক উপন্যাস আক্কারমশী। পরে এটি অনূদিত হয়েছে নানা ভারতীয় ভাষায়। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস এর ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ করে আউটকাস্ট নামে। ওঁর জন্ম ১ জুন ১৯৫৬, মহারাষ্ট্রে। লেখা শুরু ১৯৮২-তে, লিখেছেন ৪০টিরও বেশি বই। ওঁর লেখা বই দলিতসাহিত্যাচে সৌন্দর্যশাস্ত্র মরাঠি ভাষায় প্রকাশের পর ‘টুওয়ার্ডস দ্য এসথেটিক্স অব দলিত লিটারেচার’ নামে অনূদিত হয়েছে নানা ভারতীয় ভাষায়। মৃন্ময় প্রামাণিকের অনুবাদে বাংলায় দলিত নন্দনতত্ত্ব (তৃতীয় পরিসর) নামে প্রকাশ পেল।

সিনেমার গান

সত্যজিৎ রায়ের ছবিতে ব্যবহৃত প্রায় প্রত্যেকটি গানই এক একটি মাইলস্টোন। যেমন, গুপী গাইন বাঘা বাইন-এ ‘ওরে বাবা দেখ চেয়ে...’, কিংবা হীরক রাজার দেশে-র ‘কত-ই রঙ্গ দেখি দুনিয়ায়...’ অথবা শতরঞ্জ কে খিলাড়ি-র ‘কানহা ম্যয় তোসে হারি’। এ বার এ রকমই সত্যজিতের ছবিতে ব্যবহৃত মোট পনেরোটি জনপ্রিয় গান তাঁর ৯৭তম জন্মদিন উপলক্ষে ২ মে সন্ধে ৬টায় বিড়লা অ্যাকাডেমিতে স্বপন মল্লিকের সূত্রস্থাপন ও বিন্যাসে শোনা যাবে। সংগীত ও পাঠে: অপালা বসু, মাধবী দত্ত, কাজল সুর ও অন্যরা। সত্যজিৎকে নিয়ে স্মৃতিচারণে বরুণ চন্দ, পঙ্কজ সাহা প্রমুখ। নিবেদনে সুরলোক।

সম্মান

একাধারে তিনি কবি, গল্পকার, লোকসংস্কৃতি গবেষক ও গায়ক। ইতিমধ্যে প্রকাশিত হয়েছে বেশ কয়েকটি গল্প, কবিতা ও প্রবন্ধের বই এবং প্রচলিত বাংলা লোকগানের ক’টি জনপ্রিয় অ্যালবাম। আশিস গিরি পেশা সূত্রে আকাশবাণী কলকাতার অনুষ্ঠান কার্যনির্বাহী এবং নাট্য পরিচালক। বেতার নাটক পরিচালনার জন্য বেশ কয়েক বার পেয়েছেন ভারত সরকারের তথ্য ও বেতার মন্ত্রকের পুরস্কার। এ বার তাঁর পরিচালনায় নিরূপ মিত্রের ‘সময় শিকার’ সর্বভারতীয় স্তরে প্রতিযোগিতায় পেল শ্রেষ্ঠ বেতার নাটকের পুরস্কার। নাটকটি মূলত এই সময়ে দাঁড়িয়ে এক নববিবাহিত দম্পতির অতীত-বর্তমান-ভবিষ্যতের নাটকীয় উপলব্ধির আলেখ্য।

মঞ্চে প্রথম

বিখ্যাত ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্যের ছেলে হলে কী হবে, সাহেব বেছে নিয়েছেন অভিনয়কেই। পাঁচ বছর বয়সে প্রথম টেলিফিল্ম। অপর্ণা সেনের ‘ইতি মৃণালিনী’তে কঙ্কনা সেনশর্মার বিপরীতে এক নকশাল তরুণের চরিত্রে ছাড়াও অভিনয় করেছেন অনেক ছবিতেই। এ বার কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের লেখা নাটক ‘অবয়ব’-এ সাহেবের প্রথম মঞ্চাভিনয়। বেহালা বাতায়ন প্রযোজিত ও নবকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশিত নাটকটিতে সোহিনী সরকারের বিপরীতে অভিনয় করছেন তিনি। নারী-পুরুষের সম্পর্কের টানাপড়েনের ভিতর দিয়ে বিবাহ, প্রেম, ব্যক্তি-অহং নিয়ে নানা চিরকালীন প্রশ্ন উঠে এসেছে এ-নাটকে। ব্যক্তিগত বিপর্যয় কাটিয়ে অভিনয়ে তিনি স্থিরনিশ্চিত, জানালেন বাতায়নের সম্পাদক পার্থ সরকার। অ্যাকাডেমিতে ৫ মে দুপুর ২টো ৪৫-এ।

দুই শহর

দুই শহর। দুই সময়। অতীত ও বর্তমান। কর্নাটকের হাম্পি, ১৪-১৭ শতকে বিজয়নগর সাম্রাজ্যের এ রাজধানী আকারে ছিল সে কালের প্যারিসের তিন গুণ। আজ তা জনহীন, নিস্তব্ধ। এ দিকে দেশের অন্য প্রান্তে চাষের জমির মধ্যে থেকে মাথা তুলছে নতুন শহর— পশ্চিমবঙ্গের নিউটাউন।

সেখানে জীবন এখন সদা-সচল। রাজীব দে সাদাকালো ছবিতে পাশাপাশি ধরেছেন দুই শহরের সাম্প্রতিক রূপ— সময়ের স্রোতে মিলে গিয়েছে হাম্পি ও নিউটাউন। ভারতীয় সংগ্রহশালায় রাজীবের সদ্যসমাপ্ত আলোকচিত্র প্রদর্শনী দর্শকদের উপহার দিল নাগরিক স্মৃতির কিছু আশ্চর্য মুহূর্ত। সঙ্গে তারই দুটি ছবি।

সৃজনের সৃষ্টি

সেই প্রাচীন কাল থেকেই রঙ-তুলি-পেনসিল-ক্যানভাস-এর সঙ্গে সূচ-ছুরি-কাঁচির গভীর যোগ। তাই ডাক্তার-শিল্পী সৃজন মুখোপাধ্যায় যেমন মুখ-মাথা-গলার অস্ত্রোপচারে সিদ্ধহস্ত, তেমনই ভাস্কর্য ও চিত্রকলাতেও পারদর্শী। ছবিতে তিনি সরাসরি চড়া রঙ ব্যবহার করতে ভালবাসেন। এ বার তাঁরই আঁকা ১৮টি ‘অ্যাক্রিলিক অন ক্যানভাস’ নিয়ে ‘দাই নেম ইজ উওম্যান’ শীর্ষক প্রদর্শনীর আয়োজন হয়েছে অ্যাকাডেমিতে, ৫-১১ মে। তিনি এই সিরিজের ছবিগুলিতে পুরাণ, ইতিহাস ও সমসাময়িক নারীর নানা রূপকে ফুটিয়ে তুলেছেন। এটি তাঁর তৃতীয় একক প্রদর্শনী। ৫ মে সন্ধে ৬টায় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে থাকবেন ধীরাজ চৌধুরী, উমা সিদ্ধান্ত, রবীন মণ্ডল, ইশা মহম্মদ প্রমুখ।

ডক্টর ফস্টাস

বাংলা নাট্যমঞ্চে ক্রিস্টোফার মার্লো-র কাজ এর আগে সে ভাবে দেখা যায়নি। ব্রিটিশ নাট্যকার, কবি ও অনুবাদক মার্লো-র ট্র্যাজিক নাটক ‘ডক্টর ফস্টাস’ এ বার মঞ্চস্থ করতে চলেছে ‘কসবা অর্ঘ্য’। তাদের এর আগের প্রযোজনা ‘ঊরুভঙ্গম’, ‘ম্যাকবেথ বাদ্য’-র পরে এ বার মার্লো-র এই নাটক কেন? পরিচালক মণীশ মিত্রর কথায়: ‘মার্লো-র আত্মহত্যা ও তাঁর ট্র্যাজেডি কোথায় যেন এই সময়ের ক্ষমতার রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে ভীষণ প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে।’ এই প্রযোজনায় ব্যবহৃত হয়েছে কেরলের ধর্মীয় আচার ‘থেইয়াম’। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে শরীরী ভাষ্যের উপরেও। এই নাট্যের প্রথম অভিনয় ৩ মে, সন্ধ্যা ৬.৪৫-এ, অ্যাকাডেমিতে। সঙ্গের ছবিতে ফস্টাসের আত্মার চরিত্রে রাজু বেরা।

শারদোৎসব

‘ওটা হচ্ছে ছুটির নাটক। ওর সময়ও ছুটির, ওর বিষয়ও ছুটির। রাজা ছুটি নিয়েছে রাজত্ব থেকে, ছেলেরা ছুটি নিয়েছে পাঠশালা থেকে। তাদের আর-কোনো মহৎ উদ্দেশ্য নেই কেবল একমাত্র হচ্ছে— ‘বিনা কাজে বাজিয়ে বাঁশি কাটবে সকল বেলা’। ওর মধ্যে একটা উপনন্দ কাজ করছে, কিন্তু সেও তার ঋণ থেকে ছুটি পাবার কাজ।’ ভানুসিংহের পত্রাবলী-তে ‘শারদোৎসব’ সম্পর্কে লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ। এই ‘শারদোৎসব’ নাটকই রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার রেপার্টয়্যার-এর সাম্প্রতিক প্রযোজনা, তাদের চতুর্থ প্রয়াস। এটির অভিনয় শুরু হয়ে গিয়েছে এই বছরের গোড়াতেই। নির্দেশক দেবাশিস রায়চৌধুরী। শিশির মঞ্চে ৬ মে, অ্যাকাডেমিতে ১২ মে এবং রবীন্দ্র সদনে রবীন্দ্র-জন্মোৎসব উপলক্ষে অভিনীত হবে ‘শারদোৎসব’।

অভিযাত্রী

বয়স তখন চার। প্রথম বার দার্জিলিঙ। পাহাড়িয়া সুজল মুখোপাধ্যায়ের ভাইপো কালাপোখরি থেকে ছোট্ট ছোট্ট পায়ে ট্রেকিং করছিল সান্দাকফুর দিকে। হাঁফিয়ে পড়ছে, তবু কিছুতেই কারও কোলে উঠবে না। শেষমেষ তাকে কাঁধে তুলে নিলেন পথচলতি এক পাহাড়িয়া। বৃদ্ধটি (এভারেস্ট জয়ী তেনজিং নোরগে) তাকে সান্দাকফুর কটেজে নামিয়ে বলেছিলেন, ‘সাবাস বেটা। বহোৎ দম তুমকো।’ আর সেই বালক অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়ই সম্প্রতি সাইকেলে চেপে সাহারা মরুভূমি পার হয়ে এলেন। ‘মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ’-এর চাকরি ছেড়ে অভিযানের অনিশ্চিত ভেলায় সওয়ার অনিন্দ্য। সে ভেলা তাকে হিমালয়ের নন্দাঘুণ্টি, নীলকণ্ঠ, কামেট, গ্রিনল্যান্ডের পোলহেমসফেল্ড, তানজানিয়ার মাউন্ট কিলিমাঞ্জারোয় নিয়ে গিয়েছে। অনিন্দ্য শামিল হয়েছেন আফ্রিকায় বিষুবরেখা থেকে কর্কটক্রান্তি পর্যন্ত সাইকেল যাত্রায়। এ বার সাইকেল সীতাহরণ নিয়ে যাত্রা শুরু মরক্কোর গুয়েলমিম থেকে। সাহারা পেরিয়ে প্রায় ২৩০০ কিলোমিটার দূরে সেনেগালের রাজধানী ডাকারে শেষ। ‘হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট’-এর এই প্রাক্তন ছাত্র নিজেকে ‘শিক্ষিত শেরপা’ বলেই পরিচয় দিতে ভালবাসেন। আপাতত কয়েক দিন বিশ্রাম আর নতুন অভিযানের ছক কষা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন