বিপন্ন মধুসূদনের বসতবাড়ি
খিদিরপুরে মাইকেল মধুসূদন দত্তের পৈতৃক বাড়ি ভেঙে ফেলা হচ্ছে, এই মর্মে খবর পেয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশে মধুসূদনের ভিটেবাড়ি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা সম্ভবপর হয়েছে এবং সাগরদাঁড়িতে প্রতি বছর কবির জন্মদিন উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে ‘মধু-মেলা’র আয়োজন হয়ে থাকে। কলকাতায় কবির সমাধিসৌধ এবং আরও কয়েকটি স্থাপনা তাঁর স্মৃতি বহন করে চলেছে। খিদিরপুরের বাড়িটারও বিশেষ স্মারকমূল্য রয়েছে। বাংলা সাহিত্যপ্রেমিক মাত্রই মধুসূদনের সকল স্মৃতি সংরক্ষণ করতে চাইবেন। আমরা আশা করি, পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতিমনা মানুষ এই বাড়িটি সংরক্ষণের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’’ এই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। খিদিরপুরে যে বাড়িতে মধুসূদন দত্ত তাঁর ছোটবেলা কাটিয়েছেন, যে বাড়ি ছিল বলেই খিদিরপুর ‘কবিতীর্থ’ (অন্য কবিরা হেমচন্দ্র ও রঙ্গলাল বন্দ্যোপাধ্যায়), ‘প্রকৃত’ নথির অভাবে আজ সেই বাড়িই বিলুপ্তির মুখে। দুশো বছর আগে বাংলার মনীষীরা যে সব বাড়িতে বাস করেছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আজ আর তার আদালতগ্রাহ্য দলিলপত্রের কোনও অস্তিত্ব নেই। কিছু পরোক্ষ প্রমাণ আর জনশ্রুতিই সম্বল। দুর্ভাগ্যের বিষয়, এ ক্ষেত্রে তার কোনও দাম নেই। বাড়িটি কি সরকারি ভাবে অধিগ্রহণ করা যায় না? সঙ্গে ১৯৯০-এ তোলা ২০ বি কার্ল মার্ক্স সরণির বাড়িটির ছবি।
বঙ্গদর্শন
কলকাতা শহরে সংগ্রহশালার সংখ্যা বড় কম নয়। সবগুলির খোঁজও যে সাধারণে রাখেন এমন নয়। অন্তত দুই মলাটে বড় সংগ্রহশালাগুলির বিস্তারিত হালহদিশ যদি পাওয়া যেত! নৈহাটির বঙ্কিম ভবন গবেষণা কেন্দ্র তাঁদের মুখপত্র ‘বঙ্গদর্শন’ পত্রিকার সাম্প্রতিক সংখ্যায় (সম্পা: পিনাকেশচন্দ্র সরকার) সেই বহু আয়াসসাধ্য কাজটিতেই হাত দিয়েছেন। কলকাতার কুড়িটি বড় সংগ্রহশালার বিবরণ এখানে সংকলিত হয়েছে। যেমন আছে এশিয়াটিক সোসাইটি, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল কি ভারতীয় সংগ্রহশালার মতো সুপরিচিত প্রতিষ্ঠান, তেমনই সংগ্রহশালা হিসাবেই চিহ্নিত নয় এমন প্রতিষ্ঠানও সংগ্রহের গুরুত্বের নিরিখে জায়গা করে নিয়েছে, যেমন বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ কি বসু বিজ্ঞান মন্দির। পরের সংখ্যায় থাকবে জেলার সংগ্রহশালার কথা। ২৮ জুন বঙ্কিম ভবনে বঙ্কিমচন্দ্রের ১৭৯ তম জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে এটি প্রকাশিত হল। সভায় বক্তা ছিলেন অভিরূপ সরকার ও স্বপন চক্রবর্তী। সে দিন বাড়ির চার পাশ ঘিরে চমৎকার মেলাও বসেছিল।
আকস্মিক
‘এখন এগুলোকে মানতে হবে আমাদের। কমনম্যান মেমরিজ। এগুলোই ইতিহাস, এগুলোই উপন্যাস’— জোরের সঙ্গে কথাগুলি বলেছিলেন অদ্রীশ বিশ্বাস, তাঁর শেষ প্রকাশিত বই লীলাবতী-র ভূমিকায়। মেধাবী গবেষক ও প্রাবন্ধিক অদ্রীশের এই বইটি একটি উপন্যাস যা তিনি নিজেই কাছের মানুষদের ডাকযোগে পাঠাচ্ছিলেন চিরকুট সহ— ‘পড়বি এবং জাস্ট ডাস্টবিনে ফেলে দিবি।’ অথচ দুই খণ্ড বটতলার বই, বাঙালি ও বটতলা, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের ডায়েরি কিংবা বাঙালি মেয়ের প্রথম বাংলা ভাষায় লেখা উপন্যাস মনোত্তমা-র মতো অপরিহার্য বইয়ের সম্পাদক অদ্রীশের নিষ্ঠায় ও পরিশ্রমী কলমে সেই জোর ছিল যা তাঁর জাত চিনিয়ে দিয়েছে গত দুই দশকে, একটু একটু করে। প্রেসিডেন্সি কলেজের উজ্জ্বল প্রাক্তনী, পেশায় অধ্যাপক অদ্রীশ চার্লস ওয়ালেস ফেলোশিপ পেয়ে লন্ডন গিয়েছেন, পেয়েছিলেন জীবনের একমাত্র পুরস্কার লিটল ম্যাগাজিন লাইব্রেরির পক্ষ থেকে। ১৪ জুন হঠাৎ নিজের পথে মৃত্যুকে বেছে নিলেন সেপ্টেম্বরে পঞ্চাশ ছুঁতে চলা অদ্রীশ। তাঁরই স্মরণে একটি সভা হবে ১১ জুলাই, জীবনানন্দ সভাঘরে, বিকেল সাড়ে পাঁচটায়। আয়োজক উত্তরকাল, অশোকনগর নাট্যমুখ, বুক ফার্ম এবং অহর্নিশ পত্রিকা।
ঝালাপালা
দমদমের ঝালাপালা নাট্যগোষ্ঠী বিগত কুড়ি বছর ধরে ছোটদের জন্য নাটক ও নাটক সংক্রান্ত নানান রকম কাজকর্ম করে চলেছে। সম্প্রতি তারা ছোটদের জন্য জ্ঞানমঞ্চে ‘ইকির মিকির’ শীর্ষক তিন দিনের নাট্যোৎসবের আয়োজন করেছিল। সেখানে নানা রকম ভাবে ছোটদের বর্তমান নাট্যচর্চাকে ধরার চেষ্টা করা হল। তীর্থঙ্কর চন্দ ও রুচিরা দাস আলোচনা করলেন ‘ছোটদের জন্য সারা বিশ্বে কী রকম নাটক হচ্ছে, আর আমরাই বা কী ভাবছি, কোন পথেই বা এগোব ছোটদের জন্য’ এ রকম বিষয় নিয়ে। ছিল বেশ কিছু ছোটদের উপযোগী মুক্তমঞ্চের নাটক ও মঞ্চের নাটকও।
বুদ্ধ প্রণাম
লুইপাদ, ভুসুকুপাদ, সরহপাদ বা কাহ্নপাদ পেরিয়ে বৌদ্ধ দর্শনাশ্রিত চর্যাপদ আজও অব্যাহত। প্রচলিত ইতিহাস, গবেষণা, লোকশ্রুতি, ভক্তি এবং প্রাতিষ্ঠানিক ধর্মের বাইরেও পড়ে থাকে অন্য এক বুদ্ধের অনুসন্ধান। সময়ের স্রোতে যা জারিত হতে থাকে মানুষের হৃদয় ও মননে। সাহিত্যের পাতায় কালের বিবর্তনে নিজেকে সে মেলে ধরে উপলব্ধির এক অন্য আলোয়। গৌতম বুদ্ধকে নিয়ে এ যাবৎ কবিতা লিখেছেন অনেকেই। এ নিয়ে একটি সংকলন প্রকাশিত হয় ১৯৯৩-এ। রবীন্দ্রনাথের সার্ধশতবর্ষে প্রকাশ পায় দ্বিতীয়টি। এ বারে আরও বড় কলেবরে প্রায় দুশো জন কবির লেখা নিয়ে সম্প্রতি তৈরি হল একটি বই। হেমেন্দুবিকাশ চৌধুরীর সম্পাদনায় বুদ্ধ প্রণাম শীর্ষকে এই বইটির প্রকাশ হল বৌদ্ধ ধর্মাঙ্কুর সভার ১২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে। ২২ জুন ধর্মাঙ্কুর সভার কৃপাশরণ সভাগৃহে একটি অনুষ্ঠানে প্রকাশ পেল এই সংকলনটি। তার আগে সম্পাদকের উপস্থিতিতে বাড়িতে গিয়ে বইটি তুলে দেওয়া হল সদ্য জ্ঞানপীঠ প্রাপ্ত কবি শঙ্খ ঘোষের হাতে।
নকশালবাড়ি
বিপ্লবের কি কোনও জন্মদিন হয়? যেমন ১৯৬৭-র ২৪ মে! সে দিনই কি নকশালবাড়ির অদূরে ‘বসন্তের বজ্রনির্ঘোষ’-এর সৃষ্টি? নকশালবাড়ি আন্দোলনের ৫০ বছর উপলক্ষে ‘এবং অন্য কথা’ (সম্পা: বিশ্বজিৎ ঘোষ ও জলধি হালদার) যে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করেছে তাতে ভারতের রাজনৈতিক ও সামাজিক ইতিহাসের এই অধ্যায়ে নতুন ভাবে আলো পড়েছে। আন্দোলনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িতদের বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে লেখা প্রবন্ধ, স্মৃতিকথন, চিঠি, গল্প, আখ্যান, বিভিন্ন নিবন্ধের পুনর্মুদ্রণ রয়েছে এই সংকলনে। ১৯৪৭-এ তেভাগা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৬৭-র মে মাসে নকশালবাড়ি পর্যন্ত কৃষক ও চা-শ্রমিকদের আন্দোলনের একটি ধারাবাহিকতা রয়েছে। সন্তোষ রাণা, অমিতদ্যুতি কুমার, অভিজিৎ মজুমদার, মধুময় পাল, পুণ্যব্রত গুণ, শুভেন্দু দাশগুপ্ত প্রমুখের প্রবন্ধ, স্ত্রীকে জেল থেকে লেখা চারু মজুমদারের চিঠি, কৃষ্ণ সিংহ মোক্তানের স্মৃতিকথনের মতো লেখা সংকলনকে সমৃদ্ধ করেছে।
সুবর্ণরেখা
পুরনো কলকাতার আদি অভিজাত সম্প্রদায় হিসাবে সুবর্ণবণিকরা সুপরিচিত। সোনা ছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসায় পুঁজি বিনিয়োগ করে এঁরা যেমন বিপুল অর্থ উপার্জন করেছিলেন, তেমনই ভূমিকা ছিল তাঁদের সংস্কৃতি চর্চায়। চিত্রশিল্পী ভবানীচরণ লাহা, কবি অক্ষয়কুমার বড়াল, সংগীতজ্ঞ রাইচাঁদ বড়াল, পক্ষীবিদ সত্যচরণ লাহা, সমাজসেবী মতিলাল শীল, ইতিহাসবিদ বিমলাচরণ ও নরেন্দ্রনাথ লাহা, শিল্পোৎসাহী রাজা রাজেন্দ্র মল্লিক এমন আরও অনেকের কথাই উল্লেখ্য। এঁদেরই উত্তরসূরি বর্তমান প্রজন্মকে উৎসাহ দিতে প্রতি বছর পি সি চন্দ্র জুয়েলার্সের পক্ষ থেকে কৃতী ছাত্রছাত্রীদের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এ বারের অনুষ্ঠান ৯ জুলাই ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট হল-এ। প্রকাশিত হবে সুবর্ণবণিক সম্প্রদায়ের মুখপত্র ‘সুবর্ণরেখা’, সম্পাদনায় সুস্মেলী দত্ত।
নৃত্যনাট্যের গান
সুর ও বাণীর সঙ্গে নাটকীয়তার এক অপূর্ব মেলবন্ধনে সৃষ্ট রবীন্দ্রনাথের নৃত্যনাট্যগুলির মধ্যে শ্যামা, চিত্রাঙ্গদা এবং চণ্ডালিকা অনন্য। এই তিনটি নৃত্যনাট্যেই বিচ্ছেদের অগ্নিদহনে প্রেম পেয়েছে পরিশুদ্ধতা। এই বিষয় ভাবনাকে কেন্দ্র করেই শিল্পী সুছন্দা ঘোষ কণ্ঠ দিয়েছেন ‘রবীন্দ্র নৃত্যনাট্যের গান’ শীর্ষক সিডিতে (প্রকাশ পাবে ৯ জুলাই, কসমিক হারমনি থেকে)। শোনা যাবে তিনটি নৃত্যনাট্যের নির্বাচিত অংশ। ইতিপূর্বে সিডিতে পূর্ণাঙ্গ নৃত্যনাট্য অথবা শুধু গানের নির্বাচন শোনা গেলেও একটি বিশেষ ভাবের সূত্রে গেঁথে গানের সঙ্গে নাট্যভাবনাকেও একক প্রয়াসে মূর্ত করে তোলার প্রচেষ্টাটি সত্যিই অভিনব।
সংগীতকেন্দ্র
পিয়ানোশিল্পী স্যাম ইঞ্জিনিয়ারের অদম্য উৎসাহে সুজিত সরকার ১৯৯২ সালে দক্ষিণ কলকাতায় প্রতিষ্ঠা করেন ‘সাদার্ন স্কুল অব মিউজিক’। তখন সাকুল্যে ৮-১০ জন শিক্ষার্থী। সংখ্যাটা এখন বটবৃক্ষের মতো, বলছিলেন প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৯৮ থেকে ফি বছর ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আয়োজিত হয় বাৎসরিক অনুষ্ঠান। লন্ডনের রয়্যাল স্কুল অব মিউজিক এবং ট্রিনিটি কলেজের অধীনে এই কেন্দ্রে পরীক্ষার ব্যবস্থা আছে। ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সম্প্রতি আয়োজিত হল একটি অনুষ্ঠান আইসিসিআর-এ। পাশ্চাত্য ধ্রুপদী সংগীত, স্ট্রিং অর্কেস্ট্রার (সঙ্গের ছবি) সঙ্গেই ছিল বাংলা এবং হিন্দি গানের পরিবেশনা।
বিজ্ঞানী প্রয়াত
তিনি ছিলেন প্রত্ন উদ্ভিদ বিজ্ঞানী। তাঁর গবেষণাতেই উঠে এসেছিল কলকাতায় প্রথম মেট্রোরেল তৈরির জন্য খনন কার্যের সময় কলকাতার নীচের পাললিক মৃত্তিকাস্তরে জমে থাকা উদ্ভিদ জীবাশ্ম নমুনার বিশ্লেষণ থেকে প্রায় ৬৫০০ বছর আগে কলকাতার উপকণ্ঠ পর্যন্ত বাদাবন এবং সমুদ্র উপকূলের বিস্তৃতি সম্পর্কে তথ্য। তুলে এনেছেন পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন অংশে পুরাতাত্ত্বিক খননকার্যের সময় মৃত্তিকা ও বিভিন্ন মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ থেকে পাওয়া জীবজ নমুনার বিশ্লেষণ করে এই অঞ্চলের মানব সভ্যতার ক্রমবিকাশ, রীতিনীতি বিষয়ে সাক্ষ্য প্রমাণ। হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রভাবতী দেবীর কন্যা মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৩৮ সালে শ্রীহট্টে। পরিবারের সঙ্গে চলে আসেন শিলং-এ। শিলং সরকারি বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করে কলকাতার রামমোহন কলেজ থেকে স্নাতক হন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতকোত্তর। ১৯৭১ সালে উদ্ভিদ জীবাশ্ম বিষয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচ ডি। বহু প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, পেয়েছেন নানা সম্মান। সম্প্রতি ৭৯ বছর বয়সে চলে গেলেন।
পরাগ উদ্যোগ
সমাজ উন্নয়নের নানান ক্ষেত্রে দীর্ঘ কাল কাজ করে চলেছে টাটা ট্রাস্ট। গ্রামীণ জীবনযাত্রা থেকে প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি। পাশাপাশি গণমাধ্যম, শিল্পকলা, কারিগরি ও সংস্কৃতিরও রক্ষণাবেক্ষণ সক্রিয় মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে। এ বছর তাদের ১২৫তম বার্ষিকী। ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে তাদের পরাগ উদ্যোগ— গ্রন্থাগারগুলিতে ছোটদের সঙ্গে বই নিয়ে আলোচনা, শিশুসাহিত্যের লেখক ও অলংকরণ শিল্পীদের সঙ্গে ছোটদের কর্মশালা, ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে গল্পপাঠের অধিবেশন ইত্যাদি। এ বার পরাগ উদ্যোগ শুরু করছে ‘বিগ লিটল বুক টক’, এতে ভারতের শিশুসাহিত্য সম্পর্কে ভাষণের আয়োজন দেশ জুড়ে, লেখকদের সঙ্গে বলবেন চিত্রশিল্পীরাও। গত বছর শুরু হয়ে গিয়েছে ‘বিগ লিটল বুক অ্যাওয়ার্ড’, পেয়েছেন মরাঠি শিশুসাহিত্যিক মাধুরী পুরন্দারে। এ বছর এই পুরস্কারের জন্যে বাংলা ভাষার লেখক ও সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে কোনও অলংকরণ শিল্পীকে বেছে নেবে টাটা ট্রাস্ট। মনোনয়ন পর্ব ১৫ জুলাই পর্যন্ত: http://biglittlebookaward.in/
নির্বাণ
তিন বছর হল প্রায় দমদমে আশিয়ানা-য় অনাথ ছেলেমেয়েদের নাচ শেখান অনুশ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর তত্ত্বাবধানে এ বার তারা ‘মাতৃভূমি’ মঞ্চস্থ করবে, ‘ওরা স্বজনহীন গৃহহীন বলেই এমন বিষয় বেছে নেওয়া। ওদের কাছে এই মাটি, এই পৃথিবীই একমাত্র আশ্রয়, মায়ের মতো।’ অনুশ্রীর নিজের নৃত্যগোষ্ঠী দমদম রিদমস্কেপ, সেখানকার ছেলেমেয়েরাও সে সন্ধ্যায় ওই অনুষ্ঠানটির পর পরিবেশন করবে ‘মায়াপৃথিবী’। ‘রিদমস্কেপ-এর বিষয়টি ওই মাতৃভূমির বিপন্নতা নিয়েই। যে ভাবে আজ দূষণ, উষ্ণায়নের দাপটে ধ্বংস হতে বসেছে পৃথিবী, মানুষই তৈরি করেছে এমন বিপদ, আবার মানুষই পারে তার যত্ন সহিষ্ণুতা আর ভালবাসা দিয়ে এই মায়াময় পৃথিবীকে বাঁচাতে।’ শিক্ষয়িত্রী অনুশ্রীর ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পে তালিম দু’বছর বয়স থেকে, সাত বছর থেকে শুরু ভরতনাট্যম, গুরু অনিতা মল্লিক। মাস কমিউনিকেশন-এ গ্র্যাজুয়েশন করেও নাচ ছাড়া অন্য কিছুতে মন বসেনি কোনও দিন, শিশু-কিশোর-বয়ঃসন্ধির ছেলেমেয়েদের নাচ শিখিয়েই দিন কাটে, বিশেষ করে এদের মধ্যে যাদের কেউ নেই তাদের সঙ্গে। ৮ জুলাই রবীন্দ্রসদনে বিকেল ৫টায় তাঁদের নৃত্যানুষ্ঠান: ‘নির্বাণ ২০১৭’। ‘নাচ আমার বেঁচে থাকার শ্বাসপ্রশ্বাস। ঠাকুমাই প্রথম প্রেরণা জোগান নৃত্যশিল্পী হয়ে উঠতে, এখন সে প্রেরণা পাই মা’র কাছ থেকে।’ স্বীকারোক্তি অনুশ্রীর।