কলকাতার কড়চা

১৬এ বোসপাড়া লেনের এই বাড়িতেই ১৩ নভেম্বর ১৮৯৮ স্ত্রীশিক্ষা প্রসারের জন্য কালীপুজো করে স্কুলের সূচনা করেছিলেন মা সারদা দেবী। ইতিহাসের দীর্ঘ পথ পেরিয়ে সে দিনের সেই স্কুলই আজকের সুপরিচিত নিবেদিতা স্কুল।

Advertisement
শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০১৭ ০০:০০
Share:

নিবেদিতার বাড়িতে সংগ্রহশালা

Advertisement

বাগবাজারের বোসপাড়া লেনের ভারতীয় আধ্যাত্মিকতা শিল্প সংস্কৃতির অনুরাগী এক বিদেশি ২৭ জানুয়ারি ১৮৯৯ সন্ধ্যায় তাঁর বাড়িতে এক চা-চক্রের আয়োজন করেছিলেন। অনেকের সঙ্গে স্বামী বিবেকানন্দ মহেন্দ্রলাল সরকার অবলা বসু ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সেখানে উপস্থিত ছিলেন। গৃহকর্ত্রীর অনুরোধে কবি গানও গেয়েছিলেন। ঐতিহাসিক সেই চা-চক্রের আয়োজক ছিলেন ভগিনী নিবেদিতা। ১৬এ বোসপাড়া লেনের এই বাড়িতেই ১৩ নভেম্বর ১৮৯৮ স্ত্রীশিক্ষা প্রসারের জন্য কালীপুজো করে স্কুলের সূচনা করেছিলেন মা সারদা দেবী। ইতিহাসের দীর্ঘ পথ পেরিয়ে সে দিনের সেই স্কুলই আজকের সুপরিচিত নিবেদিতা স্কুল। নিবেদিতার সার্ধশতজন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে বাড়িটি এখন যথাযথ ভাবে সুসংস্কৃত, সেখানে গড়ে উঠছে একটি সংগ্রহশালা। প্রায় পাঁচ কাঠা জমির উপর ছোট দোতলা বাড়িটি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উদ্যোগী হয়ে সরকার থেকে কিনে নিয়ে রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের হাতে তুলে দেন ২০১৩ সালে। চার বছর টানা কাজের শেষে সম্পূর্ণ আধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত এই সংগ্রহশালায় শোভা পাবে নিবেদিতা সংক্রান্ত নানা তথ্য, ছবি, বিভিন্ন ব্যবহৃত জিনিস, বইপত্র, তাঁর আসবাব, অডিয়ো ভিসুয়াল পদ্ধতিতে সেকালের নানা ঘটনার রূপায়ণ। নিবেদিতা যে ভাবে বাড়ির ঘরগুলি ব্যবহার করতেন অবিকল সেই ভাবেই তৈরি হয়েছে সংগ্রহশালাটি। শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রী এটির উদ্বোধন করবেন। এই উপলক্ষে প্রকাশ পাবে নিবেদিতার জীবন ও কর্ম নিয়ে সচিত্র একটি সংকলনগ্রন্থ ও বাড়ির সংরক্ষণ নিয়ে অপর একটি গ্রন্থ। সঙ্গের ছবিটি সারদা মিশনের সৌজন্যে, বাড়ির উঠোনে ছাত্রীদের সঙ্গে ভগিনী নিবেদিতা।

Advertisement

নটী বিনোদিনী

সৃষ্টির মধ্যেই নিজেকে সম্পূর্ণ উজাড় করে তৃপ্ত ছিলেন অভিনেত্রী বিনোদিনী দাসী। পরবর্তী সময়ে মানুষ যাকে চিনেছে নটী বিনোদিনী নামে। এই খ্যাতকীর্তি শিল্পীকে সম্মান জানিয়েই ওঁর স্মৃতি বিজড়িত স্টার থিয়েটারে গত ১৭ সেপ্টেম্বর উদ্বোধন হল নটী বিনোদিনী মেমোরিয়াল আর্ট গ্যালারির। সেই অর্থে উত্তর কলকাতায় কোন আর্ট গ্যালারি ছিল না, এই নবনির্মিত গ্যালারি সেই অভাব পূরণ করবে। আলোকচিত্রশিল্পী অতনু পাল (সঙ্গের ছবি প্রদর্শনী থেকে) এবং থার্ড আই দলের সদস্যদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে পুরস্কৃত ছবিগুলি নিয়ে এখানে শুরু হয়েছে উদ্বোধনী প্রদর্শনী ‘স্মৃতি সুধায়’। চারটি পর্যায়ে বিভক্ত এই প্রদর্শনী প্রতি রবিবার সেজে উঠছে নতুন নতুন ছবিতে। ছবির সঙ্গেই আছে কবিতাপাঠ, শ্রুতিনাটক বা ভারতীয় ধ্রুপদী নাচের যুগলবন্দি এবং স্লাইড শো। প্রদর্শনী চলবে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত (দুপুর ২-৮ টা)।

পায়ে হেঁটে

শহরের নয়া হুজুক। জেনানা ফাঁকি! এই হুজুক একদা বড়ই বিচলিত করে তুলেছিল শহরবাসীকে। ঠাকুরবাড়ির মেয়ে-বউরা অভ্যেস মতো গঙ্গায় গিয়ে পালকি ডুব দেয়। এমন সুযোগ তো সকলের নেই। ভিনদেশি ব্যবসায়ীদের মেয়ে-বউরা গঙ্গা স্নানে যায়, গঙ্গা স্নানে যায় বাঙালি শেঠ বসাক কিংবা ঘোষবাড়ির মেয়ে-বউরাও— এরই বিপরীতে যুদ্ধে নামেন রাজস্থান থেকে আগত ব্যবসায়ী রামচন্দ্র গোয়েঙ্কা। তিনি গঙ্গার তীরে চার পাশ ঘেরা ‘জেনানা ঘাট’ তৈরি করে ফেললেন। এ রকমই কলকাতার হরেক রাস্তা, গলি-ঘুঁজি, অলিন্দ-প্রকোষ্ঠ, মূর্তি-ফলক আর জীবনের দর্শন নিয়েই দেবদত্ত গুপ্ত-র পায়ে হেঁটে কলকাতা/আমার শহরের দশ দিগন্ত (বঙ্গদর্শন.কম) নামক বইটি। ‘গরিবের ফার্মেসী’, ‘কে সি দাশের সাইনবোর্ডের গল্প’, ‘গাওসীয়া লাইব্রেরি’, ‘ডায়মণ্ড লাইব্রেরি’, ‘জাহাজ ডুবির পাথর’, ‘হারিয়ে খোঁজা— কালীঘাট-ফলতা রেল’ বা ‘শূন্য থেকে শুরু’ প্রভৃতি শিরোনামের লেখাগুলি এক অপূর্ব নাগরিক দৃশ্যমালা তৈরি করেছে। সঙ্গে আছে ছবি।

কবিতা সন্ধ্যা

জীবনানন্দ দাশ লিখেছিলেন, ‘কলকাতা একদিন কল্লোলিনী তিলোত্তমা হবে’। তাঁর সেই তন্ময় পূর্ববাণী কতটা সফল হয়েছে তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক চলতে পারে। কিন্তু একটা বিষয় নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই; তা হল, জীবনানন্দের মতো অন্য আধুনিক কবিরাও বারংবার স্মরণ করেছেন তাঁদের প্রিয়, বিক্ষুব্ধ মহানগরকে। দরদ, ভালবাসা, ক্রোধ এমনকী ঘৃণা তাঁদের কবিতার ভিন্ন ভিন্ন মূলমন্ত্র। সম্প্রতি এই তিলোত্তমাকেই স্মরণ করা হল ‘সৃজন’ আয়োজিত কবিতা সন্ধ্যায়। একই মঞ্চ থেকে কবিতা পাঠ করলেন উর্দু কবি ফায় সিন ইজাজ, বঙ্গীয় কবি রণজিৎ দাস এবং শুভরঞ্জন দাশগুপ্ত, যিনি বেছে নিয়েছিলেন তাঁর দীর্ঘ ইংরেজি কবিতা ‘ব্ল্যাক স্নাইপার্স ইন সুতানুটি’। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন সাহিত্যের স্বনামধন্য অধ্যাপক সুপ্রিয়া চৌধুরী।

ভাঙন নিয়ে

‘যার একূল ওকূল দুকূল গেছে...।‘ বিখ্যাত এই গান শুনেই পরিচালক রাজ বন্দ্যোপাধ্যায় নদীর খামখেয়ালিপনা নিয়ে ভেবেছেন অনেকদিন। ওঁর ভাবনায় ধরা পড়েছিল নদীর ভাঙন, ধ্বংসলীলা, মানুষের দুর্গতির কথা, আবার একই সঙ্গে সেই নদী কিন্তু প্রাণদায়িনী। গঙ্গা নদীকে কেন্দ্র করেই একটি গল্প বেঁধেছিলেন তিনি। নদীর ভাঙন সারা বিশ্বে আজ ভয়াবহ সমস্যা। অগ্রণী পরিবেশবিদরা এই নিয়ে সোচ্চার হয়েছেন। তবু এ বিষয়ে সামগ্রিক সচেতনতার অভাব রয়েই গিয়েছে। এই নিয়েই গড়ে উঠেছে রাজের ‘পাড়’ সিনেমাটি। শ্রীলা মজুমদারের দক্ষ অভিনয়ে সমৃদ্ধ এই ছবিটিতে কেবল মনোরঞ্জন নয় বরং একটি সচেতনতার বার্তাও পাওয়া যাবে বলে জানালেন পরিচালক স্বয়ং। এজন্য ছবিটি নির্মাণের সময় নদী গবেষক সুনন্দ বন্দ্যোপাধ্যায়, গঙ্গা বাঁচাও কমিটির প্রধান কেদার মণ্ডল, স্বাস্থ্য উপ-অধিকর্তা পুষ্পেন্দু সেনগুপ্ত এবং রাজ্য সরকারের তরফে পাওয়া গিয়েছে নানাবিধ সাহায্য। সম্প্রতি কলকাতা প্রেস ক্লাবে এই ছবিটির গানের অডিয়ো সিডির প্রকাশ হল। নভেম্বরে প্রকাশ পাবে ছবিটি।

অনুবাদ

‘উচ্চতম স্তর পর্যন্ত বিবিধ বিদ্যা শিখিবার ও শিখাইবার পক্ষে অনুবাদ একান্তই প্রয়োজন। সকল দেশেই বিভিন্ন স্তরের শিক্ষায় অনুবাদ ব্যাপারটি বিশেষভাবে গ্রাহ্য হইয়াছে।’ যোগেশচন্দ্র বাগলের এই গুরুত্বপূর্ণ মত-সহ তাঁর রচনাটি, ‘বাঙলা অনুবাদ সাহিত্য (১৮০১-১৮৬০)’ ঠাঁই পেয়েছে ‘পরিকথা’-র (সম্পা: দেবব্রত চট্টোপাধ্যায়) ‘অনুবাদ সাহিত্য’ সংখ্যায়। ‘অনুবাদচর্চা আজ বৃহত্তর পরিসরে সমাজবিজ্ঞানচর্চারও অঙ্গ।’ মনে করেন সম্পাদক। মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অনুবাদ চর্চা ও ভাবনা নিয়ে কথা বলেছেন অভীক মজুমদারের সঙ্গে। অনুবাদ তত্ত্ব নিয়ে শুভা চক্রবর্তী দাশগুপ্ত তপোধীর ভট্টাচার্য উদয়নারায়ণ সিংহের রচনা। রবীন্দ্রনাথের অনুবাদ-দর্শন নিয়ে অভ্র বসুর বিশ্লেষণ, অনুবাদকের স্বীকৃতি ও সংকট নিয়ে চিন্ময় গুহ, বিভিন্ন ভাষা থেকে বাংলায় অনুবাদের পরম্পরা নিয়ে শ্যামলকুমার গঙ্গোপাধ্যায় সুদেষ্ণা চক্রবর্তী পলাশ ভদ্র ঈপ্সিতা চন্দ কৌশিক গুহ প্রমুখের আলোচনা।

মুখের ভাষা

বহুকাল পর্যন্ত এ দেশে ভাষা হিসেবে সাহিত্যের ভাষাই প্রাধান্য পেয়ে এসেছে, শিষ্টতার নিক্তিতে হারিয়ে গিয়েছে সাধারণ মানুষের মুখের ভাষা। ‘অথচ সাধারণ মানুষের মুখের ভাষাই তো কত জীবন্ত, চলিষ্ণু, সাংস্কৃতিক স্মৃতিকে ধরে রাখে।’ খেয়াল করিয়ে দিচ্ছিলেন পবিত্র সরকার, ভারতীয় ভাষা লোক সর্বেক্ষণ/ পশ্চিমবঙ্গের ভাষা/ খণ্ড ৩১, ভাগ ৩ (মুখ্য সম্পা: গণেশ দেবী। গ্রন্থ সম্পা: শংকর প্রসাদ সিংহ এবং ইন্দ্রনীল আচার্য) বইটির প্রকাশ উপলক্ষে। পবিত্রবাবু আর স্বামী সুপর্ণানন্দ মহারাজ-এর উপস্থিতিতে গোলপার্কে রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার-এ সেপ্টেম্বরে সদ্য উদ্বোধন হল এ গ্রন্থের। গ্রন্থটিতে জনগোষ্ঠীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ভাষার পঞ্জীকরণের সমগ্র প্রক্রিয়াটি দুর্বল জনগোষ্ঠীসমূহের বিপন্ন ভাষাগুলিকে বিশেষ ভাবে মর্যাদা ও স্বীকৃতি দেওয়ার এক চেষ্টা। প্রকাশনা সংস্থা ওরিয়েন্ট ব্ল্যাকসোয়ান উদ্যোক্তা এ আয়োজনের।

পঞ্চপ্রয়াগ

ট্রেন থেকে নেমে মোটরে চেপে হুশ করে একদিনে হৃষীকেশ থেকে বদরিনাথ পৌঁছনোর ছকটা অন্তত কিছুদিনের জন্য ভেঙে দিয়েছিল ২০১৩-য় হিমালয়ের ভয়াল বন্যা। পরিণামে বদরিনাথের পথে সাবেকি যাত্রার স্বাদ নিতে নিতে রাজা অভিমন্যু নতুন করে আবিষ্কার করলেন পাঁচটি প্রয়াগ। আলোকচিত্রে লিপিবদ্ধ করলেন সদ্য সংকট পেরনো বহমান নদী আর জীবনের ছবি। শতোপন্থ হিমবাহ আর ভাগীরথী-খরক হিমবাহ থেকে বেরিয়ে অলকানন্দা পরপর পাঁচটি বড় নদীকে বুকে টেনে নিয়েছে তার ২০০ কিলোমিটার যাত্রাপথে— বিষ্ণুপ্রয়াগে ধৌলিগঙ্গা, নন্দপ্রয়াগে নন্দাকিনী, কর্ণপ্রয়াগে পিন্ডার, রুদ্রপ্রয়াগে মন্দাকিনী আর শেষে দেবপ্রয়াগে ভাগীরথী। রাজার এই চিত্রফসল ‘পঞ্চ-প্রয়াগ: এক গঙ্গা অলকানন্দা কথা’ নামে একটি প্রদর্শনীর রূপ পাচ্ছে ৭-২১ অক্টোবর, ভবানীপুরে ৩/২এ চন্দ্রনাথ চ্যাটার্জি স্ট্রিটে ‘ক্রিয়েটিভ ঋতু’ স্টুডিয়োতে (বিকেল ৪-৮টা)।

প্রয়াণ

বনগ্রামে তাঁর জন্ম। পরে প্রেসিডেন্সি কলেজ ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা। এম এ পরীক্ষায় ভূগোলে স্বর্ণপদক ও দেশে ভূগোলে প্রথম ডি লিট উপাধি পান ১৯৬২ সালে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল বিভাগে বীরেশ্বর বন্দ্যোপাধ্যায় (১৯৩০-২০১৭) বত্রিশ বছর অধ্যাপনা করেন। শিক্ষকতা ও গবেষণায় তিনি ছিলেন সমান পারদর্শী। দেশবিদেশে তাঁর গবেষণা প্রশংসা পেয়েছে। ইউজিসি তাঁকে ভূগোলের জাতীয় অধ্যাপক মনোনীত করে। তিনি এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও সামলেছেন। সম্প্রতি তিনি প্রয়াত হলেন।

কলকাতার স্ট্যাচু

কলকাতায় প্রথম মূর্তি বসে ১৮০৩-এ, মার্কুইস কর্নওয়ালিসের। উনিশ ও বিশ শতকে ঔপনিবেশিক শাসকের হাতে কলকাতা সেজে উঠেছিল বহু মূর্তিতে। ভারতীয় অভিজাতদের মধ্যে থেকে চাঁদা তুলেই মূর্তি বসানো হয়েছিল। শিল্পীরাও সকলেই ছিলেন ইংরেজ। উনিশ শতকে একমাত্র বিদ্যাসাগরের মূর্তিটি তৈরি করেছিলেন দুর্গা মিস্ত্রি। স্বাধীনতার বাইশ বছর পর শহর থেকে ঔপনিবেশিক শাসকদের মূর্তি সরানোর কাজ শুরু হয়। কিছু আশ্রয় পায় ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে, কিছু ব্যারাকপুর লাটবাগানে। কয়েকটির হদিশই নেই। এই অবস্থায় কমল সরকারের ‘কলকাতার স্ট্যাচু’ বইটি যে কতখানি মূল্যবান আকরগ্রন্থ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি থেকে শিল্পী কমল সরকার এই সব মূর্তির প্রতি আকৃষ্ট হন, দীর্ঘকাল চলে বিপুল তথ্য সংগ্রহ। তারই ফলে ১৯৯০-এ বইটির প্রথম প্রকাশ। বইতে আছে স্বাধীনতা-উত্তর কালের ভারতীয়দের মূর্তির কথাও। অনেক দিন ধরে দুর্লভ বইটি আবার নতুন করে প্রকাশ করল পুস্তক বিপণি। নতুন মুদ্রণে দুষ্প্রাপ্য ছবিগুলি সাদাকালোয় থাকলেই ভাল হত।

অন্দর-বাহির

আলোর পাশেই থাকে অন্ধকার। বিনোদন জগৎ এর ব্যতিক্রম নয়। এক দিকে মেধার চমক, নান্দনিক উত্তরণ, আর পর্দার অন্তরালে স্বার্থ ও শোষণ প্রতিভাকে ছলনা করে। শোষিতের আক্রোশে নাটক আর বাস্তব একাকার হয়ে যায়। এই নিয়েই কুশীলবের নতুন নাটক ‘রাত-দিন’, পরিচালনায় বৈশাখী মারজিৎ। সঙ্গে থাকছে সুগত মারজিতের বাংলা রাগসংগীত— চেনা অচেনা গানের সম্ভার। রবিবার ৮ অক্টোবর, রবীন্দ্রসদনে সন্ধে ৬টায়।

বাঙালি

একদিন আমাকে অনেক লড়াই করতে হয়েছে’ বলছিলেন শিল্পী কুমার শানু, ‘কিন্তু সেদিন এই বাংলাতে আমাকে কেউ কাজ দেয় নি। অবশেষে মুম্বইয়ে গিয়ে পায়ের তলায় মাটি পেয়েছি। আমি কিন্তু তবুও সেই বাঙ্গালিই থেকে গেছি।’ বাংলার জন্য তিনি ভাবেন, কাজও করেন। দীর্ঘদিন পর পুজোয় ওঁর বাংলা গানের একটি অডিয়ো অ্যালবাম প্রকাশে এসে তিনি এই শহরেই ওঁর নিজস্ব একটি ‘মিউজিক্যাল রেস্তোরাঁ’ উপহার দিয়ে গেলেন। সল্টলেক সেক্টর ফাইভে এই রেস্তোরাঁয় গেলেই পাওয়া যাবে শিল্পীর গান থেকে জীবনের নানা কিছু। সঙ্গে পাওয়া যাবে এমন কিছু খাবার, যা অন্যত্র পাওয়া বেশ মুশকিল, বলছিলেন তিনি। ‘আমি কিন্তু কলকাতাতেই শুরু করলাম এটি, বাংলাকে প্রাণের চেয়ে ভালোবাসি বলে, এরপর সারা দেশে হবে এমন রেস্তোরাঁ।’ দিল্লি করোলবাগে পথশিশুদের নিয়ে চলছে কুমার শানু বিদ্যানিকেতন, এদিকে ক্যানিং-এও খুব তাড়াতাড়ি শুরু হচ্ছে ওঁর আরও একটি স্কুল। কিন্তু তাঁর আগেই দুর্গাপূজায় সেই আমবাঙালির জন্য তিনি নিয়ে এলেন এই অভিনব রেস্তোরাঁ কাম সংগ্রহশালা। ‘দম লগাকে হেঁইসা’ শীর্ষক এই রেস্তোরাঁতে এলেই খুঁজে পাওয়া যাবে বাঙালি এক লড়াকু শিল্পীর জীবনের ওঠাপড়ার কাহিনী। নানা কথার মাঝে তাঁর গভীর প্রত্যয়, ‘দেখবেন বাঙালি আবার বাংলা গানের দিকে ফিরে আসবে, আসবেই।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন