অভাব ক্যামেরার, তাই কি দাপট মোবাইল, মাদকের!

সিসি ক্যামেরা বসানোর আগে তা নিয়ে রাজ্যের মোট আটটি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ইতিমধ্যেই সমীক্ষা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে দমদম এবং প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ 

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৫৮
Share:

সংশোধনাগারের ভিতরের অধিকাংশ সিসি ক্যামেরাই অকেজো। ফলে সিসি ক্যামেরার অভাবে সংশোধনাগারগুলির নিরাপত্তার ঠুনকো দশা। তাই কখনও নজরদারিতে খামতি রয়ে যায়, কখনও আবার অভিযুক্তের বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহেও সমস্যায় পড়তে হয় সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষকে। এই সমস্যার সমাধানে রাজ্যের সংশোধনাগারগুলিতে নতুন করে সিসি ক্যামেরা বসানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে কারা দফতর।

Advertisement

সিসি ক্যামেরা বসানোর আগে তা নিয়ে রাজ্যের মোট আটটি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে ইতিমধ্যেই সমীক্ষা হয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে দমদম এবং প্রেসিডেন্সি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার। তার মধ্যে শুধু দমদম কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারেই বসানো হতে পারে প্রায় ১০০টি সিসি ক্যামেরা। কিন্তু এই তালিকা থেকে বাদ পড়েছে আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার। কেন? কারা দফতর সূত্রের খবর, যে হেতু আলিপুর সংশোধনাগারকে বারুইপুরে স্থানান্তরিত করার কথা রয়েছে, তাই সেখানে নতুন করে সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে না। এক কারা কর্তার কথায়, ‘‘কিছু দিনের মধ্যেই স্থানান্তর করা হবে। তাই নতুন করে কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না।’’ যদিও গত কয়েক মাস ধরে আলিপুর সংশোধনাগারের স্থানান্তরের বিষয়টি নিয়ে জল্পনা চললেও তা এখনও পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।

অথচ গত কয়েক দিনে আলিপুর সংশোধনাগারে মোবাইল, মাদক-সহ বেশ কিছু বেআইনি সামগ্রী উদ্ধার হয়েছে। যে বন্দিদের থেকে ওই মোবাইল ও বেআইনি জিনিস উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে রয়েছে মার্কিন তথ্যকেন্দ্রে হামলায় অভিযুক্ত আফতাব আনসারি এবং ২০১৫ সালে কলকাতা পুরভোটের দিন গিরিশ পার্কে গুলিচালনার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গোপাল তিওয়ারি। কয়েক মাসে সেখানে প্রায় ৪৫০টির মতো মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছেন কর্তৃপক্ষ। তার মধ্যে বেশ কিছু স্মার্ট ফোনও ছিল বলে কারা দফতর সূত্রে খবর। তবে কি সিসি ক্যামেরার অভাবেই বেআইনি জিনিসের রমরমা বেড়েছে আলিপুর সংশোধনাগারে? এ প্রসঙ্গে এক কারা কর্তার মন্তব্য, ‘‘আলিপুর সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবে সমঝোতা করতে চান না। সে কারণে তৎপরতার সঙ্গে বেআইনি সামগ্রী উদ্ধার হচ্ছে।’’ তবে তাঁর দাবি, অন্য সংশোধনাগারেও এমন বেআইনি জিনিস উদ্ধার হলেও সেই খবর প্রকাশ্যে আসছে না। ওই কর্তার দাবি, ‘‘সর্বত্রই নিরাপত্তা আঁটোসাটো রয়েছে।’’

Advertisement

কিন্তু সংশোধনাগারগুলিতে সিসি ক্যামেরার এমন ‘বেহাল’ অবস্থা কেন? কারা কর্তাদের বিশ্লেষণ, কয়েক বছর আগে এগুলি বসানো হলেও এখন বেশিরভাগই অকেজো। কোথাও ওই ক্যামেরার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে, কোথাও

আবার ভেঙে দেওয়া হয়েছে আস্ত ক্যামেরা। এ ক্ষেত্রে বন্দিদের পাশাপাশি, কয়েক জন কারা কর্মীর বিরুদ্ধেও অভিযোগ রয়েছে। তবে সংশোধনাগারের মূল ফটকের সিসি ক্যামেরাগুলি কাজ করছে বলে কারা দফতর সূত্রে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন