চিনা বাজিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করল লালবাজার

দীপাবলিতে এ বার চিনা আতসবাজি ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল কলকাতা পুলিশ। তবে শুধু চিনা বাজি নয়, যে কোনও বিদেশি বাজি বিক্রি ও ব্যবহার করলেও পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেবে।

Advertisement

দেবাশিস দাস

শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০১৬ ০০:১৭
Share:

ছোট হাতে বাজি তৈরি। মঙ্গলবার, দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। — শশাঙ্ক মণ্ডল

দীপাবলিতে এ বার চিনা আতসবাজি ব্যবহারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল কলকাতা পুলিশ। তবে শুধু চিনা বাজি নয়, যে কোনও বিদেশি বাজি বিক্রি ও ব্যবহার করলেও পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেবে। মঙ্গলবার লালবাজারের এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘‘চিনা বাজি তো বটেই, বিদেশি বাজিও ফাটানো যাবে না, কেনাবেচা চলবে না। তা অমান্য করলে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

সস্তার চিনা বাজি যেমন দেশজ আতসবাজি শিল্পের ক্ষতি করছে, তেমনই তাতে ক্ষতিকারক রাসায়নিক আছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বেআইনি ভাবে বছরে এক হাজার কোটি টাকার উপর চিনা আতসবাজি ভারতে ঢুকে তাঁদের সর্বনাশ করছে।

গত বছর দীপাবলিতে শহরের কয়েক জন বাজি বিক্রেতার কাছে চিনা আতসবাজি পাওয়া যায়। দাম সস্তা, সেগুলোর আলো ও ধোঁয়াও অন্য রকম বলে জানান সেই সব বাজির ক্রেতারা।

Advertisement

সোমবার কলকাতা পুলিশ দীপাবলির আগে চূড়ান্ত পর্যায়ে অভিযান শুরু করেছে নিষিদ্ধ বাজির বিরুদ্ধে। সেই তালিকায় যেমন ৯০ ডেসিবেলের চেয়ে বেশি শব্দসীমার বাজি রয়েছে, তেমনই আছে বিদেশি বাজি।

লালবাজার সূত্রে খবর, সোমবার নিষিদ্ধ বাজি না মিললেও মঙ্গলবারের অভিযানে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৪৫ কেজি নিষিদ্ধ বাজি উদ্ধার হয়েছে। দুর্গাপুজোর আগে সাড়ে চারশো কেজি নিষিদ্ধ বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়। এর মধ্যে কিছু বাজি বিদেশি বলে পুলিশের সন্দেহ।

কলকাতা পুলিশের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন সারা বাংলা আতসবাজি উন্নয়ন সমিতির চেয়ারম্যান বাবলা রায়। তিনি জানান, চিনা বাজি বিক্রি ও ব্যবহার বন্ধ করার আর্জি জানিয়ে তাঁদের সংগঠন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়েছিল। অত্যন্ত খারাপ মানের উপাদান দিয়ে তৈরি করে সস্তায় চিনা বাজি বিক্রি করা হয়। যার জেরে পরিবেশেরও ক্ষতি হয়। বাবলাবাবু বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশের এই ঘোষণায় আমরা খুশি। কলকাতা পুলিশকে পূর্ণ সহযোগিতা করব।’’

কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ সূত্রের খবর, তারাতলার কাছে এ দিন ২০০ রকম বাজির নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তার মধ্যে ৮৯টি বাজি ফেল করেছে।

এ দিন লালবাজারে কলকাতা পুলিশ ও লাগোয়া বিভিন্ন কমিশনারেট ও জেলা পুলিশের কর্তারা বৈঠক করেন। কালীপুজোর সময়ে নিষিদ্ধ বাজি নিয়ন্ত্রণের কৌশল নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়।

পুলিশ জানায়, আগামী ২৪ অক্টোবর শহিদ মিনার লাগোয়া ময়দানে বাজি বাজার শুরু হচ্ছে। তবে এ বার যাদবপুরের কিশোর ভারতী স্টেডিয়ামে বাজি বাজার বসছে না। তার বদলে ইএম বাইপাস লাগোয়া কালিকাপুরের কাছে বসবে। এ ছাড়াও টালা পার্ক, বেহালার ফ্লাইং ক্লাব ও ব্লাইন্ড স্কুল ময়দান এবং বিজয়গড় ময়দানে বাজির বাজার বসবে।

কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার সুপ্রতিম সরকার বলেন, ‘‘নিষিদ্ধ বাজি যাতে না ব্যবহার করা হয়, সেটা নিশ্চিত করতে সমস্ত ডিসি-কে তাঁদের নিজের নিজের এলাকার বহুতলের বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন