চলছে কারখানার পাঁচিল ভাঙার কাজ। সোমবার। ছবি :অরুণ লোধ।
বেআইনি ‘দখলদারি’র জন্য বন্ধ হয়ে ছিল জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রোর কিছু কাজ। জোকায় বাঁকড়া রোডের কাছে হাঁসপুকুর খালপোলে মেট্রোর একটি ডিপো তৈরি হচ্ছে। সেটির নির্মাণও অনেকটা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, তারই মধ্যে ফাঁকা জায়গা পেয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২টি কারখানা। আর, তার ফলে কাজ শেষ করতে পারছে না মেট্রো রেল। বিষয়টি নিয়ে রেলের পক্ষে নির্মাণ সংস্থা রেলওয়ে বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল) একাধিক বার নোটিস পাঠিয়েছে দখলদারদের। কিন্তু তাতে তাঁরা কর্ণপাত করেননি বলেও অভিযোগ। শেষমেশ মেট্রোর অনুরোধে সোমবার ঘটনাস্থলে যান কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। দখলদারদের তিনি সাফ জানিয়ে দেন, জায়গাটা রেলের। মেট্রোর কাজের জন্য তা ফাঁকা করে দিতে হবে। ইতিমধ্যেই অবশ্য মেট্রোর জায়গায় গড়ে ওঠা একাধিক কারখানার পাঁচিল ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ দিনও কয়েকটি ভাঙা হয়। শোভনবাবু জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী দু’মাসের মধ্যে কারখানা খালি করে জায়গা ছেড়ে দিতে হবে। অন্যথায় মেট্রো রেলের কাজের জন্য প্রশাসনই কারখানার পাঁচিল ভেঙে দিতে বাধ্য হবে।
মেট্রো রেল সূত্রের খবর, জোকা-বি বা দী বাগ মেট্রোর জন্য একটি ডিপো তৈরি হচ্ছে হাঁসপুকুর খালপোলে। সেখানে বেশ কিছু জমি রয়েছে সেচ দফতরের। ২০১১ সালে প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দিয়েই সেচ দফতর ও ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকা জমি অধিগ্রহণ করেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু অভিযোগ, তার পরেও সেই জমিতে কারখানার নির্মাণকাজ শুরু করে দেওয়া হয়। প্রথম দিকে জমি ফাঁকা থাকার সুযোগে কাঠামো গড়ে ফেলেন ওই সব কারখানার মালিকেরা। মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, প্রায় ১২ জন জমি দখল করেছেন। ওই সব কারখানার মালিকদের কাছে একাধিক বার নোটিসও পাঠিয়েছেন মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ। অভিয়োগ, তাতেও কান দেননি ওই কারখানার মালিকেরা। এর ফলে বিঘ্নিত হচ্ছিল প্রকল্পের কাজ। দেরিও হচ্ছিল অযথা। অবশেষে রাজ্য সরকারকে পুরো বিষয়টি জানানো হয়। সেই সূত্রেই এ দিন ঘটনাস্থলে যান মেয়র শোভনবাবু। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলেন।
আরভিএনএল-এর তরফে রাজেশ প্রসাদ জানান, মেয়র তথা মন্ত্রী এ দিন হাঁসপুকুরে গিয়ে ওই সব ‘দখলদার’দের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। শোভনবাবু জানান, ওঁদের দু’মাস সময় দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মালিকদের কারখানা থেকে মাল সরাতে এবং কাঠামো ভেঙে দিতে বলা হয়েছে। তাঁরা না করলে প্রশাসনই পুলিশ ও পুরসভার সাহায্যে তা ভেঙে দিতে বাধ্য হবে। মেয়র বলেন, ‘‘২০১১ সালে ওই জায়গা অধিগ্রহণ করেছে মেট্রো রেল। ক্ষতিপূরণও দিয়েছে। সব জেনেও রেলের ওই জায়গায় কারখানা বানানো উচিত হয়নি। তাই বেআইনি ওই কাঠামো ভেঙে ফেলতে বলা হয়েছে।’’ রাজেশবাবু জানান, দু’মাস সময় দিতে বলেছেন মেয়র। সেই মতো তাঁরা অপেক্ষা করবেন। তার পরে বাকি কাজ শুরু করা হবে।