বসে গিয়েছে পথ। —নিজস্ব চিত্র।
শহরের রাস্তায় ফের ধস। এ বার দক্ষিণ কলকাতার বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে।
বুধবার সকালের ব্যস্ত সময়ে হঠাৎ রাস্তা বসে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। খবর পেয়ে ট্রাফিক পুলিশ গিয়ে গার্ডরেল বসায়। গর্তটি রাস্তার একপাশে থাকায় ওই রাস্তায় যান চলাচলের অসুবিধা হয়নি। এর পরে পুরসভার আধিকারিকেরা ঘটনাস্থলে আসেন।
ওই রাস্তায় ধসের কারণ কী?
কলকাতা পুরসভার আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, কোনও সংস্থা মাটি খুঁড়ে কাজ করার পরে সেখানে জোড়াতাপ্পি দিয়ে রাস্তা বুজিয়েছিল। ভাল ভাবে মেরামতি না হওয়ায় রাস্তার নীচের মাটি আলগা হয়ে ধস নেমে থাকতে পারে। অনেক সময়ে ইঁদুরও গর্ত করে। ফলে, মাটি আলগা হয়ে শহরের অনেক জায়গায় ধস নামে। ধসের নির্দিষ্ট কারণ বোঝা যাচ্ছে না। তবে, নিকাশি বা পানীয় জলের পাইপ ফেটে এখানে কোনও ধস নামেনি। এই ধসের দৈর্ঘ্য প্রায় তিন ফুট, গভীরতা প্রায় দু’ফুট বলেও জানিয়েছেন আধিকারিকেরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এই রাস্তায় কিছু দিন আগে কোনও সংস্থা কেব্ল লাইন বসানোর জন্য রাস্তা কেটেছিল। তার পরে কলকাতা পুরসভা থেকেই এই রাস্তা মেরামতি করা হয়েছিল। মেরামতির একাংশ হঠাৎ বসে গিয়েই এই বিপত্তি।
স্থানীয় কাউন্সিলর তৃণমূলের শুকদেব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সম্প্রতি এখানে রাস্তা খোঁড়া হয়েছে বলে জানি না। তবে আগে হলে হতে পারে। রাস্তার এই অংশটি দ্রুত মেরামত করে ফেলা হবে।’’
প্রশ্ন ওঠে শহরের রাস্তায় বারবার এত ধস কেন? পুরসভাই বা এই ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নিয়েছে?
কলকাতা পুরসভার রাস্তা দফতরের মেয়র পারিষদ রতন দে জানান, রাস্তা বসে যাওয়ার নির্দিষ্ট কারণ এখনও জানা যায়নি। অনেক সময়ে বিভিন্ন সংস্থা ভূগর্ভস্থ কোনও কাজের জন্য মাটি খুঁড়লেও তা মেরামত করে না। মাটি আলগা থেকে সেই জায়গায় রাস্তা বসে যায়। অন্য দিকে, পুরসভাকে জোড়াতাপ্পি দিয়ে রাস্তা মেরামত করতে হয়। ট্রাফিক পুলিশের অনুমতি না পাওয়ার ফলে এবং আনুষঙ্গিক বিভিন্ন কারণেই রাস্তার মেরামতির জন্য যে সময় দরকার, তা পাওয়া যায় না। ফলে, অনেক সময়েই সারানো রাস্তা ফের বসে যায় বলে রতনবাবুর দাবি।
পুর-কর্তৃপক্ষ জানান, ইঁদুর এবং রাস্তা কাটাকাটি ছাড়াও ভূগর্ভস্থ পুরনো পানীয় জলের বা নিকাশির পাইপ ফেটে জল বেরিয়ে তলার মাটি আলগা করে দেয়। সেই মাটি ধসেই শহরের অধিকাংশ রাস্তায় ধস নামে। সেই কারণে পুরসভা পুরনো পাইপ বদলে নতুন পাইপ বসানোর পরিকল্পনা নিয়েছে। শহরের অনেক জায়গাতেই এই কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বলেও তাঁরা জানান।